জম্মু ও কাশ্মীরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগর কাশ্মীরের মূল পর্যটনকেন্দ্র। শ্রীনগরের প্রধান আকর্ষণ ডাল লেক। বিশাল ডাল লেকের দিকে তাকালে দেখতে পাবেন জলে ভেসে রয়েছে সারি সারি শিকারা আর ঝাঁ চকচকে হাউসবোট। এই ডাল লেকের জন্যই কাশ্মীরকে বলা হয় প্রাচ্যের ভেনিস। কাশ্মীরে আসলে ডাল লেকের উপর ভাসমান হাউসবোটে অন্তত একটা দিন অবশ্যই কাটান। এই অভিজ্ঞতার কোনও তুলনা হয় না। হাউসবোটের ব্যবস্থাপনা কোনও পাঁচকারা হোটেলের চেয়ে কম নয়। অন্দরে কাঠের কাজ দারুণ সুন্দর। স্বয়ংসম্পূর্ণ এই হাউসবোটে আছে কার্পেটমোড়া বাথরুম সংলগ্ন ঘর, লিভিং রুম, ডাইনিং রুম। ছাদে চেয়ার পাতা। এখানে বসে উপভোগ করুন লেকের জলে সূর্যাস্ত, ভূস্বর্গের রাতের সৌন্দর্য।
হাউসবোটে বসেই সেরে ফেলতে পারেন কেনাকাটাও। এখানে শিকারায় দোকানিরা বিক্রি করেন বহুবর্ণ রঙিন ফুল, ফল, দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় নানা জিনিস। ঘুরে দেখুন পাহাড়ের কোলে গড়ে ওঠা রাজকীয় উদ্যান চশমাশাহি। এটি সম্রাট শাহজাহানের আমলে তৈরি। চিনার, ঝাউ এবং নানা প্রজাতির ফুলে ভরা উদ্যানটিতে ঘুরতে খুব ভাল লাগে। উদ্যানের একদিকে ঝরনা। স্থানীয়দের বিশ্বাস এর জল খুবই উপকারী। চশমাশাহি থেকে কিছু দূরেই প্রমোদ উদ্যান শালিমার বাগ। নানা বাহারি ফুলের সমাহার, ছোট ছোট ফোয়ারায় ঘেরা বাগানটি দারুণ সুন্দর। এখান থেকে আসুন আর এক বিখ্যাত মুঘল উদ্যান নিশাত বাগ। নিশাত বাগ মানে আনন্দের বাগান। এখান থেকে বরফে ঢাকা পিরপাঞ্জাল পাহাড় এবং তার পাদদেশে ডাল লেকের দৃশ্য মনোমুগ্ধকর। তখত-ই-সলেমান পাহাড়ের মাথায় শঙ্করাচার্য মন্দির আর এক দ্রষ্টব্য। কথিত আছে, গুরু শঙ্করাচার্য এখানে কিছুদিন তপস্যামগ্ন ছিলেন। এই মন্দির ভক্তদের কাছে অতি পবিত্র বলে পরিচিত। এখান থেকে ডাল লেক ও তুষারাচ্ছাদিত পীরপাঞ্জাল পিকের চমৎকার ভিউ পাওয়া যায়।
কলকাতা থেকে কাশ্মীরের সরাসরি ফিলাইট নেই। প্লেনে কলকাতা থেকে দিল্লি পৌঁছে সেখান থেকে ফ্লাইটে শ্রীনগর বা জম্মু যাওয়া যায়। ট্রেনে হাওড়া থেকে হিমগিরি এক্সপ্রেস বা কলকাতা স্টেশন থেকে জম্মু-তাওয়াই এক্সপ্রেসে জম্মু আসতে পারেন। এখান থেকে গাড়ি নিয়ে শ্রীনগর যাওয়া যায়।
শ্রীনগরে থাকতে গেলে হাউসবোটে থাকার কোনও বিকল্প হয় না। অবস্থান আর মানের ভিত্তিতে দামের তারতম্য হয়, তবে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৬০০০ টাকারও ঘর রয়েছে হাউসবোটে।
ই-মেল:[email protected]
ই-মেল:[email protected]