বঙ্গোপসাগরের কোলে উত্তর ও পশ্চিমে মেঘনার শাখা নদী, আর দক্ষিণ এবং পূর্বে সৈকত ও সমুদ্র বালুচরবেষ্টিত ছোট্ট সবুজ ভূখণ্ড নিঝুম দ্বীপ.। অগণিত শ্বাসমূলে ভরা কেওড়া বাগানের এক সবুজ এই দ্বীপকে। দিনে দুবার জোয়ার-ভাটার এই দ্বীপের এক পাশ ঢেকে আছে সাদা বালুতে, আর অন্য পাশে সৈকত। এখানে শীতকালে বসে হাজার পাখির মেলা, বন্য কুকুর আর সাপের অভয়ারণ্য এই বনের সবুজ ঘাস চিরে সারা দিন দৌড়ে বেড়ায় চিত্রা হরিণের দল।
এই হলো নিঝুম দ্বীপ।নিঝুম দ্বীপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো মাইলের পর মাইল জুড়ে কেওড়া বন আর সেই বনের পাতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা চিত্রা হরিণ।এখানে সমুদ্রের বুকে হেলে পড়ে অস্তগামী সূর্য, হাজার পাখির কলতান নিস্তব্দতার ঘুম ভাঙ্গায়, মায়াবী হরিনের পদচারনায় মুখরিত হয় জনপদ, সারি সারি কেওড়া গাছের কোল ঘেষে বয়ে চলে নদী, চুপিসারে কাছে ডাকে, মায়াবী ইন্দ্রজানে বেধে ফেলে মনুষ্যপ্রজাতীকে। সমুদ্রকোল হতে সরু খাল সবুজের বুক চিরে চলে গেছে গহীন বনে। সে যে সবুজ আর নোনা জলের কি এক প্রেমকাব্য না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। যেন সবুজ গালিচা বিছিয়ে দেয়া হয়েছে সমুদ্রের তলানী পর্যন্ত। স্বচ্ছ পানির নিচে সবুজ ঘাষ আর মাছেরা খেলা করে আপন খেয়ালে। দেখলেই মন চাইবে ঝাপিয়ে পড়ে পরাণ জুড়াই। এ এমনই এক মায়াবী প্রকৃতি যা শহুরে কর্মচঞ্চল মানুষক নতুন এক জীবন দেয়। নিঝুম দ্বীপ- সত্যিই নিঝুম। একবারই অলাদা। সব কিছুর বাহিরে। এখানে নেই পর্যটনের চাকচিক্য, রং বেরং এর বাতির ঝলক কিংবা যান্ত্রিক কোন বাহনের বিকট শব্দ। নিঝুম- সত্যিই নিঝুম, নিশ্চুপ। এ যেন প্রকৃতির একটি আলাদা সত্ত্বা। যা আর কোথাও নেই।
বঙ্গোপসাগরের কোলে সম্প্রতি আরো একটি অনিন্দসুন্দর সমুদ্র সৈকত জেগে উঠেছে। সৈকতটি একেবারে আনকোরা, কুমারী। স্থানীয়ভাবে যাকে এখন ডাকা হচ্ছে ‘ভার্জিন সি বিচ’ বলে।হাতিয়া উপজেলার বঙ্গোপসারের কোল ঘেঁষা নিঝুম দ্বীপ সংলগ্ন দমার চরের দক্ষিণপ্রান্তে অবস্থিত। নিঝুম দ্বীপের লোকজন এবং মাছ ধরতে যাওয়া লোকেরা এই নয়নাভিরাম সৈকতকে বলে ‘দেইলা’ বা বালুর স্তুপ। তাদেরকে আজ পর্যন্ত কেউ বলেনি যে আসলে এটা একটা সমুদ্র সৈকত। যা কিনা কক্সবাজরের সমুদ্র সৈকতের চেয়েও অনেক বেশী সুন্দর এবং আকর্ষনীয়। যা এখনো অনেক ট্যুরিস্ট এর কাছেই অজানা।
১. ঢাকা /চট্রগ্রাম থেকে কিভাবে যাওয়া যায়?
