শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১১ পূর্বাহ্ন

সিঙ্গাপুর ভ্রমণ

  • আপডেট সময় সোমবার, ৮ মে, ২০২৩

মাত্র ৪০ থেকে ৫০ বছরের ব্যাবধানে অনুন্নত তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশ থেকে একটি পরিপূর্ণ উন্নত দেশে পরিণত হয়ে সিঙ্গাপুর একটি চমক সৃষ্টি করেছে। ১৯৬৫ সালে স্বাধীনতা প্রাপ্ত সিঙ্গাপুর ছিল অগোছালো, নিয়ন্ত্রনহীন এবং সংঘাতে পরিপূর্ণ একটি দেশ। কিন্তু তাঁরা সেখানে থেমে থাকেনি। যুগোপযোগী পরিকল্পনা এবং উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহনের মাধ্যমে তাঁরা আজ নিজেদের দেশকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে তা এখন বিভিন্নও দেশের পর্যটকদের কাছে এক দারুণ আকর্ষণের নাম। আমাদের আজকের ব্লগে আমরা সিঙ্গাপুর ভ্রমণের বিভিন্নও দিক নিয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি তাদের এই যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়েও কিছু কথা বলব।

সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং ধুঁকতে থাকা সিঙ্গাপুর

মূলত ১৯৬৩ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে সিঙ্গাপুর স্বাধীনতা লাভ করে, কিন্তু তখনও তাঁরা মালয়েশিয়ার অন্তর্ভুক্তই ছিল। মতের মিল না হওয়ায় ১৯৬৫ সালে তারা মালয়েশিয়া থেকে আলাদা হয় এবং নিজেদের স্বাধীন সার্বভৌম দেশ প্রতিষ্ঠা করে। সেসময় সিঙ্গাপুরকে নিয়ে বলার মত কিছুই ছিল না। সিঙ্গাপুরের পরিচয় ছিল একটি মাছ ধরা কেন্দ্র হিসেবে। তখনকার বেশিরভাগ মানুষ ছিল অশিক্ষিত এবং মাছ ধরাই ছিল তাদের জিবিকা নির্বাহের একমাত্র উপায়। ৭১৬ বর্গ কিলোমিটারের দেশটি ছিল এক কথায় অপরাধ ও দারিদ্রতায় জর্জরিত একটি মৎস্য ব্যাবসা কেন্দ্র।

ক্ষুদ্র এই নগর রাষ্ট্রের উল্লেখ করার মত কিছুই ছিল না। প্রাকৃতিক সম্পদই দেশের উন্নয়নের একমাত্র চাবি কাঠি, এই কথায় যারা বিশ্বাস করেন তাদের জন্য বলছি, সিঙ্গাপুরে কোন প্রাকৃতিক সম্পদ ছিলনা বললেই চলে। মালয় এবং চীনাদের ভিতরের কোন্দলের কারণে আইন শৃঙ্খলার অবস্থাও ছিল বেশ খারাপ। এক কথায় তখনকার সিঙ্গাপুর আর এখনকার সিঙ্গাপুরের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ ছিল। তখন কেউ চিন্তাও করেনি যে এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠে সিঙ্গাপুর কখনও উন্নত দেশের তালিকায় নাম লেখাতে পারবে।

সিঙ্গাপুরের ঘুরে দাঁড়ানো

এই বিপর্যয় সামলিয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব যার কাধে পরে তিনি হলেন সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রি লি কুয়ান। তাঁকে বলা হয় আধুনিক সিঙ্গাপুরের জনক। ১৯৬৫ সালে মালয়েশিয়া থেকে দেশকে পৃথক করতে লি কুয়ান অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এর পর শক্ত হাতে দেশের হাল ধরেন। তাঁর আপ্রান চেষ্টায় এবং বুদ্ধিমত্তায় ধীরে ধীরে সিঙ্গাপুর আলোর পথে হাটা শুরু করে। তিনি প্রথমে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন এবং অপরাধ প্রবণতা কমিয়ে আনেন। এর পর তিনি দেশের একমাত্র সম্পদ জনসংখ্যাকে কাজে লাগানোর বিস্তর পরিকল্পনা গ্রহন করেন। তিনি মানুষের সততাকে সব চাইতে বেশী মুল্যায়ন করতেন, এমনি মেধার চাইতেও বেশী। তাঁর কাছে মনে হয়েছে, মানুষের সকল শিক্ষা ও মেধার কোন মুল্যই নাই যদি না সে সৎ হয়।

