হানিমুনে বা মধুচন্দ্রিমায় যাওয়া হয় বিয়ের পর। বিয়ে হচ্ছে পাত্র আর পাত্রীর মধ্যকার একটা চুক্তি। এই চুক্তির মাধ্যমে শুরু হয় দাম্পত্য জীবনের। জীবনের এই নতুন যাত্রা যেন সহজে ও সুন্দরভাবে কাটে এজন্যে তাদের কিছু ব্যক্তিগত সময় কাটানোর প্রয়োজন। হানিমুন এজন্যে দিন দিন এত গুরুত্ব পাচ্ছে। এর মাধ্যমে নব-দম্পতি একে অপরকে আরও ভালভাবে বুঝতে পারে। হানিমুনে যাওয়ার সময় ৩ টি বিষয় বিবেচনা করতে হবে, সেগুলো হল- আরামদায়ক থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও মনরম-সুন্দর পরিবেশ। আপনার সুবিধার্থে এই ৩ টি বিষয় বিবেচনা করে হানিমুনর জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি গন্তব্যস্থল উল্লেখ করা হল
১। নীলগিরি হিল রিসোর্ট:
নীলগিরি হিল রিসোর্টটি বাংলাদেশের বান্দরবন জেলায় নীলগিরি পাহাড়ের পাশে অবস্থিত। এই রিসোর্টটি পর্যটক ও নব-দম্পতির মধ্যে এতটাই জনপ্রিয় যে যাওয়ার কমপক্ষে ২-৩ মাস আগে বুকিং দিয়ে রাখতে হয়। ঢাকা থেকে বান্দরবন যাওয়ার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হল বাস অথবা নিজেদের গাড়ি। এসি- নন এসি সবধরনের বাসের টিকেট সহজেই পাওয়া যায়। এতে কমপক্ষে খরচ হবে ৫৫০-৭৫০ টাকা প্রতিজন এবং পৌঁছাতে সময় লাগবে ৮ – ১০ ঘণ্টা। এই রিসোর্টটি বান্দরবন শহর থেকে আরও ৪৭ কি.মি দুরে। বান্দরবন শহরে পৌঁছানোর পর এলাকার চাঁদের গাড়ি অথবা জীপে করে নিলগিরি যেতে হবে এবং এতে খরচ পড়বে ১৫০০ – ২০০০ টাকা প্রতি গাড়ি। রিসোর্টটি এতটাই সুন্দর যে পৌঁছাতে যে কষ্টটা ঐখানের পরিবেশ দেখে সব ভুলে যাবেন। এখানের থাকার খরচ পড়বে আনুমানিক ৫০০০ থেকে ১০০০০ টাকা দিনপ্রতি । এটি বাংলাদেশ আর্মি দ্বারা পরিচালিত।
২। সাজেক ভ্যালী :
সাজেক ভ্যালী বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার বাগাইছরি উপজেলায় অবস্থিত। সাজেক রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও এর যাতায়াত সুবিধা খাগড়াছড়ি থেকে। যদি বাসে যান তাহলে প্রতিজনে খরচ পরবে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা। সাজেকে একটা ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা হচ্ছে এখানে ২৪ ঘণ্টায় প্রকৃতির তিনটা রূপই দেখা মিলে। কখনো খুবই গরম , একটু পরেই হটাৎ বৃষ্টি এবং তার কিছু পরেই হয়তো চারদিকে ঢেকে যায় মেঘের চাদরে ; মনে হয় যেন একটা মেঘের উপত্যকা। সাজেকের রুইলুই পাড়া থেকে ট্রেকিং করে কংলাক পাহাড়-এ যাওয়া যায়। কংলাক হচ্ছে সাজেকের সর্বোচ্চ চূড়া। কংলাকে যাওয়ার পথে মিজোরাম সীমান্তের বড় বড় পাহাড় , আদিবাসীদের জীবনযাপন , চারদিকে মেঘের আনাগোনা পর্যটকদের দৃষ্টি কেড়ে নেয়।বছরের নির্দিষ্ট সময়ে অনুষ্ঠিত আদিবাসীদের উৎসবের সময় তাদের সংস্কৃতির নানা উপকরণ পর্যটকরা উপভোগ করতে পারেন। এখানে বিভিন্ন পরিসরের রুমের ব্যবস্থা আছে। ৬০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৫০০০ টাকা পর্যন্ত রুম পাওয়া যায়।
৩। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত :
কক্সবাজার বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি পর্যটন শহর। এটি চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত। কক্সবাজার তার নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক বালুময় সমুদ্র সৈকত যা কক্সবাজার শহর থেকে বদরমোকাম পর্যন্ত একটানা ১৫৫ কিলোমিটার (৯৬ মাইল) পর্যন্ত বিস্তৃত। সময়ের সাথে সাথে এই সমুদ্রসৈকতকে ঘিরে গড়ে উঠেছে অনেক হোটেল ও রিসোর্ট। সবচেয়ে জনপ্রিয় রিসোর্ট হচ্ছে মারমেইদ সী-বীচ রিসোর্ট (Mermaid Sea-beach Resort)। নব-দম্পতির জন্য এই রিসোর্টটি খুবই ভাল। এখানে তারা সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি ব্যক্তিগত সময় পার করতে পারবে। এখানে থাকা খাওয়ার খরচ ১৫০০০ থেকে ৪০০০০ টাকার মধ্যে।