থাই এয়ারওয়েজ নতুন একটি আইডিয়া সাজিয়েছে। তারা ব্যাংকক প্রধান কার্যালয়ে একটি হোটেল খুলেছে। সেখানে রাতের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে খদ্দেরদের। এ নিয়ে রিপোর্ট করার কি আছে এমনটাই ভাবছেন তো ! হ্যাঁ, বিশেষত্ব আছে ওই রেস্তোরাঁর।
আপনি যদি একবার ভিতরে প্রবেশ করেন, তাহলে মনে হবে থাই এয়ারওয়েজের একটি বিমানের ভিতরে আপনি। ইন-ফ্লাইটে যেসব সুবিধা থাকে তার সবটাই আছে এখানে। আছেন কেবিন ক্রুরা। আর আসন থেকে শুরু করে অঙ্গবিন্যাস সবটাই করা হয়েছে থাই এয়ারওয়েজের সিট ও যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে।
ফলে এর ভিতরে প্রবেশ করলে আপনার মনে হবে বিমানের ভিতরেই বসে আছেন। বৃহস্পতিবার সেখানে শতাধিক মানুষকে খাবার খাওয়ানো হয়েছে। আপাতত আকাশে উড়ছে না থাই এয়ারওয়েজ। কারণ, করোনার কারণে আন্তর্জাতিক ও বাণিজ্যিক ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে।
এর ফলে থাই এয়ারওয়েজ দেউলিয়া হয়ে পড়েছে এমন আবেদন করা হয়েছে। এখন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ছাড়া বিমান উড়ছে না আকাশে। তাই বলে এর খদ্দেরদেরতো আর বসিয়ে রাখা যায় না! তারা যাতে থাই এয়ারওয়েজের ফ্লেভার ভুলে না যান সে জন্য সাজানো হয়েছে এমন রেস্তোরাঁ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন কেওয়াইআর নিউজ।
কারণ, আপনার নির্দেশমতো খাবার রান্না করে দেয়া হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের কারণে বাণিজ্যিক ফ্লাইট স্থগিত রয়েছে থাইল্যান্ডে। কিন্তু আপনি চাইলেই এখানে রাতের খাবার খেতে পারেন। সাক্ষাত মিলবে কেবিন ক্রুদের সঙ্গে। তারা পুরোপুরি ইউনিফর্ম পরে আপনাকে স্বাগত জানাবে।
এই রেস্তোরাঁকে সাজানো হয়েছে বিমানের বিভিন্ন অংশ ও আসন ব্যবহার করে। এতে ভিতরে প্রবেশ করলে আপনার কাছে মনে হবে আপনি প্রকৃতপক্ষেই বিমানের ভিতরে আরোহন করেছেন।
দেউলিয়া ঘোষণার আবেদনে আদালত সিদ্ধান্ত দেবে। তারপরই থাই এয়ারওয়েজ আকাশে উড়তে পারবে। তার আগে বিমানগুলো মাটি কামড়ে ধরে পড়ে আছে।
থাই এয়ারওয়েজের ক্যাটারিং ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভারাঙ্গকানা লুরোজভং বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, এ সময়ে আমরা ইঞ্জিনের অতিরিক্ত যন্ত্রাংশ, জানালা এমনকি ফ্যান ব্লেড ব্যবহার করেছি এই রেস্তোরাঁয় আসবাবপত্র হিসেবে।
প্রতিটি ডেকোরেশনে একটি কিউআর কোড আছে। এ থেকে দর্শনার্থীরা ওই পার্টসটি কিসের বা তার কি কাজ এ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
এখানে নৈশভোজ করেছেন কান্তা আকানিতপ্রাচাই (৫০)। তিনি বলেছেন, বিমানের টিকেট না থাকলেও এখানে বিমানের ভিতরের খাবার পরিবেশন বিমানের আঙ্গিকে একটি চমৎকার আইডিয়া। আমি থাই এয়ারওয়েজের ইন-ফ্লাইটের খাবারটা পছন্দ করি।
কিন্তু সেই খাবার তো শুধু বিমানে আরোহন করলে তবেই দেয়া হয়। কিন্তু আজ বিমানে না চড়েই, আমি সেই খাবার এখানে খেলাম। খুব মজার বিষয়টা।
ভারাঙ্গকানা বলেছেন, এই রেস্তোরাঁ থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০০০ মানুষকে খাবার দেয়া হয়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য যে রাজস্ব হারিয়েছে কর্তৃপক্ষ, এর মধ্য দিয়ে তার কিছুটা পূরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
থাই এয়ারওয়েজের অন্য অফিসগুলোতে একই রকম আইডিয়া প্রয়োগ করার পরিকল্পনা আছে। বিমান সংস্থাটির শেফ এবং কেবিন ক্রুরাও রয়েছেন চমৎকার মেজাজে। জাপানি শেফ জুন উনিশি বলেছেন, এখানে অভিজ্ঞতাটা ভিন্ন। কারণ, তিনি বিমানে যেসব কাস্টমারকে খাবার সরবরাহ করেন, প্রথমবারের মতো সরাসরি তাদের সঙ্গে তার কথা হচ্ছে।