ফলস্বরূপ কয়েক বছরের মধ্যে বেকারত্বের হার কমে মাত্র ৩ শতাংশে চলে আসে, প্রবৃদ্ধি বেড়ে যায় প্রায় ৮ শতাংশ। কু ওয়ানের দূরদর্শিতায়  ৮০’র দশেকই সিঙ্গাপুর কম্পিউটার যন্ত্রাংশ তৈরি শুরু করে। দেশে পর্যটকদের আগমনকে উৎসাহিত করার জন্যে ১৯৮১ সালে সিঙ্গাপুর চাঙ্গি এয়ারপোর্ট উম্মুক্ত করা হয় এবং সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

সিঙ্গাপুরের পরিবেশ ও ভ্রমণ

সমস্ত দুর্দশাকে পিছনে ফেলে সিঙ্গাপুর আজ পৃথিবীর ২২ তম ধনি দেশ। সিঙ্গাপুরের জীবন যাত্রার মান উন্নতির দিক থেকে এশিয়ার মধ্যে চতুর্থ। এখানকার ৮৩ শতাংশ মানুষই উন্নত হাউজিং এস্টেটে বসবাস করে। এসব পরিসংখ্যানই বলে দেয় যে সিঙ্গাপুর আজ ইউরোপের কোন উন্নত রাষ্ট্রের চাইতে কোন অংশে কম না।

উন্নত সিঙ্গাপুরের যে কয়েকটি বিষয় আপনাকে বেশী মুগ্ধ করবে তার মধ্যে একটি হল রাস্তা ঘাটে নারীদের অবাধ এবং নিরাপদ চলাচল। অত্যন্ত কার্যকর আইন আছে এই বিষয়ে। কোন পুরুষ যদি কোন নারির দিকে অশোভন দৃষ্টিও দেয়, তাহলে সেই নারী তখনি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবে। তৎক্ষণাৎ এমন ভাবে ব্যাবস্থা নেয়া হবে যে ওই পুরুষ আর ওই অপরাধের পুনরাবৃত্তি করার সাহস করবে না। এসব ব্যাপার দেখার জন্যও নগরীর রাস্তা ঘাটে ছড়িয়ে থাকে অসংখ্য সাদা পোশাকের পুলিশ।

আরেকটি চমৎকার ব্যাপার হল এখানকার পরিচ্ছন্নতা। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ যদি তা করে তাহলে তাকে শাস্তি  হিসেবে ১ দিন ওই এলাকার ঝাড়ুদারের দায়িত্ব পালন করতে হয় এবং পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক সেমিনারে অংশ নিতে হয়!

পুরোপুরিভাবে দুর্নীতিমুক্ত, পরিচ্ছন্ন এবং উন্নত একটি দেশ ভ্রমণ করতে কার না ইচ্ছা করে! ইউরোপ ভ্রমণের স্বাদ পেতে ইচ্ছা হলে কম খরচে সিঙ্গাপুর একটা চমৎকার গন্তব্য হতে পারে। এজন্যে বাংলাদেশ তথা পৃথিবীর বিভিন্নও দেশের পর্যটকদের কাছে সিঙ্গাপুর একটি জনপ্রিয় নাম। তাহলে আসুন জেনে নেয়া যাক সিঙ্গাপুর ভ্রমণ সম্পর্কে কিছু তথ্য।