২. লঞ্চে গেলে কিভাবে/বাসে গেলে কিভাবে? লঞ্চ ছাড়ার ডিটেইল সময়সূচি
৩. যাতায়াত ভাড়া কেমন পরবে?
৪. কোন ঋতুতে গেলে কি কি সুবিধা/অসুবিধা?
৫. রাতে থাকার ব্যবস্থা কোথায়,কিভাবে, খরচ?
৬. খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা আর খরচ?
৭. দর্শনীয় স্থান গুলোর লিস্ট
৮. ক্যাম্পিং এর সুবিধা আছে কি নাই?
৯. কি কি জিনিস সাথে নেয়া প্রয়োজন?
১০. টিপস …।
এ ছাড়া আর যা যা প্রয়োজনীয় ইনফো আপনার কাছে আছে প্লিজ কমেন্ট করুন। সেই অনুযায়ী ব্লগ টা আপডেট করা হবে।
*** এর বাইরে কোন প্রশ্ন থাকলে শেয়ার করুন। সবার তাতে উপকার হবে। ধন্যবাদ।
ঢাকা থেকে নিঝুমদীপে ২ ভাবে যাওয়া যায় – * সদরঘাট থেকে লঞ্চে করে এবং * বাসে নোয়াখালী হয়ে।
বাসে করে গেলে প্রথমে একুশে অথবা ইকোনো পরিবহনের বাসে যেতে হবে নোয়াখালীর সোনাপুরে, প্রতিদিন মোটামুটি সকাল দুপুর ও সন্ধ্যায় সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে নোয়াখালীর সোনাপুর এর দিকে বাস ছেড়ে যায়, আবার ধানমন্ডি জিগাতলা কাউন্টার থেকে ফকিরাপুল হয়ে একুশে পরিবহনের বাস ছাড়ে রাত ১০.২০ মিনিট।
আপনি ট্রেনে যেতে পারেন নোয়াখালীর মাইজদি পর্যন্ত। ঢাকা কমলাপুর থেকে বৃহস্পতি বার বাদে, প্রতিদিন বিকাল ৪.২০ মিনিট এ ৭১২ নং আন্তঃনগর উপকুল এক্সপ্রেস নোয়াখালী এর দিকে ছেড়ে যায়, মাইজদি পৌঁছে রাত ১০.২২ মিনিট। ভাড়া – স্নিগ্ধা – ৫০৩ টাকা, প্রথম চেয়ার – ৩৫৫ টাকা, শোভন চেয়ার – ২৭০ টাকা, শোভন – ২৩০ টাকা।
নোয়াখালীর সোনাপুর / মাইজদি থেকে লোকাল বাস বা সিএনজিতে করে, সি এন জি সারাদিন চলে ভাড়া জনপ্রতি ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা, নামতে হবে বয়ার চর – চেয়ারম্যান ঘাটে।
চেয়ারম্যান ঘাট থেকে সি-ট্রাক, ট্রলার ও স্পীড বোট ছাড়ে হাতিয়ার উদ্দেশ্যে, সি-ট্রাক ছাড়ে প্রতিদিন সকাল ৮ টায় নম্বর-০১৭৫৬৮৪৬১০৬ এখন যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে বন্ধ আছে ভাড়া জনপ্রতি – ৮০ টাকা, ট্রলার – ১২০ – ১৫০ টাকা ভাড়া প্রতিজন ও স্পীড বোট জনপ্রতি ভাড়া – ৪০০-৫০০ টাকা। যাত্রীদেরকে নামাবে হাতিয়ার নলচিরা ঘাটে, নলচিরা থেকে বেবিটেক্সিতে (৬০০-৭০০) করে যেতে হবে মোক্তারিয়া ঘাটে, সরাসরি নলচিরা ঘাট থেকে মোটর সাইকেল রিজার্ভ করে মোক্তারিয়া ঘাট এ যাওয়া যায় ভাড়া দুই জন ৩৫০ – ৪৫০ টাকা, দর দাম করে নিবেন। সেখান থেকে ট্রলারে ১৫ মিনিট লাগবে নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাটে ভাড়া জনপ্রতি – ১০ টাকা। এরপর আপনি যদি নামার বাজার থাকেন তবে ভ্যান/রিক্সা/মোটর সাইকেল এ যেতে হবে। ভাড়া ৮০-১০০ টাকা মটরসাইকেল দুইজন। বন্দর টিলায় ও থাকতে পারেন আপনি তবে নামার বাজার থাকা বেস্ট। নলচিরা থেকে নোয়াখালী চেয়ারম্যান ঘাট যাওয়ার ফিরতি সী ট্রাক ছাড়ে সকাল ১১ টায়।
লঞ্চে গেলে ঢাকার সদরঘাট থেকে যেতে হবে – ঢাকা থেকে হাতিয়ায় যাওয়ার জন্য প্রতিদিন ১ টা লঞ্চ বরাদ্দ রয়েছে – দুইটা লঞ্চ রোটেশন পদ্ধতিতে ডেইলি ১ টা করে ছেড়ে যায়, প্রতিদিন বিকাল ৫.৩০ মিনিট, লঞ্চ ১ মিনিট ও লেট করে না, বি কেয়ার ফুল। আমি একবার মিস করেছিলাম।
একটার নাম “এম.ভি ফারহান – ৩” অন্যটা “এম.ভি ফারহান – ৪” ফারহান – ৪ । দুইটাই লাক্সারিয়াস লঞ্চ ।একদম New লঞ্চ। এদের মধ্যে প্রতিদিন ১টা করে লঞ্চ হাতিয়ার উদ্দেশ্যে সদরঘাট থেকে বিকেল সাড়ে ৫ টায় ছেড়ে যায়। সেটি কালিগঞ্জ – বিশ্বরোড – দৌলত খাঁ – মির্জাপুর – শরাশগঞ্জ – ভোলা তজুমুদ্দিন – মনপুরা হয়ে হাতিয়ার তমুরদ্দী ঘাটে পৌঁছবে পরদিন সকাল ৮-৯ টায়। (ঢাকায় ফেরত যাবার লঞ্চ ছাড়ে দুপুর ১২ টায়)
এম.ভি ফারহান ৩- ০১৭৮৫৬৩০৩৬৬।
এম.ভি ফারহান ৪- ০১৭৮৫৬৩০৩৬৮, ০১৭৮৫৬৩০৩৬৯, ০১৭৮৫৬৩০৩৭০।
দুইটা একি মালিকের লঞ্চ। যে কোন নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।
লঞ্চে গেলে ভাড়া পড়বে- ডেকে ৩৫০ টাকা, ২৫০ টাকা দিয়াও যাওয়া যায়। কেবিন সিঙ্গেল- ১২০০ টাকা, ডাবল-২২০০ টাকা, ভিআইপি – ভাড়া জানি না —- হাতিয়া এর তমুরদ্দী ঘাট পর্যন্ত।
এরপর নিঝুমদীপের জন্য আবার মানিব্যাগে হাত দিতে হবে।
তমুরদ্দী ঘাট থেকে বেবি টেক্সিতে (৫০০-৬০০ টাকা) সরাসরি মোক্তারিয়া ঘাট এ যাওয়া যায় অথবা সরাসরি মোটর সাইকেল রিজার্ভ করে মোক্তারিয়া ঘাট এ যাওয়া যায় ভাড়া দুই জন ৩০০ – ৩৫০ টাকা, দর দাম করে নিবেন। সেখান থেকে ট্রলারে ১০ মিনিট লাগবে নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাটে ভাড়া জনপ্রতি – ১০ টাকা। এরপর আপনি যদি নামার বাজার থাকেন তবে ভ্যান/রিক্সা/মোটর সাইকেল এ যেতে হবে। ভাড়া ৮০-১০০ টাকা মটরসাইকেল দুইজন।। বন্দর টিলায় ও থাকতে পারেন আপনি তবে নামার বাজার থাকা বেস্ট। প্রতিদিন সকাল ১০ টায় তমুরদ্দি থেকে ফিশিং ট্রলার সরাসরি নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার যায় কপাল ভালো থাকলে এবং এডভেঞ্চার প্রিয় হলে যেতে পারেন মেঘনা নদীর বুক চিরে ট্রলার এ নিঝুম দ্বীপে ভাড়া যার কাছে যেমন রাখে ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া আপনি ট্রলার রিজার্ভ করতে পারেন নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার ভাড়া ট্রলার সাইজ অনুযায়ী ৩৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা।
