শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন

ঘুরে আসুন পুণ্যভুমি সৌদি আরব

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১২ মে, ২০২৩

পুন্যভুমি সৌদি আরবের গুরুত্বের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। বিশেষ করে পৃথিবীর ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে সৌদি আরব সব সময়েই একটি কাঙ্খিত গন্তব্য। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর পবিত্র জন্মভুমি, ইসলাম ধর্মের উৎপত্তিস্থল, পবিত্র কুরান শরিফ নাজিল সহ এরকম আরও অনেক কারন রয়েছে যেজন্য মুসলমানদের কাছে সৌদি আরব একটি প্রিয় নাম। এছাড়া পবিত্র মক্কা শরিফ, মদিনা শরিফ এবং পবিত্রও হজ ও উমরাহের মত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলি তো আছেই।

শুধু ধর্মীয় দিক থেকেই নয়, বরং অর্থনৈতিক ভাবেও অনেক প্রভাবশালী একটি দেশ। কাজের জন্য হিন্দু, খ্রিস্টান ও মুসলিম সহ নানা ধর্ম ও বর্ণের লোক পাড়ি জমায় এখানে। ভাল পরিবেশ, কর মুক্ত বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থাকার কারণে উপমহাদেশ সহ এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা এবং অন্যান্য অঞ্চলের কর্মজীবী মানুষের কাছে সৌদি আরব একটি কাঙ্খিত গন্তব্য।

সৌদি আরব এবং ভ্রমণ

এতদিন মুসলমানদের হজ, উমরাহ্‌ আর কর্মজীবীদের কাজের প্রয়োজনই ছিল সৌদি আরব যাবার মুখ্য উদ্দেশ্য। কিন্তু বর্তমানে সে অবস্থা অনেকটাই বদলে গেছে। বর্তমান সরকার সৌদি আরবকে পৃথিবীর বুকে একটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন অনেক আগেই। তার পদক্ষেপ হিসেবে পর্যটকদের ভিসা ব্যাবস্থায় আনা হয়েছে শিথিলতা। এ বছর থেকেই সৌদি সরকার পর্যটকদের জন্য বিশেষ টুরিস্ট ভিসা চালু করার চিন্তা করেছে যা এখন প্রক্রিয়াধিন আছে।

এছাড়া নারী পর্যটকদের জন্য দেয়া হচ্ছে বিশেষ সুবিধা। এখন থেকে ২৫ বছর বা তাঁর চাইতে বেশী বয়সী নারী কোন রকম পুরুষ সঙ্গি ছাড়াই সৌদি আরব ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে ২৫ এর কম বয়স হলে একজন পুরুষ সঙ্গি লাগবে।

সৌদি আরব অনেক সমৃদ্ধ একটি দেশ। ২,১৫০,০০০ বর্গ কিলোমিটারের বিশাল দেশটির বেশিরভাগ জায়গা মরুভুমি হলেও অনেকগুলো জাঁকজমকপূর্ণ শহর রয়েছে। এসমস্ত শহরগুলো সাজাতে সৌদিরা মোটেও কার্পণ্য করেননি। ইসলামের শুরু এখানেই, তাই স্বাভাবিকভাবেই ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে সম্পর্কিত অনেক জায়গা ও স্থাপনা আছে সৌদি আরবে।

কিভাবে যাবেন সৌদি আরব

এর আগে শুধুমাত্র শ্রমিক ভিসা, হজ এবং উমরাহের জন্যও সৌদি আরব ভিসা দিত। এবছর অর্থাৎ ২০১৮ সাল থেকে সৌদি আরব সরকার টুরিস্ট ভিসা চালু করতে যাচ্ছে।  বিভিন্ন দেশের পর্যটকের আকর্ষণ করাই এই ভিসা চালু করার মুল লক্ষ্য। এপ্রিল মাস থেকে এই ভিসা চালু হবার কথা থাকলেও কিছু জটিলতার কারণে এখন ভিসা ব্যাবস্থা চালু করা হয়নি। তবে সমস্ত আয়োজন সম্পন্নও হয়েছে এবং এখন প্রক্রিয়াটি রাজ্যতন্ত্রের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। এই ভিসা চালু হলে কাজ বা ধর্মীয় কারন ছাড়াও শুধু মাত্র ভ্রমণের জন্য সৌদি আরব যাওয়া যাবে। প্রাথমিক ভাবে এই ভিসা পেতে হলে অনুমদিত ট্যুর অপারেটরের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।