কখন বেড়াতে যাবেন সিঙ্গাপুর

দক্ষিণপূর্ব এশিয়াতে অবস্থানের কারণে সিঙ্গাপুরে তাপমাত্রা এবং আদ্রতা দুইই বেশী থাকে প্রায় সারা বছরই। একারণে বছরের যেকোনো সময়েই আপনি সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করতে পারেন।

জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে সবচাইতে বেশী পর্যটক সমাগম ঘটে সিঙ্গাপুর এ। এই সময় গেলে আপনি অনেক উৎসব এবং ইভেন্টে যোগ দিতে পারবেন। এর মধ্যে  বিখ্যাত সিঙ্গাপুর সেল ফেস্টিভাল ( বিক্রয় উৎসব) আর ফুড ফেস্টিভাল অন্যতম। ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল এই সময়ে ভিড় কম থাকে এবং আবহাওয়া বেশ নাতিশীতোষ্ণ থাকে। সিঙ্গাপুরে বর্ষাকাল থাকে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত। এই সময় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। যদি বৃষ্টি এড়াতে চান তাহলে এই সময়ে সিঙ্গাপুর ভ্রমণ না করাই ভাল হবে।

কিভাবে যাবেন সিঙ্গাপুর

ঢাকায় সিঙ্গাপুরের কনস্যুলেট আছে ঠিকই, কিন্তু সেখান থেকে সিঙ্গাপুরের ভিসা দেয়া হয় না। ভিসার জন্যে বেশ কিছু অনুমোদিত এজেন্ট আছে, সেখান থেকে ভিসা করে নিতে পারেন। ভিসা পেতে হলে আপনাকে অবশই সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত কারও কাছ থেকে আমন্ত্রন পেতে হবে। ভিসা ফি ৩০ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার।

সিঙ্গাপুর ভিসা সম্পর্কে জানতে চাইলে ভিজিট করুনঃ https://www.ica.gov.sg/

বিমান টিকিট সংক্রান্ত তথ্য

ঢাকা থেকে বিমানে সিঙ্গাপুর যেতে পারেন। সরাসরি অথবা ওয়ান স্টপ ফ্লাইট পাবেন। জেট এয়ার ওয়েজ, মালিন্দ এয়ার, বিমান বাংলাদেশ, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স ইত্যাদি বিভিন্নও আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থার বিমানে সিঙ্গাপুর যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে খরচ পরবে ১৭,৬৪০ টাকা থেকে ২১,২২২ টাকা। দেশীয় বিমান সংস্থার মধ্যে রিজেণ্ট এয়ারলাইন্স, ইউ এস বাংলা এয়ারলাইন্স, ও বাংলাদেশ বিমানে যেতে পারবেন। খরচ পরবে ১৬,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা। ভাল হবে যদি যাত্রার মাস খানেক আগে অগ্রিম বুকিং দিয়ে রাখেন। সেক্ষেত্রে খরচ কিছুটা হলেও কমবে। তবে বিমান টিকিট করার জন্য বিমান সংস্থার অফিস কিংবা ট্রাভেল এজেন্সিতে দৌড়ানোর প্রয়োজন হবে না। ঘরে বসে খুব সহজেই যেকোন গন্তব্যের টিকিট কাটতে পারেন এই ওয়েবসাইট থেকেঃ https://www.flightexpert.com/

কি দেখবেন সিঙ্গাপুরে

সিঙ্গাপুর আয়তনে বেশ ছোট একটি দেশ। মাত্র ৭১৬ বর্গ কিলোমিটারের ছোট নগর রাষ্ট্র হবার কারণে পর্যটকরা একটা বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকে। সেটি হল, খুব দূরে কোথাও না গিয়েও অনেক কিছু দেখে ফেলা সম্ভব। তবে তাঁর মানে এই না যে সিঙ্গাপুরে দর্শনীয় স্থানের সংখ্যা কম! ট্রাফিক জ্যাম মুক্ত ঝকঝকে নগর রাষ্ট্রটিতে উপভোগ করার মত অনেক উপকরণই রয়েছে।  আপনাদের সুবিধার জন্য এরকম কিছু স্থান নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।

