রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৩ পূর্বাহ্ন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টুডেন্ট ভিসা

  • আপডেট সময় রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৩

সারা পৃথিবী থেকে প্রতিবছর বহু শিক্ষার্থী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যান।বাংলাদেশেও কোন শিক্ষার্থী যখন বাইরে কোন দেশে পড়তে যাবার কথা চিন্তা করে তাদের প্রথম পছন্দ থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আপনি যদি আমেরিকাতে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে চান, তবে প্রথমে আপনাকে ইউএসএর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে।

যখন আপনি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বা প্রোগ্রামে ভর্তি হবার জন্য নির্বাচিত হবেন তখনই কেবল স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভার্সিটি অথবা কলেজ থেকে স্কলারশিপ নিয়ে অথবা স্কলারশিপ ছাড়াই পড়তে যাবার জন্য, নিদিষ্ট ভার্সিটি অথবা কলেজের মাধ্যমেও স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করা যায়।

ভিসার ধরন: আপনি কোন ধরনের প্রতিষ্ঠানে পড়তে যাচ্ছেন বা আপনার ডিগ্রির ধরনটি কেমন, তার উপর নির্ভর করে দুই ধরণের স্টুডেন্ট ভিসা হতে পারে।

১. এফ-১ ভিসা: আমেরিকা পড়তে যাওয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থী এফ-১ ভিসা নিয়ে থাকেন। আপনি যদি আমেরিকার অনুমোদিত কোন স্কুল, কলেজ কিংবা ভার্সিটিতে পড়তে যেতে চান, তবে আপনার দরকার হবে এফ-১ ভিসা।আবার সপ্তাহে যদি আপনাকে পড়ালেখার কাজে সপ্তাহে ১৮ ঘণ্টার বেশি সময় দিতে হয়, তবে আপনাকে এফ-১ ভিসা নিতে হবে।

২. এম-১ ভিসা: আপনি যদি ভোকেশনাল কিংবা কোন ট্রেনিং প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে যেতে চান, তবে আপনাকে এম-১ ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধরন: (ভিসা ক্যাটাগরি) ইউনিভার্সিটি বা কলেজ (এফ টাইপ ভিসা) হাই-স্কুল (এফ টাইপ ভিসা) প্রাইভেট এলিমেন্টারি স্কুল (এফ টাইপ ভিসা) সেমিনার (এফ টাইপ ভিসা) কনসারভেটোরি (এফ টাইপ ভিসা) অন্যান্য একাডেমিক ইন্সটিটিউশান, ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রেইনিং প্রোগ্রাম( এফ টাইপ ভিসা) ভোকেশনাল বা অন্যান্য নন-একাডেমিক প্রতিষ্ঠান (এম টাইপ ভিসা)

পড়ালেখার জন্য যেতে চাইলে ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রাম কিংবা ভিজিটর ভিসায় যেতে পারবেন না। পড়ালেখা করতে যেতে চাইলে স্টুডেন্ট ভিসা (এফ অথবা এম টাইপ) নিয়েই যেতে হবে। কেউ যদি ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রাম কিংবা ভিজিটর ভিসায় যায় তবে শুধু মাত্র রেক্রিয়েশনাল স্টাডি প্রোগ্রামে (নন-ক্রেডিট) অংশগ্রহন করতে পারবে।

অল্পদিনের রেক্রিয়েশনাল স্টাডির জন্য ভিজিটর ভিসা (বি-ভিসা) উপযুক্ত। ভিসার জন্য আবেদন করবেন কীভাবে: ভিসার জন্য আবেদন থেকে অনুমতি পর্যন্ত আপনাকে কয়েকটি ধাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।

১ম ধাপ: অনলাইন ভিসা অ্যাপ্লিকেশন, অনলাইন নন-ইমিগ্রান্ট অ্যাপ্লিকেশন ,ফর্ম ডিএস- ১৬০, অনলাইন আবেদনপত্র পূরণ করুন। আবেদন নিশ্চিত হলে কনফার্মেশান পেইজ প্রিন্ট আউট করে রাখুন ইন্টারভিউ এর দিন সাথে নেবার জন্য। ছবি: ডিএস-১৬০ ফর্ম পূরণ করার সময় আপনাকে ছবি আপলোড করতে হবে। ছবির ফরম্যাট ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী আপলোড করুন।

২য় ধাপ: অ্যাপলিকেশনের পর ননরিফান্ডেবল ভিসা আবেদন ফি জমা দিতে হবে। এম এবং এফ টাইপ ভিসার জন্য আবেদন ফি ১৬০ ইউএস ডলার।

৩য় ধাপ: ইন্টারভিউ শিডিউল: সাধারণত ভিসার জন্য আবেদন করা সব আবেদনকারীদেরই ইন্টারভিউ দিতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য এর ব্যতিক্রম দেখা যায়। যদি আপনার বয়স তাহলে ইন্টারভিউ, ১৩ বা তার কম হয় তাহলে প্রয়োজন নেই, ১৪ থেকে ৭৯ হয় তাহলে প্রয়োজন (রিনিউ করার ক্ষেত্রে প্রয়োজন নেই), ৮০ বা তার চেয়ে বেশি হলে প্রয়োজন নেই।

