বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:২১ অপরাহ্ন

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকার খোঁজে ভূমধ্যসাগরে তল্লাশি অব্যাহত

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৭ মে, ২০২৩

ইটালি এবং মাল্টিজ কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার সাহায্য চেয়েও মেলেনি। এক নবজাতক শিশুসহ ৫০০ অভিবাসনপ্রত্যাশী বহনকারী একটি নৌকার খোঁজ মিলছে না। ভূমধ্যসাগরে নৌকাটি অনুসন্ধানের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

অপরদিকে, একই পথে রওনা দেয়া ৬৭১ অভিবাসনপ্রত্যাশী বহনকারী আরো একটি নৌকার যাত্রীদের ক্যালাব্রিয়া এবং মেসিনায় নামানো হয়েছে। অন্য একটি অভিযানে ৪২৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়েছে।

ইটালির বেসরকারি সংস্থা ইমার্জেন্সি জানিয়েছে, লিবিয়া থেকে ইউরোপের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পরে ভূমধ্যসাগরে একটি নৌকায় ৫০০ শরণার্থী এবং অভিবাসীসমেত আটকা পড়ে।

ইমার্জেন্সির উদ্ধারকারী জাহাজ লাইফ সাপোর্টের মিশন সমন্বয়কারী আলবার্ট মায়োদোনো টুইটারে “খুব দেরি হওয়ার আগেই কর্তৃপক্ষকে উদ্ধারের দায়িত্ব নেওয়ার” আহ্বান জানান।

খোঁজ না মেলা জাহাজের ৫০০ জন অভিবাসীর জাতীয়তা এখনও অজানা। যাত্রীদের মধ্যে কমপক্ষে ৪৫ জন নারী (যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন অন্তঃসত্ত্বা) ও ৫৬ জন শিশু রয়েছে। একটি নবজাতকও রয়েছে, মাঝসমুদ্রে যার জন্ম হয়েছে। নৌকার যাত্রীরা স্যাটেলাইট ফোনে অ্যালার্ম ফোনকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছিলেন।

ইটালি এবং মাল্টিজ কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করে

২৩ মে মঙ্গলবার যাত্রীরা দাতব্য সংস্থা অ্যালার্ম ফোনকে সতর্ক করেছিল। এই এনজিওটি ভূমধ্যসাগর থেকে জরুরি পরিষেবাগুলিতে দুর্দশাগ্রস্ত জলযানের কল নথিভুক্ত করে, তাদের কথা সর্বত্র পৌঁছে দেয়।

মেরিটাইম কনভেনশনের প্রয়োজন অনুসারে, মাল্টা এবং ইটালির উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে উদ্ধার অভিযানের সমন্বয় করতে অনুরোধ করে ইমার্জেন্সি নামের একটি এনজিও। তারা টুইটারে পোস্ট করে, কোনো ইইউ রাষ্ট্রই অভিযানের দায়িত্ব নেয়নি।

ইটালীয় মেরিটাইম রেসকিউ কোঅর্ডিনেশন সেন্টার থেকে সহায়তার অনুরোধ করেছে ইমার্জেন্সি। ইটালি দাবি করেছে যে উদ্ধারের দায়িত্ব মাল্টিজ কর্তৃপক্ষের। আইন অনুযায়ী, দাতব্য জাহাজগুলো একবারে শুধু একটি উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে উপকূলে ফিরে আসতে বাধ্য থাকবে। একসঙ্গে একের অধিক উদ্ধার অভিযান পরিচালনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এই পদক্ষেপ জাহাজে থাকা এবং সমুদ্রে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করে এমন এনজিওগুলোর জন্য রীতিমতো সমস্যা তৈরি করেছে।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ক্যালাব্রিয়ার উপকূলে একটি জাহাজ ডুবে ২৮ জন শিশু সহ ৯০ জন অভিবাসীর মৃত্যু হয়। ইটালীয় উপকূলরক্ষীদের কাছে দুর্দশা কথা পৌঁছালেও পদক্ষেপে দেরি হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ওঠে। সমুদ্রে উদ্ধার প্রচেষ্টা উন্নত করার ব্যবস্থা চালু করার বদলে পাচারকারীদের দমন করার পাশাপাশি অভিবাসন এবং আশ্রয়ের বিষয়ে আরো কঠোর নিয়মকানুন তৈরি করতে চায়।

মিসিং মাইগ্রেন্টস রিপোর্ট বলছে, ২০১৪ সাল থেকে ইউরোপে সমুদ্রপথে ৩০ হাজারের বেশি মৃত্যু নথিভুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে শুধুমাত্র চলতি বছরে হাজার জনের মৃত্যু এবং সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরে ৯৩৮টি মৃত্যু নথিভুক্ত করেছে৷ প্রকল্পটি জানিয়েছে, সত্যিকারের মৃতের সংখ্যা আসলে আরো অনেক বেশি।

দুর্দশাগ্রস্ত নৌকার কোনো চিহ্ন নেই

ইমার্জেন্সির লাইফ সাপোর্ট ভেসেল নৌকাটির অবস্থান জেনে সে দিকে রওনা হয়েছিল। কিন্তু গতকাল বিকেল থেকে নৌকাটির কোনো খোঁজ মিলছে না।

এখনও মাল্টিজ এসএআর এলাকায় নৌকার দুর্দশার কোনো চিহ্ন নেই, ইমার্জেন্সির একজন মুখপাত্র ইনফোমাইগ্র্যান্টসকে বলেছেন।

জার্মান এনজিও সি-ওয়াচ গতকাল টুইটারে পোস্ট করে, তারা জাহাজটি সনাক্ত করতে তাদের পর্যবেক্ষণ বিমান, সি বার্ড পাঠিয়েছিল কিন্তু সফল হয়নি।

অ্যালার্ম ফোন টুইটারে পোস্ট করেছে, “আমরা মাল্টা এবং ইটালির কর্তৃপক্ষকে ক্রমাগত সতর্ক ও আপডেট করার পরে আজ সকালে নৌকাটির সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেছি। ৫০০ জন এভাবে উধাও হয়ে যেতে পারে না।”

মায়েরদোমো ইনফোমাইগ্রেন্টসকে বলেন, “আমরা বর্তমানে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে রয়েছি। আমরা এই এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি, সেতুতে নজরদারি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা করি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই লোকদের খুঁজে বের করতে পারব, এবং তাদের জীবিত খুঁজে পাব।”

এনজিও এসওএস মেডিটেরানির ওশান ভাইকিং জাহাজটিও এলাকায় টহল দিচ্ছে। ইমার্জেন্সির এক মুখপাত্র বলেছেন, ”অনুসন্ধান এখনও চলছে। তার আশা, হয়তো অভিবাসীদের কেউ সাহায্য করেছে। হয়তো ইঞ্জিন ঠিক করা সম্ভব হয়েছে।”

এ নিয়ে ইটালির রক্ষী বাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি।

রয়টার্স, এপি, এএফপি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com