দেখে নিতে পারেন সিঙ্গাপুরের চমৎকার সব স্থান গুলো নিয়ে এই ভিডিওটি

সিঙ্গাপুর চিড়িয়াখানা

দেশের অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে পরিচিত এই সিঙ্গাপুর চিড়িয়াখানা। সাধারণ চিড়িয়াখানা থেকে এর পার্থক্য হল, এখানে বন্য প্রাণীরা খাঁচায় আবদ্ধ থাকেনা। তাদের জন্য বিশেষ ভাবে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং তাঁরা সেখানে মুক্তভাবে বিচরন করে। একটি বন্য প্রাণীকে তাঁর উপযুক্ত পরিবেশে নিজের মত চড়ে বেড়াতে দেখার চাইতে চমৎকার আর কি হতে পারে। আপনার যদি বন্যপ্রাণী ফটোগ্রাফির শখ থাকে তাহলে তা ইচ্ছা মত মিটিয়ে নিতে পারবেন এখান থেকে। প্রতিবছর প্রায় ১.৬ মিলিয়ন দর্শনার্থী এই চিড়িয়াখানা দেখতে আসেন।

সময়সীমাঃ সকাল ৮.৩০ থেকে সন্ধ্যা ৬ টা

প্রবেশ মুল্যঃ প্রাপ্ত বয়স্ক – ২০ ইউ এস ডলার, শিশু ৩ ডলার।

ঠিকানাঃ ৮০ মান্দাই লেক রোড, সিঙ্গাপুর ৭২৯৮২৬

মারলায়ন পার্ক

সিঙ্গাপুর যাবেন আর মেরিলিয়ন পার্ক দেখবেন না, এ হতেই পারে না। এই স্থাপনাটিকে সিঙ্গাপুরের গর্ব এবং প্রতিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মেরিলিয়ন এর মূর্তিটি ২৮ ফুট লম্বা। এর মাথা সিংহের এবং দেহ মাছের। এই মূর্তিটি দ্বারা সিঙ্গাপুরবাসি এটাই প্রমান করতে চায় যে মাছ ব্যাবসায়ি হিসেবে তাদের দেশের যে অতীত ইতিহাস, সেটা তাঁরা ভুলে যায়নি। এখান থেকে সমগ্র মেরিনা বে এর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। সব মিলিয়ে জায়গাটার পরিবেশ অনেক চমৎকার।

সিঙ্গাপুর ফ্লাইয়ার

সিঙ্গাপুরের অনন্য আকর্ষণগুলোর মধ্যে ফ্লাইয়ার অন্যতম। একে নির্দ্বিধায় পৃথিবীর বৃহত্তম নাগরদোলা বলা চলে। ২৪০ মিলিয়ন ডলার ব্যায়ে নিরমিত ১৬৫ মিটার উচ্চতার এই নাগরদোলাটি ২০০৮ সালে জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হয়। রাতের বেলা এই নাগরদোলায় চড়ে চমৎকার আলোকোজ্জ্বল সিঙ্গাপুরের ৩৬০ ডিগ্রি দৃশ্য দেখার চাইতে রোম্যান্টিক আর কি হতে পারে! বিশেষ ব্যাবস্থায় আপনি ইচ্ছা করলে এই নাগরদোলায় থাকাকালীন অবস্থায় আপনার ডিনারটাও সেরে নিতে পারেন। এক কোথায় অপূর্ব কিছু অনুভুতি পাবেন এখানে।

