বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৬ অপরাহ্ন

স্কুল ছাড়ার ছ’মাসের মধ্যেই ৩২ কোটি টাকার মালিক

  • আপডেট সময় রবিবার, ২ জুলাই, ২০২৩

পড়াশোনা ছেড়েছিলেন ২০ বছর বয়সে। কোনও বিশেষ ডিগ্রি তার ছিল না, যার জোরে ভালো চাকরি পেতে পারতেন। কিন্তু স্কুল ছাড়ার ছ’মাসের মধ্যেই নিজের জোরে ৩০ লাখ ডলার বা ৩২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আয় করলেন তিনি।

৩১ বছর বয়সী তরুণীর নাম ইনায়া ম্যাকমিলান। বাড়ি যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরির সেন্ট লুইসে। সম্প্রতি ইউটিউব চ্যানেলে নিজের উত্থানকাহিনি ভাগ করে নিয়েছেন ইনায়া। কেউ চাইলে কীভাবে তাঁর দেখানো পথে হেঁটে প্রচুর আয় করতে পারেন, সে বিষয়েও পরামর্শ দিয়েছেন।

৯ মিনিটের এ ভিডিও ইতিমধ্যেই ৯ লাখ মানুষ দেখেছেন। ভিডিওতে ইনায়া জানিয়েছেন, স্কুল ছাড়ার পর প্রথম প্রথম তিনি বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইট এবং শেয়ার বাজারের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতে বিশেষ সুবিধা হয়নি।

কেউ যদি ওই সংস্থায় নিজের বাড়ির নথিভুক্তিকরণ করেন, তা হলে সংস্থার তরফে সেখানে বসবাস করার জন্য লোক পাঠানো হবে। সেখান থেকে প্রাপ্ত ভাড়ার কিছু টাকা সংস্থার তরফে কেটে নিয়ে বাকি টাকা তুলে দেওয়া হবে বাড়ির মালিককে।

সে সংস্থায় যোগ দিয়েই কয়েক মাসে প্রায় ২৫ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন ইনায়া। তাঁর কথায়, ‘আমি যখন ওই সংস্থার মাধ্যমে বাড়ি ভাড়া দিতে শুরু করেছিলাম, তখন আমার কাছে টাকা ছিল না। একটি মাত্র বাড়ি ছিল। কিন্তু এখন আমার কাছে ওই ধরনের ১১টি ঘর রয়েছে। যেগুলি আমি ওই সংস্থার মাধ্যমে ভাড়া দিই।’

ইনায়া আরও বলেন, ‘আমি যখন পড়াশোনা ছেড়েছিলাম, তখন সবাই আমাকে করুণার চোখে দেখত। বিশেষ পাত্তা দিত না। কিন্তু যখন আমি টাকা রোজগার করতে শুরু করলাম, তখন সকলে আমার কদর করতে শুরু করে। সবাই এই ভেবে অবাক হচ্ছে যে, ২০ বছরের তরুণী কীভাবে এত টাকা রোজগার করছে।’

ইনায়া জানান, তিনি অর্থ উপার্জন শুরু করার পর অনেকেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তাঁর ব্যবসায় যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। সহজে টাকা রোজগারের ‘টোটকা’ জানতেও কেউ কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে জানান ইনায়া।

এর পর ইনায়া সিদ্ধান্ত নেন, সৎ ভাবে অর্থ উপার্জনের বুদ্ধি বাকিদেরও শেখাবেন। তাই একটি কোচিং সেন্টারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ব্যবসায়িক পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। ইনায়া বলেন, ‘আমার কোচিং সেন্টারের ছাত্রছাত্রীদের কেউ কেউ আমার থেকে পরামর্শ নিয়ে ইতিমধ্যেই উপার্জন করতে শুরু করেছে।’

ইনায়ার বক্তব্য, তিনি ব্যবসার প্রতি প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। তাই তিনি নিজের ভাইকেও ব্যবসায় যোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তার দাবি, তিনি পড়াশোনা ছাড়ার পক্ষপাতী নন। কিন্তু তিনি নিজে স্কুল ছাড়তে বাধ্য হন পরিস্থিতির চাপে পড়ে। তাই ভাইকে ব্যবসায় যোগ দিতে উৎসাহিত করলেও পড়াশোনা ছাড়তে দেননি বলে জানিয়েছেন ইনায়া।

ইনায়া বলেছেন, তিনি ব্যবসা থেকে এক মাসে ৬০ হাজার ডলার পর্যন্ত উপার্জন করেছেন। তাঁর দাবি, ২০২২ সালের জুনে তিনি প্রথম এক লাখ ডলারের মালিক হন। তার পর থেকে উপার্জন ক্রমেই বেড়ে চলেছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

বর্তমানে ওই সংস্থার মাধ্যমে ঘর ভাড়া দিয়ে এবং পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করে কোটি কোটি টাকার মালিক ইনায়া। ভাল কাজ করার ইচ্ছা এবং ইতিবাচক মানসিকতা থাকলে যে কেউ তাঁর মতো উপার্জন করতে পারবেন, মনে করছেন ইনায়া।

বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালকিন হলেও ইনায়ার যাত্রাপথ সহজ ছিল না। কীভাবে কঠিন সময় পার করে তিনি সুখের মুখ দেখেছেন, সে কথা ইউটিউব ভিডি্তের জানিয়েছেন ইনায়া। ইনায়ার দাবি, কৃষ্ণবর্ণের এবং মুসলিম হওয়ার কারণে স্কুলে পড়ার সময় কেউ তাঁর সঙ্গে কথা বলতেন না। তাঁর কোনও বন্ধু ছিল না।

তার যখন ১৬ বছর বয়স, তখন তার বাবা তাকে ডেল কার্নেগির লেখা ‘হাউ টু উইন ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ইনফ্লুয়েন্স পিপল’ নামে একটি বই উপহার দিয়েছিলেন। সেই বই পড়েই তিনি জীবনে এগিয়ে যাওয়ার যাবতীয় অনুপ্রেরণা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইনায়া।

আনন্দবাজার

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com