সেই কবে থেকে সমুদ্র ও পাহাড় তাদের বিশালতা নিয়ে মানুষ কে আকর্ষন করে আসছে। এই বিশাল সৃস্টির পাশে মানুষ বারে বারে ছুটে যেতে চায়, এর সৌন্দ্রর্যের অংশ হতে চায়, অল্প সময়ের জন্য হলেও… জীবনের ক্ষুদ্র অংশ গুলো ভুলে যেতে চায়। যাওয়া সহজ নয়, তাই আকর্ষনও বেশি।
সাজেক , ১৮০০ ফুট উচুতে, চিটাগাং হতে১১৪ কি.মি. খাগড়াছড়ি, সেখান থেকে প্রায় ৭০ কি.মি.দূরে সাজেক। রাংগামাটি জেলায়। পাহাড়ি উচু নিচু রাস্তা, আঁকাবাঁকা, শেষ তিন কি.মি. রাস্তা সোজা ৪৫ ডিগ্রি হয়ে উঠে গেছে। সেই সাথে বিপজ্জনক বাঁক। তবে রাস্তা ভাল। এই রাস্তায় অভিজ্ঞ ড্রাইভার নিয়ে যাওয়া উচিত। চমৎকার রিসোর্ট হলো সর্বাধিক উচ্চতায় আবস্থতিত “রক প্যরাডাইছ Rock Paradise ” আগে থেকে যোগযোগ করে গেলে সিট পেতে সুবিধা হয়.খাবারও পাওয়া যাবে এখানে
,মেঘের সাথে বসবাস করতে চাইলে এখানেই থাকবেন
কি আছে সাজেকে, কেন এত আকর্ষন এর। আছে আদিগন্ত উচু নিচু পাহাড়, থরে থরে সাজানো, চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে অনন্ত কাল ধরে, আর মেঘেরা লুকোচুরি খেলে এরই ফাঁকে ফাঁকে। কখোনো রোদ , কখোনো বৃস্টি, এই আছে এই নেই, এক পলকে গূচ্ছ মেঘ এসে ঢেকে দেয় সবকিছূ , কাছের কিছুই দেখা যায়না, ভিজিয়ে দিয়ে হারিয়ে যায়। সৈয়দ মুজতবা আলীর আবদুর রহমানের মত বলতে ইচ্ছে হয় , এক নিশ্বাস নিলে আয়ু বেড়ে যায় দশ বছর, আর নিশ্বাস ছাড়লে হাজারটা অসুখ বের হরে যায়। হু হু করে বয়ে যায় বাতাস, চুপচাপ বসে কান পাতলে বাতাসের ফিসফিসানি শোনা যায়। এক কথায় নিরেট, অকৃত্তিম, অব্যাবহ্রত প্রকৃতির কাছে ফিরে যাওয়া যায় অল্প সময়ের জন্য হলেও
রাত ৯ টায় ঢাকা থেকে বাসে যাত্রা শুরু
সাজেক ভ্যালী থাকার জায়গা
বাংলার এক স্বর্গরাজ্য যেখানটায় বাসবাস করা যায় মেঘের সাথে, সেখানে ভ্রমণের জন্য আপনাকে আমন্ত্রন.
