ফাঁক পেলেই উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে ছুটে যায় ভ্রমণপ্রিয় বাঙালি। পাহাড়ের গা ঘেঁষে থাকা হোটেল-রিসর্ট- হোম স্টে-তে নজরকাড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য তারিয়ে-তারিয়ে উপভোগের সুযোগ এলে তা হাতছাড়া করতে চান না পর্যটকরা। উত্তরবঙ্গরে নজরকাড়া একাধিক পর্যটন কেন্দ্রে বছরভর পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে। দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়ঙের বহু এলাকাতেই ঈশ্বর যেন ঝুলি উজার করে অসাধারণ প্রাকৃতিক শোভা ঢেলে দিয়েছেন। এবার এমনই এক গ্রামের হদিশ দেব আমরা। যে গাঁয়ে ঘুম পাড়ায় কাঞ্চনজঙ্ঘা আর ঘুম ভাঙায়ও সে।
পাহাড়ের গায়ে হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার নিয়েই ছোট-ছোট কয়েকটি গ্রাম। দার্জিলিং, কালিম্পঙে বেড়াতে গেলে এমন অনেক গ্রামেই ছুটির ক’দিন কাটিয়ে ফেরেন পর্যটকরা। এবার কালিম্পঙে পাহাড়ের বেশ উঁচুতে একটি ঢাল বেয়ে এমনই অসীম সৌন্দর্যের ডালি নিয়ে সেজেছে ইচ্ছেগাঁও। অসাধারণ এই এলাকার সৌন্দর্য্যের স্বাদ একবার পেলে ফিরতে আর মনই চাইবে না। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত, ইচ্ছেগাঁওয়ের ফ্লেভারটাই বড় নেশাময়।
ভোরের আলো ফুটতেই সামনে উঁকি দেবে কাঞ্চনজঙ্ঘা। সূর্যের আলো সুন্দরী কাঞ্চনজঙ্ঘার গা ঢলে পড়ার সেই মুহূর্ত ইচ্ছেহাঁওযের হোম-স্টে-গুলির জানলা-বারান্দায় বসেই চাক্ষুস করার সুযোগ মিলবে। পাহাড়ের কোলে যেন নিজের ইচ্ছেয় ঘুমোচ্ছে শান্ত-নিরিবিলি-নির্জন ইচ্ছেগাঁও। গত কয়েক বছরে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে নজর কেড়েছে কালিম্পং জেলার এই তল্লাট। ব্যস্ত জীবন থেকে তাই মাত্র ক’দিনের ছুটি নিন। দিন কয়েক কাটিয়ে আসুন কালিম্পঙে পাহাড়ের কোলের এই ইচ্ছেগাঁও থেকে। ইচ্ছেগাঁওয়ের ঠিক উপরেই রয়েছে আরও একটি গ্রাম। নাম তার সিলারিগাঁও। ট্রেকিং করার ইচ্ছে থাকলে ইচ্ছেগাঁও থেকে ভোর-ভোর বেড়িয়ে পড়ুন। পাহাড়ি পথে ট্রেকিংয়ের ষোলোআনা রোমাঞ্চ নিন তারিযে-তারিয়ে। আসা-যাওয়া মিলিয়ে ঘণ্টা তিনেকের মতো সময় লাগতে পারে।
কীভাবে যাবেন কালিম্পঙের এই ইচ্ছেগাঁওয়ে?
কালিম্পঙ শহরে পৌঁছতে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকেই ছোট গাড়ি, বাস পেয়ে যাবেন। ছোট গাড়িতে কালিম্পঙে পৌঁছতে ঘণ্টা তিনেকের আশেপাশে সময় লাগবে। তবে কালিম্পং শহর থেকে ইচ্ছেগাঁওয়ে পৌঁছতে আরও ঘণ্টাখানেক সময় লাগবে। পাহাড়ের উপরের এই গ্রামে পৌঁছতে কিন্তু সব ধরনের গাড়ি উপযুক্ত নয়। এক্ষেত্রে টাটা সুমো, ইনোভা, মাহিন্দ্রা বোলেরোর মতে গাড়িই বেছে নিন। সরাসরি এনজেপি থেকেও ইচ্ছেগাঁওয়ে যাওয়ার গাড়ি বুক করে নিতে পারেন। অথবা কালিম্পঙে শহরে পৌঁছে সেখান থেকেও আলাদা গাড়ি বুক করে ইচ্ছেগাঁওয়ে পৌঁছনো যেতে পারে।
ইচ্ছেগাঁওয়ে কী দেখবেন?
পাহাড়ের ঢালে থাকা এই গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য যেন ক্যালেন্ডারের পাতায় থাকা ছবির মতো। হাজারো নাম না জানা পাহাড়ি ফুল রয়েছে গ্রামের প্রায় সব বাড়িতেই। সাজানো-গোছানো এই গ্রামে হাঁটা পথেই ঘুরতে পারেন। তবে এর আশেপাশেও একাধিক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। ডেলো পাহাড়কে ঘিরে তৈরি পর্যটন কেন্দ্র এখন দারুণ হিট। চাইলে একটি ছোট গাড়ি ভাড়া করে নিন। ডেলো পাহাড়, থার্পা তোলিং মঠ, মরগ্যান হাউস, নেওড়াভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক, লেপচা জাদুঘর, জং ডং পালরি ফো ব্রাং মনাস্ট্রি ঘুরে দেখতে পারেন। এছাড়াও রয়েছে টিফিনদারা ভিউ পয়েট। ঘুরে আসতে পারেন লাভা- লোলেগাঁও থেকেও।
ইচ্ছেগাওঁয়ে থাকবেন কোথায়?
বর্তমানে ইচ্ছেগাঁওয়ে একাধিক সুদৃশ্য হোম স্টে রয়েছে। থাকা-খাওয়া সমেত খরচ ধরে নেয় হোম স্টে-গুলি। প্রতিদিন জন প্রতি ১১০০-১২০০ টাকা করে নেয় হোম স্টে-গুলি।
কালিম্পঙের কয়েকটি হোম স্টে:
Wish Tree Khamboo Homestay Icchegaon- +91 9547280360
Marigold Homestay Ichhegaon
Niru Homestay Ichhegaon