চট্রগাম থেকে হাতিয়া আসতে হলে, চট্টগ্রাম থেকে হাতিয়াগামী জাহাজ এম ভি বার আওলিয়া অথবা এম ভি আব্দুল মতিন এ উঠে হাতিয়ার নলচিরা ঘাট এ নামতে হবে। আরেকটা নতুন শীপ নাকি দিয়েছে Recent, টাইম টেবিল জানি না।
শুক্র ও রবিবার বাদে প্রতিদিন সকাল ৮.৩০ এ চট্টগ্রাম সদরঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে যায় হাতিয়ার উদ্দেশ্যে। সন্দীপ হয়ে হাতিয়া পৌছে বিকাল ৫ টায়।
এ ভ্রমণে একই সাথে বঙ্গোপসাগর ভ্রমণ এবং সন্দীপ ও হাতিয়া দেখা হয়ে যাবে। আবহাওয়া খারাপ থাকলে কিছুটা রোলিং হয় কিন্তু এ ভ্রমণটা ১০০% নিরাপদ।
সময়সূচী : প্রতিদিন সকাল ৯ টা (শুক্র ও রবিবার বাদে)
স্থান : চট্টগ্রাম সদরঘাট
ভাড়া : প্রথম শ্রেনী/ দ্বিতীয় শ্রেনী/ চেয়ার ক্লাশ
সন্দীপ : ১২০০/- ৬২০/- ২৩০/-
হাতিয়া : ২২১৫/- ১১১০/- ৩৫০/-
আরো কোন তথ্য জানতে BIWTC ফোন দিতে পারেন : ০৩১-৬৩৬৮৭৩
অক্টোবর থেকে এপ্রিল ১৫ তারিখ এখনকার আবহাওয়া অনুযায়ী নিঝুম দ্বীপ ভ্রমনের জন্য বেস্ট। অন্য সময় বর্ষা থাকে ও ঝড়ের কারনে মেঘনা নদী ও সাগর উত্তাল থাকে।
বর্ষাকালে গেলে পুরা হাটু সমান কাদা পাবেন + পুরা দ্বীপের এমাথা ও মাথা আপনাকে হেঁটে পার হতে হবে, রাস্তায় কিছু চলতে পারবেনা, কাদাতে দেবে যাবে। তবে মাছ খেতে পারবেন প্রচুর, ইলিশ তো হাতের এপিঠ ও পিঠ…শীত কালে গেলে রাস্তাঘাট সব ভালো পাবেন, খালের মধ্যে পানি কম পাবেন, ফলে বনের মধ্যে যেকোনো জায়গায় যেতে পারবেন, বিকেলে হরিণের পাল দেখতে পারবেন, সি-বিচ টা অনেক শুকনো পাবেন, সাগর বলতে মেঘনা নুদী নীল পাবেন — সমস্যা একটাই তখন খাবারের দাম অনেক বেড়ে যাবে। শরতকাল আর বসন্তকাল বেস্ট…
থাকার ব্যবস্থাঃ
নিঝুম দ্বীপে নামার সাথে সাথে মোটর সাইকেল ওয়ালা রা আপনাকে ঘিরে ধরবে, তাদের নিয়ে যাওয়া কোন হোটেল এ যাবেন না।
১. নিঝুম রিসোর্ট (অবকাশ হোটেল) নামার বাজারঃ এটা অবকাশ পর্যটন লিমিটেড এর একটা রিসোর্ট। নামার বাজার সী বীচ এর কাছে অবস্থিত। নিঝুম রিসোর্ট নামে নিঝুম দ্বীপে থাকার জন্য একটি ভালো মানের রিসোর্ট। এর ম্যানেজার সবুজ ভাই অত্যান্ত ভালো মানুষ। খুব ই হেল্প ফুল এন্ড ফ্রেন্ডলি। আমি সব সময় সাজেস্ট করি এখানে থাকার জন্য।