আর আমাদের রয়েছে সাজেক এর সর্বোচ্চ চূড়ায় কটেজ “রক প্যরাডাইছ Rock Paradise ” থাকার জন্য রক প্যরাডাইস অসাধারণ। যেখানে রাতে না থাকলে সাজেকের আনেক কিছুই মিস করবেন। যারা আসবেন তারা রাত থাকবেন সাজেকের সব থেকে উঁচু পাহাড় কংলাক এ অবস্থিত রক প্যারাডাইস এ এখানে যা পাওয়া যাবে তা সাজেকে অন্য কোথায় পাওয়া যাবে না। আগে থেকে বলে আসলে ট্রেডিশনাল খাবার, ব্যাম্বো চিকেন,খরগোশ খাওয়ানো ব্যবস্থা করবো। পাহারের চূড়ায় বসে রাতে ফানুশ উড়াতে পারেন যা হবে জীবনের স্বরনীয় একটি মূহুত্ত । প্রিয় মানুষটির হাত ধরে মেঘের রাজ্যে কাটাতে পারেন কিছু সময়. হাত দিয়ে মেঘ ছোঁয়া, কিংবা ঘড়ের ভিতরে মেঘ জমা,দুটোই দেখতে পাবেন। নিরাপত্তা নিয়ে কোন ঝামেলা হবে না |
যারা একটু এডভেঞ্চার পছন্দ করেন তাদের জন্যই আমাদের আনন্য সব আয়োজন যা সাজেকে একমাত্র আমাদের এখানেই পাবেন, কারন পাহাড়ের সর্বশেষ চূড়ায় একমাত্র আমাদেরই কটেজ, পাহাড় আর মেঘের সাথে থাকতে চাইলে আপনাকে আমন্ত্রণ
ট্যুর প্লান
1দিন
ভোরে খাগড়াছড়ি পৌঁছান।
ফ্রেশ হয়ে সকালের নাস্তা (পরটা,ডাল, ডিম, চা)
নাস্তা সেরে বাঘাইহাট থেকে ১০.৩০মিনিটে আর্মি এস্কর্ট-এর সাথে সাজেকের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন
দুপুরে সাজেকে পৌছে কংলাক পাড়া কটেজ রক প্যরাডাইচ এর রুমে চেক ইন করবেন
(সাজেকের সবথেকে উচু স্থান যেখানে ভালো view পাওয়া যায়)
ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার। (মুরগী, ভাত, ডাল, সবজি)
রাত ৮ টায় রাতের খাবার। (মুরগী, ভাত, ডাল, সবজি)
এরপর ইচ্ছামত আড্ডা, ঘোরাঘুরি।
সাজেকে রাত্রি যাপন।
2দিন
খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে সূর্যোদয় অবলোকন।
সকাল ৮টায় সকালের খাবার।(খিচুড়ী, ডিম)।
আর্মি এস্কর্টের সাথে সাজেক ত্যাগ।
হাজাছাড়া ঝর্ণা ভ্রমন।
খাগড়াছড়িতে আদিবাসী হোটেলে (ইজোর/ফুডাং টাং/ সিস্টেম রেস্টুরেন্ট) লাঞ্চ।
আলুটিলা গুহা,তারেং ভ্রমন।
রাতের খাবার খেয়ে রাত ৯টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু।
থাকার জন্য রক প্যরাডাইস অসাধারণ। রাতে না থাকলে মিস করবেন। যারা যাবেন তারা অবশ্যই এক রাত থাকবেন সাজেকের সব থেকে উঁচু পাহাড় কংলাক এ অবস্থিত রক প্যারাডাইস এ। আগে থেকে বলে গেলে ট্রেডিশনাল খাবার, ব্যাম্বো চিকেন,খরগোশ পাবেন। রাতে ফানুশ উড়াতে ভূলবেন না যেন। হাত দিয়ে মেঘ ছোঁয়া, কিংবা ঘড়ের ভিতরে মেঘ জমা,দুটোই দেখতে পাবেন। নিরাপত্তা নিয়ে কোন ঝামেলা হবে না |
যা যা করতে পারবেন
ঢাকা টু খাগড়াছড়ি টিকিট
প্রতিদিন সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার
অভ্যন্তরীন পরিবহনের জন্য দুই দিনের জন্য গাড়ী
জীপ গাড়ীর ড্রাইভার ও হেলপারের যাবতীয় খরচ।
রিসোট বা কটেজে রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা।
সাজেক ও আলুটিলায় এন্ট্রি টিকিট
বি.দ্র.
হাঁটাহাটির জন্য আরামদায়ক স্পঞ্জের /রাবারের স্যান্ডেল নিতে হবে।
মোবাইলে চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। পাওয়ার ব্যাংক সাথে নিতে পারেন। রবি ও টেলিটকের ভালো সংয়োগ পাওয়া যায়।
মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালি সম্পর্কিত কিছু কমন প্রশ্নের উত্তর;
যে প্রশ্ন গুলোর উত্তর সম্পর্কে ট্যুরিস্টদের আগে থেকে ধারণা নিয়ে রাখা জরুরী !