সময়সীমাঃ সকাল ৮.৩০ থেকে রাত ১০.৩০

টিকিটঃ প্রাপ্ত বয়স্ক ৩৩ ইউ এস ডলার, শিশু ২১ ইউ এস ডলার

ফ্যামেলি প্যাকেজঃ ৭৮ ইউ এস ডলার।

ঠিকানাঃ ৩০ র‍্যাফেলস এভিনিউ।

সিঙ্গাপুর ইতিহাস যাদুঘর বা হিস্টোরি মিউজিয়াম

সিঙ্গাপুরের আরেকটি চমৎকার দেখার মত জায়গা হল এর ইতিহাস যাদুঘর। সিঙ্গাপুরের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে হলে এই যাদুঘর দেখার বিকল্প নেই। চমৎকার মার্বেল পাথরে বাঁধানো সাদা রঙের একটি প্রাসাদের ভিতর এই জাদুঘরটি অবস্থিত। এখানে শুধু সিঙ্গাপুর না, বরং এশিয়ার বিভিন্নও দেশের ও সময়ের ঐতিহাসিক উপাদান যত্নসহকারে সংরক্ষিত আছে।  বাচ্চাদের জন্য তাদের উপযোগী করে তৈরি করা আলাদা সেকশনও আছে।

সময়সীমাঃ সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা

টিকিটঃ প্রাপ্ত বয়স্ক ১০ ইউ এস ডলার, শিশু, ছাত্র ছাত্রী ও বৃদ্ধ – ৫ ইউ এস ডলার

ঠিকানাঃ ৩০ মার্চেন্ট রোড, রিভার সাইড পয়েন্ট।

চায়না টাউন

বিচিত্র কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চায়না টাউন ঘুরে আসতে পারেন। অন্যান্য দেশের চায়না টাউনের মত এখানকার চাইনিজরাও অনেক আমুদ প্রিয়। ছোট ছোট অনেক দোকান পাবেন বিভিন্নও ধরনের মাল্ পত্রে ঠাসা। এখানে ঘুরতে ঘুরতে চাইনিজ হেরিটেজ সেন্টার টা দেখে ফেলতে পারেন। দেখতে পারেন চমৎকার শ্রী মারিয়াম্মান মন্দির।

বুদ্ধের দন্ত সংরক্ষিত যাদুঘর বা টুথ রেলিক মিউজিয়াম

সিঙ্গাপুরে অবস্থিত চায়না টাউনের কেন্দ্রস্থলে এই বিখ্যাত মন্দির ও যাদুঘরটি অবস্থিত। এই মন্দিরের চতুর্থ তলার অভ্যান্তরে ৩২০ কিলোগ্রাম সোনার স্তুপের উপর মহামতি বুদ্ধের একটি দাঁত সংরক্ষিত আছে। এটি দর্শনার্থীদের দেখার জন্যও উম্মুক্ত। প্রতি বছর হাজার হাজার বৌদ্ধ এখানে আসে। বৌদ্ধ ছাড়াও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও আসেন নির্দ্বিধায়। নিচতলায় দর্শনার্থীদের বিনামূল্যে শাকাহার করানো হয়।

সময়সীমাঃ সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা

প্রবেশমুল্যঃ বিনামূল্যে।

গার্ডেনস বাই দ্য বে

মেরিনা রিজারভেয়ারের একদম পাশেই ২৫০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে গার্ডেনস বাই দ্য বে নামের বিশাল এই পার্ক। তিনটি বৃহৎ ওয়াটার ফ্রন্ট বাগান নিয়ে এই বিশাল পার্ক গড়ে উঠেছে। এখানে হাজার প্রজাতির বিভিন্ন গাছ পালা ও লতা গুল্মের সমাহার আপনাকে মুগ্ধ করবে। শহুরে পরিবেশে যদি ক্লান্ত অনুভব করেন, তাহলে এখানকার শান্ত সবুজ পরিবেশে এসে দেহ মনকে সতেজ করে নিতে পারেন।