এখানে ২ বেড এর VIP রুম ভাড়া ২০০০ টাকা, ২ বেড এর Executive রুম ভাড়া ১৫০০ টাকা, ৩ বেড এর Executive রুম ভাড়া ১৮০০ টাকা, ৪ বেড এর Executive রুম ভাড়া ২০০০ টাকা, ৫ বেড এর ফ্যামিলি রুম ভাড়া ৩০০০ টাকা এবং ৫ বেড এর ডরমেটরি রুম ভাড়া ১৮০০ টাকা ও ১২ বেড এর ডরমেটরি রুম ভাড়া ৩০০০ টাকা।
* সব গুলো রুম এ এটাচ বাথ রুম আছে।
* ডরমেটরি রুমে এক্সট্রা প্রতি জন থাকলে ২০০ টাকা করে দিতে হবে।
* দুপুর ১২ টার আগে চেক আউট করতে হবে।
* অফ সিজনে রুম ভাড়ায় ৫০% ডিসকাউন্ট পাওয়া যায় ( এপ্রিল ১৫- সেপ্টেম্বর ৩০ )। আমার কথা বললে ৬০-৭০% পাবেন।
* জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ পাবেন সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১০.৩০ পর্যন্ত। এছাড়া সারা রাত লাইট ইউজ করতে পারবেন সোলার প্যানেল থেকে। এছাড়া সারাদিন ১-২ ঘন্টা পর পর ৩০ মিনিট এর জন্য বিদ্যুৎ পাবেন।
যোগাযোগঃ ঢাকা অফিসঃ অবকাশ পর্যটন লি., আলহাজ সামসুদ্দিন ম্যানসন (নবম তলা), ১৭ নিউ ইস্কাটন রোড, ঢাকা। ফোন : ৮৩৫৮৪৮৫, ৯৩৪২৩৫১, ৯৩৫৯২৩০, ০১৫৫২৩৭২২৬৯।
নিঝুম দ্বীপ অফিসঃ সবুজ ভাইঃ ০১৭২৪-১৪৫৮৬৪, ০১৮৪৫৫৫৮৮৯৯ , ০১৭৩৮২৩০৬৫৫
২. হোটেল শাহিন, নামার বাজার। হোটেল টা নতুন। কিন্তু এর মালিক কর্মচারী গুলা সাক্ষাত ডাকাত ১০০০ টাকার রুম ২৫০০ টাকা চাইবে। যাই হোক ফোন নম্বরঃ ০১৮৬৩১৫০৮৮১
৩. মসজিদ বোর্ডিং, নামার বাজার। এটা সবচেয়ে সস্তায় থাকার ব্যবস্থা। স্থানীয় মসজিদ থেকে এই ব্যবস্থা করেছে, এক্সট্রা দুটা সিঙ্গেল এবং দুটা ডবল রুম আছে, আর সব ডরমেটরি । ডরমেটরি – ভাড়া ২০০ – ৩০০ টাকা।
এই বোর্ডিং-এ কোনো এটাচ্ট বাথরুম এবং জেনারটরের ব্যবস্থা নাই। এখানে ২টি কমন বাথরুম এবং একটি টিউবওয়েল আছে।
এই বোর্ডিং-এ থাকার জন্য বুকিং করতে যোগাযোগ করুন: মোঃ আব্দুল হামিদ জসিম, কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ, নামার বাজার, হাতিয়া, নোয়াখালী। ফোনঃ ০১৭২৭-৯৫৮৮৭৯
৪. নিঝুম ড্রিম ল্যান্ড রিসোর্ট, বন্দরটিলা। এইটা নতুন উদ্বোধন হয়েছে এই বছরেই। পরিবেশ টা ভালোই।
যোগাযোগঃ
ঢাকা বুকিং অফিসঃ০১৮৪৭১২৩৫৭৩
নিঝুমদ্বীপ বুকিং অফিসঃ০১৮৪৭১২৩৫৭২
৫. হোটেল দ্বীপ সম্পদ, (সৈয়দ চাচার থাকা ও খাওয়ার হোটেল) নামার বাজার। ফোনঃ ০১৭২০ ৬০১ ০২৬, ০১৭৬০ ০০৮১০৬।
৬. হোটেল শেরাটন, বন্দরটিলা বাজার ।
৭. জেলা প্রশাসন ডাক বাংলো।
