সন্দেহ করা হচ্ছে, ভূমধ্যসাগরের পথে পাচারচক্রের অন্যতম পাণ্ডা এই ব্যক্তি। অভিযোগ করা হয়েছে, এই সন্দেহভাজন ইউরোপে আসার পথে ২০ জন অভিবাসী জলে ডুবে যান।
ইটালির দ্বীপ লাম্পেদুসা থেকে মাত্র ১৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উত্তর আফ্রিকার দেশ টিউনিশিয়া। ফলে বিপজ্জনক সামুদ্রিক পথে ইউরোপে আসার জন্য অভিবাসীদের কাছে এই দেশ একটি অন্যতম প্রবেশ দ্বার।
বৃহস্পতিবার টিউনিশিয়ার ন্যাশনাল গার্ড ফেসবুকে জানিয়েছে, টিউনিশিয়ার শহর স্ফ্যাক্সের তদন্তকারীরা “গোপন এই চক্রের অন্যতম পাণ্ডাকে গ্রেপ্তার করেছে। এই ব্যক্তি ২৪টি মামলায় পুলিশের খাতায় ‘ওয়ান্টেড’ হিসাবে চিহ্নিত।”
টিউনিশিয়া জানিয়েছে এই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের প্রশংসা করেছেন। স্ফ্যাক্স থেকেইউরোপে প্রধান পাচারকারীদের একজন ছিলো এই ব্যক্তি।”
টিউনিশিয়ার ন্যাশনাল গার্ড অভিযোগ করেছে এই ব্যক্তি ২০ জন টিউনিশীয়র মৃত্যুর জন্য দায়ী। সেপ্টেম্বরে স্ফ্যাক্সের উত্তরে একটি উপকূলীয় শহর চেব্বা থেকে আসার পথে অভিবাসীদের নৌকাটি ডুবে গিয়েছিল। নৌকায় করে এই অভিবাসীদের পাচারের জন্য এই ব্যক্তিকেই দায়ী করছে কর্তৃপক্ষ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বহির্সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্স জানিয়েছে, ২০২৩ সালের প্রথম চার মাসে, সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরের পথে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। এই পথে মোট ৪২,২০০ পারাপার সনাক্ত করা হয়েছে।
ফ্রন্টেক্সের মতে, শুধুমাত্র টিউনিশিয়া থেকে সমুদ্রপথে পারাপার ‘গত বছরের তুলনায় ১১ গুণ বৃদ্ধি’ পেয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভূমধ্যসাগরে খানিকটা প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে টিউনিশিয়া থেকে অভিবাসীদের প্রবাহ খানিকটা কমে গেছে।
ন্যাশনাল গার্ড বলেছে, তারা ২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসে ১৪ হাজার ৪০৬ জন অভিবাসীকে আটক বা উদ্ধার করেছে। এদের মধ্যে এক হাজার ২০০ জনের বেশি ব্যক্তি টিউনিশীয় এবং বাকিরা আফ্রিকার অন্যান্য অংশের বাসিন্দা।
সাব-সাহারান আফ্রিকান দেশগুলি থেকে অভিবাসীদের পারাপারের চেষ্টা সম্প্রতি আরো বেড়েছে। চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি অভিবাসী বিরোধী বক্তব্য রাখেন টিউনিশ প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ৷ তারপর থেকে দমন-পীড়নের মুখে পড়েছেন দেশটিতে বসবাসরত অভিবাসীরা৷ সরকারের পাশাপাশি টিউনিশিয়ার সাধারণ জনগণেরও বিদ্বেষের শিকার হয়েছেন অনেক অভিবাসী৷ ফলে টিউনিশিয়া ছেড়ে অনেকে ফিরে গেছেন নিজের দেশে৷ আর অকেই ভাগ্য বদলের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেতে চান ইউরোপে৷
ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও ও রাজনৈতিক সংকটের কারণে টিউনিশিয়ার অনেক নাগরিকও ইউরোপে অভিবাসনের চেষ্টা করছেন৷