সময়সীমা সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯ টা

প্রবেশ মুল্যঃ ২৮ ইউ এস ডলার

ঠিকানাঃ ১৮, মেরিনা গার্ডেনস ড্রাইভ।

র‍্যাফেলস হোটেল

এই হোটেলটি সিঙ্গাপুরের সবচাইতে পুরাতন ভবনগুলোর মধ্যে অন্যতম। হোটেলটি স্থাপিত হয় ১৮৮৭ সালে। অনেক বিখ্যাত ব্যাক্তি এই হোটেলে থেকেছেন বিভিন্নও সময়ে। এর মধ্যে আছেন রুডইয়ার্ড কিপ্লিং, জোসেফ কনরাড, চারলি চ্যাপলিন এবং আরও অনেকে। এই হোটেলের সাথে সিঙ্গাপুরের অনেক ঐতিহ্য জড়িত। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে এই হোটেল আজ সিঙ্গাপুরের সংস্কৃতির একটা অংশই হয়ে গেছে বলা যায়। এত দিন পরেও এই হোটেলটি এখনও চমৎকার সেবা দিয়ে যাচ্ছে। খাবার দাবারও অনেক মানসম্মত। তাই এখানে এলে এক ঢিলে অনেক পাখিই মারতে পারবেন।

সেন্তোসা আইল্যান্ড

সিঙ্গাপুর সৈকতের জন্যও খুব একটা বিখ্যাত না। কিন্তু এর পরও যদি আপনার সৈকতে সময় কাটাতে ইচ্ছা করে সেক্ষেত্রে সেন্তোসা আইল্যান্ড একটা চমৎকার গন্তব্যও হবে। জল এবং স্থল উভয় পথেই এই ছোট দ্বিপে যেতে পারবেন। এখানকার সিলোসো সৈকত বেশ চমৎকার। এখানেই পাবেন বিখ্যাত মেরিলন এর মূর্তি। আরও দেখবেন সিলোসো দুর্গ এবং ইউনিভার্সাল স্টুডিও সিঙ্গাপুর।

কোথায় থাকবেন সিঙ্গাপুর গেলে

সিঙ্গাপুর ভ্রমনে গেলে অবশ্যই কয়েকদিন থাকতে হবে আপনাকে। যদি আত্মীয় স্বজন বা বন্ধু বান্ধব না থাকে, সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই হোটেলের খোজ খবর আগে থেকেই নিয়ে রাখতে হবে। সব থেকে ভাল হয় যদি অগ্রিম বুকিং দিয়ে যেতে পারেন, সেক্ষেত্রে খরচও কিছুটা কমবে। আপনার সুবিধার জন্যে এরকম ভাল কিছু হোটেলের নাম ও ফোন নম্বর আমরা দিয়ে দিচ্ছি। এছাড়া আরও খোজ নিতে চাইলে নিচের ওয়েব সাইটটি ব্যাবহার করতে পারেন। এখানে আপনার ভ্রমণের তারিখের যত গুলো হোটেল ফাকা থাকবে তার সব গুলোর লিস্ট পেয়ে যাবেন ট্রিপ অ্যাডভাইজার রেটিং সহ। সাইটঃ https://flightexpert.com/

সিঙ্গাপুরের সেরা হোটেল এর লিস্ট

ইন্টার কণ্টীনেণ্টাল সিঙ্গাপুর – +65 6338 7600

ফোর সিজন্স সিঙ্গাপুর – +65 6734 1110

ম্যান্ডারিন ওরিয়েন্টাল – +65 6338 0066

দ্য ফুলারটন হোটেল – +65 6733 8388

দ্য রিজ কার্লটন মিলেনিয়া – +65 6337 8888

শাংরি লা হোটেল – +65 6737 3644

নাউমি হোটেল – +65 6403 6000

পার্ক রয়্যাল অন পিকারিং – +65 6809 8888

সেন্ট রেজিস হোটেল – +65 6506 6888

হোটেল ইণ্ডিগো সিঙ্গাপুর – +65 6723 7001

আশা করব আমাদের ব্লগের তথ্য গুলো আপনাকে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে। আপনার আনন্দময় এবং নিরাপদ সিঙ্গাপুর ভ্রমণ কামনা করে শেষ করছি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com