*সাজেক রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার একটি ইউনিয়ন, তবে যেতে হয় খাগড়াছড়ির দিঘীনালা হয়ে।
*ঢাকা-খাগড়াছড়ি বাস পাবেন,ভাড়া ৫২০ টাকা,এস আলম,সৌদিয়া,ঈগল,শ্যামলী, শান্তি এবং সেন্টমার্টিন(এসি) পরিবহণের বাস চলাচল করে এই রোডে। ঢাকা-দিঘীনালা বাস ভাড়া ৫৭০ টাকা,খাগড়াছড়ি -সাজেক জীপ রিজার্ভ ৯০০০+। দিঘীনালা-সাজেক জীপ রিজার্ভ ৭০০০+ যাওয়াআসা মিলিয়ে(একদিন দিয়ে আসবে আরেকদিন যেয়ে নিয়ে আসবে এবং আশপাশের স্পট গুলো ঘুরিয়ে আনবে)সকালে গিয়ে বিকেলে ফিরে আসলে ৪০০০+। দুইতিনজন হলে বাইক/সিএনজি-তে যাওয়া যায়,বাইকে দুজন ৬০০+ শুধু যাওয়ার জন্য,সিএনজি রিজার্ভ ৩০০০+ যাওয়াআসা না নেওয়া টাই ভালো।
*একটি জীপ১৫ জন যাওয়া যায়।
*দিঘীনালা থেকে সাজেক যেতে দুই আড়াই ঘন্টা লাগে।
*এই রোডে কোন লোকাল পরিবহণ নেই।
*সাজেকে কোন গাড়ি পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম,তাই যে গাড়িতে যাবেন তাদের সাথেই আসার ব্যাপারে কথা বলে রাখবেন।
*সাজেকে হোটেল রিসোর্ট -এর মোটামুটি মানের খাবার পাওয়া যায়।
*ক্যাম্পিং করা যায় তবে ডিউটি আর্মি অফিসারের. অনুমতি সাপেক্ষে।
*সাজেকে নিরাপত্তার কোন সমস্যা নাই।
*২জন যান অথবা ১০জন যান প্রতিজন ৪৫০০ টাকার মধ্যেই ট্যুর শেষ করা সম্ভব।
*সাজেকে বিদ্যুৎ নেই,সবকিছু সোলারে চলে,এমনকি ল্যাম্পপোস্টও!
*সাজেকের রুইলুই পাড়া থেকে কংলাক পাড়া যেতে প্রায়
৩০-৪০মিনিট লাগে, পুরোটাই অসাধারণ দেখতে।
*সাজেকে যাওয়ার উপযুক্ত সময় সারাবছরই, যখনি যান সাজেকের একটা রুপ পাবেনই,সাজেক আপনাকে কখনোই নিরাশ করবেনা। (তবে আমার ভালো লাগে বর্ষার বিকেলের সাজেক এবং শরৎ অথবা হেমন্তে সাজেকের পূর্ণিমারাত!)
*সাজেকের উচ্চতা ১৮০০ ফুট আনুমানিক
*যদি আর্মি অফিসারদের কোন অনুষ্ঠান না থেকে থাকে
তাহলে রাতে যতক্ষণ ইচ্ছে বাহিরে থাকতে পারবেন।
অফিসার গেলে সাধারণত ১১/১২ টার পরে বাহিরে থাকতে
দেয়না।
*২-৩ ঘন্টা সময় নিতে ঘুরে আসতে পারেন সিকাম তৈসা ঝর্ণা,স্থানীয় কাউকে নিয়ে নেবেন গাইড হিসেবে,৩০০-৪০০ টাকা দিলেই হবে।
*মিনারেল ওয়াটার,বিস্কিট, সিগারেট এই ধরনের ছোটখাটো জিনিষ সাজেকে পাওয়া যায়,কষ্ট করে বয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই. কিন্তু দাম বেশি।
*সর্বশেষ একটি গোপন প্রশ্নের ওপেন উত্তর দেই!
সাজেকে বিয়ার, হুইস্কি অথবা এই টাইপের কিছু এখন পাওয়া যায় না।স্থানীয় আদিবাসীদের তৈরি একটি পানীয় পাওয়া যায়,তবে ওইটা খেলে খুব মাথা ঘোরায় এবং আপনি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেন না,যেখানেই দাঁড়াবেন সামনেপিছনে এবং ডানেবামে দুলতে থাকবেন!এটা থেকে দূরে থাকাই ভালো!) আপনার ভ্রমনপ্রিয় বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন এই তথ্য গুলো । তারপর সবাই মিলে ঘুরে আসুন এই দারুণ জায়গাটিতে ।