দীর্ঘ সময়ের পরিকল্পনা, অবশেষে বিয়ে! এরপর হানিমুনের বিকল্প আর কি হতে পারে? কিন্তু কমিউনিটি সেন্টার খোঁজা, ফটোগ্রাফার ঠিক করা, টেইলরের সাথে ড্রেস বানানো নিয়ে ঝগড়া, বাড়ি ভর্তি অতিথি সামলানো – বিয়ের এতো ঝামেলা শেষ করে আবার হানিমুনের প্ল্যান নিয়ে বসতে ইচ্ছা করে?
আপনার হানিমুনের পরিকল্পনাকে একটু সহজ করতেই আজকের এই পোস্ট।
১. মরিশাস
মরিশাসের প্রশংসা করতে গিয়ে অনেকেই পৃথিবীর বুকে স্বর্গের ছোঁয়া কথাটি ব্যবহার করেন। স্বর্গ না দেখা মানুষের কাছে মরিশাসের মেঘশূন্য নীল আকাশ আর সমুদ্র মিলে যেন স্বর্গেরই প্রতিচ্ছবি। ম্যাসকারেন দ্বীপপুঞ্জের মাঝামাঝি একটা জায়গায় মরিশাস। মরিশাসের নামের সাথেই যেন জুড়ে দেয়া আছে স্বর্গীয় সুন্দর নীল সমুদ্র ও প্রাচীন সৈকত। মরিশাসের বিলাসবহুল হোটেল, শুভ্র বালির সৈকত, মৃদু আবহাওয়ায় যেকোনো সদ্য বিবাহিত যুগলের ভালবাসা হয়ে উঠবে প্রাণচঞ্চল। ঐতিহ্যগত দিক থেকে মরিশাসের বৈচিত্র্য আর বিবাহিত যুগলদের জন্য মজার মজার সব আয়োজন আপনাকে মন্ত্রমুগ্ধ করবে।
২. ফুকেট ও ক্রাবি
বড় বড় শপিং সেন্টার, চমৎকার সৈকত ও দ্রুত উন্নয়নশীল হওয়ার পরেও ঐতিহ্যকে আকরে ধরে রাখার জন্য থাইল্যান্ডের বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। সদ্য বিবাহিত যারা হানিমুনে প্রকৃতি উপভোগের পাশাপাশি আনন্দ বা পার্টি করতে চান তাদের জন্য থাইল্যান্ডে ফুকেট ও ক্রাবি হওয়া উচিত প্রথম পছন্দ। রাতের জাঁকজমকপূর্ণ বর্ণিল থাইল্যান্ড আপনার হানিমুনে যোগ করবে নতুন মাত্রার উচ্ছ্বাস।
ক্রাবির ম্যানগ্রোভ বনের মধ্য দিয়ে দু’জন মিলে কায়াকিংও করতে পারেন। চাইলে কাপল স্নোরকেলিং ও স্কুবা ডাইভিং করতে পারেন। এছাড়া ফুকেটের বাংলা রোডে রাতভর নাচানাচি তো রয়েছেই। জাঁকজমকপূর্ণ রাতের আয়োজনের জন্য এই এলাকার খ্যাতি রয়েছে।
৩. বালি
উষ্ণপ্রধান দেশগুলোর মধ্যে আরেকটি ভূস্বর্গ – বালি। ব্যস্ত জীবনের থেকে ছুটি নিয়ে হারিয়ে যেতে নব দম্পতির জন্য বালি হতে পারে চমৎকার একটি গন্তব্য। এখানে সবুজের সমারোহে ঘেরা গ্রাম্য রাস্তায় দু’জন মিলে সাইকেল চালাতে চালাতে সাজিয়ে নিতে পারেন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। বালির হানিমুন থেকে একাধারে আপনি পাবেন সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, আধ্যাত্মিকতা ও রোমাঞ্চের স্বাদ। সৈকতে বসে হাত ধরে অলস বিকেল কাটিয়ে দিতে পারেন। কিংবা কোন আধ্যাত্মিক গুরুর থেকে জেনে নিতে পারেন আপনাদের অনাগত মধুর ভবিষ্যৎ। এখানে ট্রেকিং করে বাতুর পর্বতের উপরে সূর্যাস্ত দেখতে পারেন। আগ্নেয়গিরির চুড়ায় উঠে করতে পারেন রোমান্টিক ব্রেকফাস্ট।
৪. লুসার্ন এবং প্যারিস
বলিউড সিনেমা দেখে আমরা আর কিছু না হোক একটা ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পেরেছি যে, পৃথিবীর সবচেয়ে রোমান্টিক শহর দুটির নাম ফ্রান্সের প্যারিস ও সুইজারল্যান্ডের লুসার্ন। শাশ্বত প্রেমের শহর প্যারিস আপনার হানিমুনকে ভরিয়ে তুলবে যাদুময় ক্লাসিক রোম্যান্সে। সুইজারল্যান্ডের পৃথিবী বিখ্যাত পনির, চকলেট ও ওয়াইনের স্বাদ আপনার হানিমুনকে করে তুলবে আরও ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য। ঘরের দেয়ালে প্যারিস বা লুসার্নের হানিমুনের ছবি আপনার সারাজীবনের আনন্দের স্মৃতি হয়ে দ্যুতি ছড়াবে।
৫. মালদ্বীপ
মালদ্বীপ এমন একটা জায়গা যেখানে সদ্য বিবাহিত আপনি ও আপনার সঙ্গী জাগতিক সবকিছু ভুলে একে অপরের মাঝে হারিয়ে যেতে পারেন। একবার কল্পনা করার চেষ্টা করুন। আকাশ ও সমুদ্রের নীলে একাকার হয়ে যাওয়া ভারত মহাসাগরের কোন এক নির্জন কোনায় ভাসতে থাকা ছোট্ট কুঁড়েঘর। সেখানে শুধু আপনারা দুজন! এর চেয়ে বেশি কল্পনাময় হানিমুনের চিত্র হয়তো আপনি ভাবতেও পারবেন না। সমুদ্র তলে ভালবাসার মানুষকে নিয়ে ডাইভ করা ও কোরাল রিফ দেখা কিংবা এদের উপরে সার্ফিং করার মত আকর্ষণীয় আর কি হতে পারে? মালদ্বীপের সবচেয়ে ভাল দিকটা হল ব্যয়বহুল হওয়ায় এখানে কখনই মানুষের ভিড় জমে না। বছরের সবসময় শান্তিময় থাকে মালদ্বীপ। মনে হবে যেন সৈকতটা আপনার একান্ত নিজের। এমন নির্জনতাই হয়তো হানিমুনের জন্য আপনি খুঁজছে