অনলাইনে ভিসা ফর্ম পূরণ করার পর ওয়েবসাইট থেকে কনফার্ম করলে আপনাকে বাংলাদেশের ইউএস এমব্যাসিতে ভিসা ইন্টার্ভিউয়ের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে।আপনি চাইলে অন্য দেশের এমব্যাসিতেও ইন্টারভিউ এর শিডিউল নিতে পারেন।তবে দেশের তুলনায় দেশের বাইরের কোন এমব্যাসি থেকে ভিসা পাবার সম্ভাবনা অনেক কম।

সাক্ষাৎকারের বুকিং দেবার জন্য আপনার যে তথ্য গুলো প্রয়োজন হবে, পাসপোর্ট নাম্বার। ভিসা ফি রিসিট নাম্বার। ডিএস-১৬০ কনফার্মেশন পেইজের ১০ ডিজিটের বারকোড নাম্বার।

ইন্টারভিউ অ্যাপয়েন্টমেন্টের ডেট পাবার জন্য আপনাকে কতদিন অপেক্ষা করতে হবে নির্ভর করে আপনার লোকেশন, সিজন এবং ভিসা ক্যাটাগরির উপর। এইজন্য চেষ্টা করুন আগেভাগেই ভিসার জন্য আবেদন করতে।

নতুন যারা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করবেন: নতুন শিক্ষার্থী হিসেবে যারা ভিসার জন্য আবেদন করে থাকে তাদের ক্ষেত্রে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার ১২০ দিন আগে ভিসা ইস্যু করা যেতে পারে। তবে ক্লাস শুরু হবার সর্বোচ্চ ৩০ দিন আগে একজন এম টাইপ কিংবা এফ টাইপ ভিসাধারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার অনুমতি পাবেন।

যারা স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ বাড়াতে চান: যারা স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ বাড়াতে চান, তাদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানো যে কোন সময়েই করা যাবে। এই ধরণের ভিসাধারী ক্লাস শুরু হবার আগে যে কোন সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার অনুমতি পায়।

ভিসা ইন্টারভিউতে প্রয়োজনীয় যে ডকুমেন্ট গুলো নিতে হবে: যে সব ডকুমেন্ট আপনার আর্থিক,সামাজিক ও পারিবারিক অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত করে যে আপনি পড়ালেখা শেষে আবার দেশে ফেরত আসবেন, সেই সব প্রমাণ পত্র ইন্টারভিউ এর জন্য নিতে হবে।

আর্থিক ও অন্যান্য প্রমাণাদি, যে গুলো নিশ্চিত করবে যে সম্পূর্ণ প্রোগ্রামের খরচ যোগানোর মতো ক্ষমতা আপনার আছে ।এম টাইপ ভিসার জন্য আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে একাডেমিক খরচ সহ থাকাখাওয়ার খরচ যোগানোর মতো সক্ষমতা আছে, এমন আর্থিক অবস্থার নিশ্চয়তাদানকারী প্রমাণপত্র।

ব্যাংক ডকুমেন্টের ক্ষেত্রে কোন ধরনের ফোটোকপি গ্রহনযোগ্য নয়। এই ক্ষেত্রে অরিজিনাল ব্যাংক ষ্টেটমেন্ট স্লিপ কিংবা অরিজিনাল ব্যাংকের বই জমা দিতে হবে। যদি অন্য কারো আর্থিক স্পন্সরশিপ দেখিয়ে যেতে চান তবে ঐ ব্যাক্তির সাথে আপনার কী সম্পর্ক, তার প্রমাণ নিয়ে যান।

আপনার স্পন্সরের সাম্প্রতিক অরিজিনাল ট্যাক্স ফর্ম,ব্যাংক বুক কিংবা ফিক্সট ডিপোজিটের সার্টিফিকেট নিয়ে যান। একাডেমিক ডকুমেন্ট গুলোও সাথে নিতে হবে ইন্টারভিউ বোর্ডে। যেমন-, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ,সার্টিফিকেট,গ্রেড শিট,স্ট্যান্ডার্ডাইজড টেস্ট স্কোর ইত্যাদি।

সাবধানতা: কখনো ফলস কোন ডকুমেন্ট দেখাবেন না। সেক্ষেত্রে সারাজীবনের মতো হারাতে পারেন ভিসা পাবার সুযোগ।ইউএস এম্বাসি কখনো আপনার গোপনীয় তথ্য প্রকাশ করবে না, এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকুন।

৪র্থ ধাপ: অ্যাপয়েন্টমেন্ট অনুযায়ী সময় মতো ইউএসএ এমব্যাসিতে ইন্টারভিউ দেবার জন্য হাজির হয়ে যান। আপনাকে অবশ্যই আপনার ডিএস-১৬০ এপ্লিকেশন কনফার্মেশন পেজের প্রিন্ট আউট কপি, অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারের প্রিন্টেড কপি, সাম্প্রতিক তোলা এক কপি ছবি, পাসপোর্ট এবং অরিজিনাল ভিসা ফি এর পেমেন্ট স্লিপ সাথে নিতে হবে। এই সব ডকুমেন্ট ছাড়া আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।

শেষ পর্যন্ত আপনি ভিসা পাবেন কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই। যতক্ষণ না ভিসা পাচ্ছেন আগে থেকে টিকিট করে রাখার কোন প্রয়োজন নেই। ইন্টারনেটের কল্যাণে ঘরে বসে যে কোন তথ্য সুবিধা নিতে পারেন এখন। যে কোন সময়, যে কোন ধরনের প্রশ্নের ক্ষেত্রে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের সহায়তা নিন।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com