তুমুল বর্ষণ ও তার ফলে সৃষ্ট বন্যা-ভূমিধসে ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ এমিলিয়া-রোমাগনা অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের তৎপরতায় ইতোমধ্যে উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে, তা না হলে আরও বাড়ত হতাহতের সংখ্যা।
ইতালির কেন্দ্রীয় সরকারের বেসামরিক সুরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী নেল্লো মুসুমেকি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, গত ৩৬ ঘণ্টায় তার এমিলিয়া রোমাগনায় যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা সেখানে বাৎসরিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণের অর্ধেকেরও বেশি। তুমুল বৃষ্টির ফলে নদী ও অন্যান্য জলাশরের পানি উপচে পড়ায় প্রদেশটির বিভিন্ন শহরের বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট এবং হাজার হাজার একর কৃষিজমি ডুবে গেছে।
এমিলিয়া-রোমাগনা প্রাদেশিক সরকারের প্রেসিডেন্ট স্টেফানো বোনাক্কিনি বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই প্রদেশে এর আগে আমরা এত বৃষ্টিপাত দেখিনি। এটা একটি অভূতপূর্ব দুর্যোগ…এত বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে যে পানি নির্গমন ব্যবস্থাগুলোও কাজ করছে না।
প্রাদেশিক সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩৬ ঘণ্টার বৃষ্টিতে এমিলিয়া-রোমাগনাজুড়ে প্রায় ১২০টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, একটি সেতু ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং সড়ক ও রেলপথগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া প্রদেশের অধিকাংশ শহর ও গ্রাম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
প্রদেশের শহর-গ্রাম মিলিয়ে অন্তত ৩৭টি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই ভয়াবহ দুর্যোগে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আড্রিয়াটিক সাগরের তীরবর্তী রেভেন্না শহর। রেভেন্না নগর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী শহরের অধিকাংশ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হলেও এখন পর্যন্ত ঝুঁকিতে আছেন ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে তাদেরকে এখনও সরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।
এমিলিয়া রোমাগনা প্রাদেশিক সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইরেনে প্রিয়োলো বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বৃষ্টি পুরোপুরি না থামলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে আসছে, কিন্তু নদী ও অন্যান্য জলাশয়ের পানি এখনও বাড়ছে।