( আমরা এই টুরিস্ট ভিসা সম্পর্কে আপডেট দিতে থাকব। ভিসা চালু হওয়া মাত্র আমরা এই পোস্টে তার বিস্তারিত নিয়ে আলোচনা করব।)

বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব যেতে চাইলে বিমান পথে যেতে হবে। ঢাকা থেকে অনেক গুলো বিমান সংস্থার বিমানে সৌদি আরব যেতে পারেন। সৌদি আরবের অনেক গুলো এয়ারপোর্ট রয়েছে। এর মধ্যে সবচাইতে বড় আর প্রসিদ্ধ হল কিং খালেদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটি রাজধানী রিয়াদে অবস্থিত।

জেট এয়ারওয়েজ, বাংলাদেশ বিমান, কুয়েত এয়ারওয়েজ, শ্রীলংকান এয়ারলাইন্স, এমিরেটস, ইতিহাদ এয়ার ওয়েজ, সৌদি আরাবিয়ান এয়ারলাইন্স, টার্কিশ এয়ারলাইন্স সহ বিভিন্ন বিমান সংস্থার বিমানে সৌদি আরব যাওয়া যাবে।

তাহলে আসুন প্রথমে জেনে নেয়া যাক সৌদি আরবের কিছু বিখ্যাত জায়গা সম্পর্কে যেসব জায়গা ভ্রমণ না করলেই না। এর মধ্যে কিছু জায়গা আছে ধর্মীয় গুরুত্ব সম্পন্নও, আর কিছু জায়গা আছে সৌন্দর্যমণ্ডিত। তবে এর সবই যে মনমুগ্ধকর, তা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে।

মসজিদ আল হারাম, মক্কা

বিখ্যাত এই মসজিদের নাম মুসলমান মাত্রই শুনে থাকবেন। এই মসজিদকে আল্লাহর পবিত্র ঘর হিসেবেও সম্বোধন করা হয়। পৃথিবীর সবচাইতে বড় মসজিদ হিসেবে খ্যাত মসজিদ আল হারামেই আছে  মহাপবিত্র কাবা শরিফ। প্রায় ৮৮.২ একর এলাকা নিয়ে এই মসজিদটি গড়ে উঠেছে। এখানে প্রায় ৪ মিলিয়ন (৪০ লক্ষ) মানুষ সমবেত হতে পারে।

প্রতিবছর লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান এই কাবা ঘর তওয়াফ করতে আসেন, যা আমাদের কাছে হজ এবং উমরাহ্‌ হিসেবে পরিচিত। এর বিশেষ ভাবে তৈরি করা স্থাপত্যশৈলী মানুষের মনে ধর্মীয় ভাবানুরাগের জন্ম দেয়। কাবার অতি নিকটেই অবস্থিত আছে বিখ্যাত জমজম কুপ। খ্রিস্টের জন্মের ২১৫০ বছর পূর্বে এই কুপটি মহান আল্লাহর নির্দেশে সৃষ্টি হয় এবং আজ অবধি এখান থেকে পানি উত্তলন করা যায়। এই পানিকে মুসলমানরা অনেক পবিত্রও এবং উপকারী বলে গন্য করে থাকেন।

মসজিদ আল নববি, মদিনা

সৌদি আরবের আরেকটি বিখ্যাত ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান হল মসজিদ আল নববি। মুসলমানদের মহানবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর জীবদ্দশায় এই মসজিদের তৈরি করা হয়। মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার পর তিনি তাঁর বাসস্থানের পাশে এই মসজিদটি তৈরি করেন। তিনি নিজেও এই কাজে অংশ নেন। গুরুত্বের দিক থেকে মসজিদ আল হারামের পরেই এর অবস্থান। এটি পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ আর সুন্দর মসজিদ। মসজিদ সংলগ্নই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর রউজা মুবারাক অবস্থিত।

দিন রাত সব সময়ের জন্য এই মসজিদ উম্মুক্ত থাকে। হজ্জের সময় আগত হাজীগন হজ্জের পূর্বে অথবা পরে মদিনায় মসজিদে নববির আশে পাশে অবস্থান করে থাকেন। এই মসজিদটি সৌদি আরব সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় এবং তারাই এর যাবতীয় সংরক্ষন ও সংস্কারের ব্যাবস্থা করেন।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com