কেউ পাহাড় পছন্দ করেন, কেউ সমুদ্র। কেউ ছুটে যান গভীর জঙ্গলের টানে। এমন অনেকেই আছেন যাঁরা আবার পাহাড় সমুদ্র দু’টোর আকর্ষণই অগ্রাহ্য করতে পারেন না। তাই সময় পেলেই ভ্রমণ পিয়াসী মানুষ বেরিয়ে পড়েন অজানাকে জানা আর অ-দেখাকে দেখার উদ্দেশে। কিছু দিন অন্তত নিজের চেনা একঘেয়ে প্রয়োজনীয় গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে নিয়ম ভাঙার নেশায় মাতা যায়। তেমনই সুন্দর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সারা জীবনের সম্পদ হয়ে যেমন জায়গা নেয় ক্যামেরায় তেমনই সঞ্চিত হয় স্মৃতির বাক্সেও।
আজ সমুদ্রপ্রেমী মানুষদের জন্য রইল তেমনই কয়েকটি সমুদ্রসৈকতের কথা। যেখানে গেলে চোখ মন সবই মুগ্ধ হয়ে যাবে।
গোয়া
সমুদ্র সৈকতের নাম এলেই এক কথায় মনে পড়ে যায় মনে গোয়ার কথা। গোয়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সমুদ্র তটের নানান রূপ। কোথাও বাঘের মতো গর্জন করছে সমুদ্র। কোথাও এক্কেবারে শান্ত সৌম রূপ। এখানকার ক্যান্ডলিম বিচে ইংরাজি নববর্ষের উদযাপন দারুণ ভাবে হয়। এ ছাড়াও রয়েছে বাগা বিচ, ক্যালানগুট বিচ, অনজুনা বিচ, বাটারফ্লাই বিচ, ডোনা পাউলা বিচ, গালগিবাগা বিচ, কেরি বিচ এমন মোট ১৩টি বিচ খুবই বিখ্যাত পর্যটকদের কাছে। তা ছাড়াও গোয়ার বিচের সংখ্যা অনেক। প্রতি বছর দেশি-বিদেশি দুই কোটি পর্যটক বেড়াতে যান গোয়ায়।
গোকর্ণ
কর্ণাটকের গোকর্ণ। গোয়া থেকে ১৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গোকর্ণ। অসাধারণ সৌন্দর্যের ঘেরা এই তট। রয়েছে মহাবালেশ্বর মন্দির, ওম বিচ, হাফমুন বিচ, প্যারাডাইস বিচও। মূল শহরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থাও খুব ভালো। এই সমুদ্রসৈকতে আনন্দ করার মতো সব রকম উপাদান রয়েছে। গোটা উপকূল ভাগ বালি আর সঙ্গে সঙ্গে পাথরে ঢাকা।
গোপালপুর
ওড়িশা হল হিন্দু ভাবধারায় বিশ্বাসী হিন্দু মন্দিরে ঘেয়া একটি রাজ্য। তারই একটি অঞ্চল গোপালপুর। সমুদ্রের ধারে গোপালপুর খুবই বিখ্যাত একটি সমুদ্র সৈকত। এই অঞ্চলটি ভুবনেশ্বর থেকে ১৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গোটা সৈকত সোনালি বালিতে ঢাকা। এটি সূর্যস্নানের জন্য আদর্শ একটি বিচ। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।
পণ্ডিচেরী
পরাধীন ভারতে ফরাসিদের উপকূল ছিল এই পণ্ডিচেরি। গোটা শহরময় ছড়িয়ে রয়েছে ফরাসিদের শিল্প, সংস্কৃতি, স্থাপত্য, ভাস্কর্য। এখানেই অবস্থিত শ্রী অরবিন্দ আশ্রম। সমুদ্রের ধারের এই সুন্দর শহর মানুষের মন কেড়ে নিয়েছে বহু বছর ধরে। নৌকো করে সমুদ্র ঘোরা, সূর্য স্নান, কায়াকিং ইত্যাদি থেকে শুরু করে সবই রয়েছে এই পণ্ডিচেরীতে।
হ্যাভলক
নীল আকাশের নিচে নীল জলের ধারে চকচকে সাদা বালির উপকূল। এই সুন্দর দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় আন্দামানের হ্যাভলকে। যেমন উজ্জ্বল প্রবাল তেমনই ঝকঝকে সবুজ চারদিক। সারি বাঁধা নারকেল গাছ। যেন মনে হবে চোখের পাতা ফেললেই ‘মিস’। তাই নিষ্পলক ভাবে শুধু তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করবে। এই সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সঙ্গে রয়েছে মানুষের সৃষ্টি করা কিছু মজাদার ব্যবস্থা। যেগুলি আপনার সাহসের পরীক্ষা নেবে আর আনন্দকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে। রয়েছে স্কুবা ডাইভিং, স্নোরকেলিং, ট্রেকিং, হাতির পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ানো আরও কত কিছু। তবে চাইলে আপনি শুধু প্রাকৃতির মধ্যেই ঢুবে থাকতে পারেন।