নীল ছবির অভিনেত্রী স্টর্মি ড্যানিয়েলস। তাকে ‘হাশ মানি’ দেওয়ার অভিযোগে শাস্তি পেতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্টর্মির অভিযোগ, মুখ বন্ধ করার জন্য তাকে ঘুষ হিসেবে টাকা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু প্রশ্ন হল, কে এই স্টর্মি ড্যানিয়েলস, যার জন্য সাজার মুখে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নীল ছবির অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিত স্টর্মি ড্যানিয়েলসের আসল নাম স্টেফানি ক্লিফোর্ড। ১৯৭৯ সালে আমেরিকার লুজিয়ানায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। লুজিয়ানার ব্যাটন রুজের একটি গরিব এলাকায় বড় হন তিনি। জানা যায়, ছোটবেলায় তিনি ঘোড়ায় চড়তে ও লেখালেখি করতে পছন্দ করতেন। ছোটবেলা থেকেই সাংবাদিক হতে চেয়েছিলেন স্টর্মি।
সে স্বপ্ন থেকে বহু দূরে সরে গিয়ে ২০০৪ সালে পর্ন ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে জড়িয়ে পড়েন স্টেফানি। সেখানেই তার নাম হয় স্টর্মি ড্যানিয়েলস।
তিনি নিজেই জানিয়েছেন, হুইস্কির নামকরা ব্র্যান্ড জ্যাক ড্যানিয়েলস থেকেই নিজের নামের অংশ বেছে নেন তিনি।
নিজের আত্মজীবনীতে স্টর্মি জানিয়েছেন, এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার আগে মাত্র ১৭ বছর বয়সেই প্রথম স্ট্রিপিংয়ের (নগ্ন হওয়া) অভিজ্ঞতা হয়েছিল তার। পরে তিনি অন্যান্য কাজ শুরু করেন। নীল ছবির পাশাপাশি বেশ কয়েকটি মূলধারার চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন স্টর্মি। জিতেছেন অসংখ্য পুরস্কারও।
২০১০ সালে তিনি লুসিয়ানার রিপাবলিকান সিনেট মনোনয়নের জন্য প্রতিযোগিতা করে রাজনীতিতেও নাম লেখিয়েছিলেন। এর পরে ২০১১ সালে নিজের আত্মজীবনী ‘ফুল ডিসক্লোজার’ লিখেছিলেন তিনি। এই নিয়েই মার্কিন সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘ইন টাচ’-এ একটি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি প্রথম দাবি করেন, ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল তার।
স্টর্মির এই সাক্ষাৎকার নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় পুরো আমেরিকা তথা বিশ্বে। সংবাদমাধ্যমের সামনে ড্যানিয়েলস দাবি করেন, ২০০৬ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্কের শুরু হয়েছিল। সেই বছর জুলাই মাসে একটি গলফ টুর্নামেন্টে ট্রাম্পের সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়। এর পরে ক্যালিফোর্নিয়া ও নেভাডার রিসোর্ট এলাকার হোটেলে তারা শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন বলেও দাবি করেন তিনি।
পাশাপাশি স্টর্মির দাবি, এই সম্পর্কের কথা যেন কেউ জানতে না পারে, সে জন্য তাকে প্রবল চাপ দেন ট্রাম্প। অভিযোগ, ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মুখ বন্ধ রাখার জন্য তাকে ১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার ঘুষও দিয়েছিলেন ট্রাম্পের আইনজীবী।
ড্যানিয়েলসের দাবি, ট্রাম্প তাকে তার স্যুটে ডিনারে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, যেখানে তিনি তার পায়জামা পরে তাকে স্বাগত জানান।
যদিও বিষয়টি ট্রাম্প অস্বীকার করেছেন। তার দাবি তাদের কখনও শারীরিক সম্পর্ক ছিল না।
কিন্তু সিবিএসের কাছে স্টর্মি বলেন, ‘আমি শিকার নই, তিনি স্পষ্টভাবে বলেছিলেন এবং লেক তাহোতে সেই রাতে তার প্রতি আকৃষ্ট না হলেও, তাদের সম্পর্ক সম্মত ছিল।’