রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার শুরু করার পর দেশটি থেকে পালিয়ে আসা বিপুলসংখ্যক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন জার্মানিতে। এর মধ্য দিয়ে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় মোট অভিবাসীর সংখ্যায় রেকর্ড গড়েছে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশ।
জার্মানির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ডেস্টাটিস গত মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২২ সালে জার্মানিতে অভিবাসীদের সংখ্যা অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় বেশি ছিল।
সংস্থাটি বলছে, গত বছর ২৬ লাখ ৭০ হাজার বিদেশি নাগরিক এসেছেন জার্মানিতে। এর মধ্যে ফিরে গেছেন ১২ লাখ, আর রয়ে গেছেন ১৪ লাখ ৭০ হাজার।
এত বেশিসংখ্যক বিদেশি আসার প্রধান কারণ হিসেবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে চিহ্নিত করেছে জার্মানির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান সংস্থাটি। ডেস্টাটিস জানায়, ১ লাখ ১০ হাজার ইউক্রেনীয় শরণার্থী জার্মানিতে নিরাপত্তা খুঁজতে বাধ্য হয়েছেন।
২০২১ সালের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যায়, ওই বছর ১৩ লাখ ২০ হাজার বিদেশি এসেছিলেন। আর ফিরে গেছেন প্রায় ১০ লাখ মানুষ।
রাশিয়া পূর্ণশক্তি নিয়ে ইউক্রেনে হামলা শুরু করার পর গত বছরের মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে বেশিসংখ্যক ইউক্রেনীয় জার্মানিতে এসেছিলেন। আর আগস্ট থেকে তাঁদের আসার সংখ্যা কমতে শুরু করে।
সিরিয়া, আফগানিস্তান ও তুরস্ক থেকে আসা মানুষের সংখ্যাও আগের বছরের তুলনায় ২০২২ সালে বেড়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকেও জার্মানিতে আসার প্রবণতা আগের চেয়ে বেড়েছে। গত বছর ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে জার্মানিতে আসা অভিবাসীর সংখ্যা ৮৭ হাজার। আর ২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিল ৮১ হাজার।
বিশেষ করে রোমানিয়া, পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ার নাগরিকেরাই সবচেয়ে বেশি এসেছেন জার্মানিতে।
গত বছর ভিন দেশে পাড়ি দেওয়া জার্মান নাগরিকের সংখ্যাও বেড়েছে বলে জানিয়েছে ডেস্টাটিস। গত বছর জার্মানি ছেড়েছেন ৮৩ হাজার জন। ২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিল ৬৪ হাজার।
অভিবাসনের ক্ষেত্রে জার্মান নাগরিকদের প্রধান গন্তব্য সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র।
অভ্যন্তরীণভাবেও ১০ লাখ জার্মান নাগরিক নিজে দেশের ১৬টি রাজ্যের মধ্যে অভিবাসন করেছেন।
রাজধানী বার্লিন ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য বাডেন-ভ্যুরটেমবের্গে সবচেয়ে বেশি জার্মান নাগরিক স্থানান্তরিত হয়েছেন। আর সবচেয়ে কম হয়েছে ব্রান্ডেনবুর্গে।