পুরো আমেরিকার দৃষ্টি টেক্সাসে মেক্সিকো সীমান্তে এবং নিউইয়র্কের পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালে। প্রতিদিন টেক্সাসের স্থল সীমান্ত পথে ঢুকে পড়ছে আমেরিকায় ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এসাইলাম প্রার্থীরা। তাদেরকে আবার বাসভর্তি করে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে স্যাংচুয়ারি সিটি হিসাবে পরিচিত নিউইয়র্কসহ লস এঞ্জেলেস, শিকাগো, বস্টনে। নিউইয়র্কে মেয়রের অফিসের ইমিগ্রান্ট এ্যাফেয়ার্সের কর্মকর্তা ম্যানুয়েল ক্যাস্ট্রোসহ অন্যান্য কর্মকর্তা তাদেরকে পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালে স্বাগত জানানোর পর পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন শেল্টারে, হোটেলে, স্কুলে ও অন্যত্র।
সকলে যখন মনে করছে টেক্সাস সীমান্ত দিয়েই এসাইলাম প্রার্থীরা আসছে, তখন জেএফকে, লাগোয়ার্ডিয়া, নিউআর্ক, লিবার্টি এয়ারপোর্ট দিয়েও অনেক এসাইলাম প্রার্থী আসছে বলে খবর দিল নিউইয়র্ক সিটির সংবাদপত্র। টেক্সাস সীমান্ত দিয়ে যেমন কেবল মেক্সিকো থেকে আসছে নিকারাগুয়া, ইকুয়েডর, এল সালভাদর, ভেনেজুয়েলার এসাইলাম প্রার্থীরা, এয়ারপোর্ট দিয়ে আসছে আফ্রিকা, মিডল ইস্ট, ইস্ট ইয়োরোপ, চীনসহ অন্যান্য দেশ থেকে। তারা জেএফকের মত এয়ারপোর্ট থেকে কোথায় যাবে, কিভাবে জানে না। অনেকেই রাত কাটাচ্ছে এয়ারপোর্টের এরাইভাল ও ডিপারচার লবিতে। পোর্ট অথরিটি এইসব এসাইলাম প্রার্থীদের থাকার অনুমতি দিচ্ছে। ভলান্টিয়াররা তাদের বাসে-ট্রেনে করে সিটিতে পাঠাচ্ছে। এইরকম সবচেয়ে বেশি এসাইলাম প্রার্থী এসেছে শিকাগোর ওহারে এয়ারপোর্টে।
মেয়র এরিক এডামস বাসে এবং প্লেনে আসা এসাইলাম প্রার্থীদের থাকার জন্য নিউইয়র্ক সিটির ২৫টি পাবলিক স্কুলের জিমনেশিয়াম ও ক্যাফেটেরিয়া ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছেন। লেক্সিংটন এভেন্যুর রুজভেল্ট হোটেলসহ বিভিন্ন হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করছেন বলে সিএনএনকে জানান। তিনি সিটি কাউন্সিলের প্রত্যেক সদস্যকে নিজ নিজ ডিস্ট্রিক্টে এই এসাইলাম প্রার্থীদের থাকার জন্য জায়গা খোঁজার আহবান জানিয়েছেন। এছাড়াও সেন্ট্রাল পার্কে টেন্ট বসানো হয়েছে তাদের জন্য। অন্যান্য কাউন্টিকেও অনুরোধ জানিয়েছেন এই এসাইলাম প্রার্থীদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দেয়ার জন্য। কিন্তু রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত কাউন্টিগুলো এই মাইগ্র্যান্টদের আশ্রয় দিতে নারাজ।
মেয়র জানান নিউইয়র্ক সিটিতে বাসে ও প্লেনে এ পর্যন্ত ৬১ হাজার মাইগ্র্যান্ট এসেছে। ফেডারেল সরকার তাদের থাকা- খাওয়া ও হাত খরচের জন্য ১ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করলেও মেয়র জানিয়েছেন এর জন্য ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ৪.৩ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। মেয়র জরুরী ভিত্তিতে আরো ৩৫০ মিলিয়ন ডলার চাইলে ফেমা মাত্র ৩০.৫ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে। মেয়র বলেছেন, সিটির বাজেট ঘাটতির কারণে কোনো অর্থ নেই এই খাতে ব্যয় করার জন্য। তাছাড়া ইমিগ্রেশন বিষয়টি ফেডারেল ইস্যু। অতএব এদের খরচও বহন করতে হবে ফেডারেল সরকারকেই।
ইতিমধ্যে প্রায় ৬১ হাজার মাইগ্র্যান্ট নিউইয়র্ক সিটিতে প্রবেশ করায় এখন চারদিকে তাদের চেহারাই দৃশ্যমান, বিশেষ করে ম্যানহ্যাটানে।
যেহেতু টাইটেল ফর্টি টু’র মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই এখন বিভিন্ন দেশে নির্যাতিত হচ্ছে এমন কারণ উল্লেখ করে অনেকে বিমানে এসে বিভিন্ন এয়ারপোর্টে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কিংবা কাস্টমস এন্ড বর্ডার সিকিউরিটির এজেন্টাদের কাছে আত্মসমর্পন করে পলিটিক্যাল এসাইলাম প্রার্থনা করছে।