খাবার দাবারঃ
খাবার দাবার বেশি একটা ভালো পাবেন না, সামুদ্রিক মাছ, মাংস, মোটা চালের ভাত, রুটি সব ই পাবেন, তবে প্রি – অর্ডার করে রাখা ভালো। খবার খাবেন আমার সাজেস্ট মতে আলতাফ চাচার হোটেল আশিক সেকেন্ড অপশন হোটেল দ্বীপ সম্পদ, (সৈয়দ চাচার খাওয়ার হোটেল), নামার বাজার। সামুদ্রিক মাছ এবং চিংড়ী খাবেন ভালো লাগবে। রাতের বেলা নিঝুম রিসোর্ট এর ম্যানেজার সবুজ ভাইকে মুরগী/কোরাল মাছ অথবা ইলিশ মাছ কিনে দিন আর মশলা, লাকড়ি এর জন্য কিছু টাকা খরচ দিয়ে দিন, উনি বার বি কিউ এর ব্যাবস্থা করবে, সব ইন্সট্রুমেন্ট নিঝুম দ্বীপ এ একমাত্র উনার কাছেই আছে, উনি এক্সপারট ও বটে। ডাব খাবেন গাছ থেকে পেড়ে, ২০-২৫ টাকা। নিজে পেড়ে খেলে ২০ টাকা
দর্শনীয় যায়গাঃ
১. কমলার দ্বীপ। সেখানের কমলার খালে অনেক ইলিশ মাছ পাওয়া যায় এছাড়াও আশে পাশের দ্বীপগুলো সুন্দর পুরো দ্বীপটা হেঁটে হেঁটে ঘুরে আশা যায়, মন ভরে যাবে…!!
২. চৌধুরী খাল ও কবিরাজের চর । যেতে হবে বিকেল এ সন্ধ্যার আগে, চৌধুরীর খাল নেমে ঘন্টা খানেক হাঁটলেই বনের মধ্যে হরিন এর পালের দেখা পেতে পারেন। একটা ট্রলার রিজার্ভ নিন ১০-১৫ জনের গ্রুপ এর জন্য ১০০০-১২০০ টাকা ওরাই হরিন দেখিয়ে আনবে, সন্ধ্যার সময় কবিরাজের চর এ নেমে সূর্যাস্ত ও হাজার হাজার মহিষের পাল দেখতে ভুলবেন না।
৩. চোয়াখালি ও চোয়াখালি সী-বিচ । চোয়াখালি তে গেলে খুব সকালে হরিন দেখা যায় । মটর সাইকেল ওয়ালাকে বলে রাখুন খুব সকালে আপনাকে হোটেল থেকে নিয়ে হরিন দেখিয়ে আনবে । আমাদের মত লাক ভালো থাকলে সকাল ৫ টায় ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করতে করতে নিঝুম রিসোর্ট এর বারান্দা থেকেও হরিন দেখতে পারবেন ২/৪ পিস
৪. ম্যানগ্রোভ বন । নিঝুম দ্বীপ বনায়ন প্রকল্প । নিঝুম দিপে ছোট ছোট পোলাপাইন রা গাইড এর কাজ করে, এদের সাথে নিয়ে সকাল বেলায় বনের ভেতর ঢুকে পড়ুন। হরিন দেখতে পারবেন।
৫. নামার বাজার সী-বিচ। নামার বাজার থেকে হেঁটে যেতে ১০ মিনিট লাগে। এখান থেকে সূর্য উদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে পাবেন, এখানে বারবিকিউ করে মজা পাবেন।
৬. দমার চর । এই চরের দক্ষিন দিকে নতুন একটা সী বিচ আছে যাকে বলে “ভার্জিন আইসল্যান্ড” । এখানে অনেক নাম না জানা পাখির দেখা পাবেন খুব সকালে যদি যান। অনেক টুরিস্ট দের কাছে এখনও অজানা এই জায়গাটা। ট্রলার ভাড়া ৩০০০-৩৫০০ টাকা।
ট্রলার এর মাঝির নম্বরঃ জাকির – ০১৭৮৭ ৬০৫ ৪৪৪ (ভালো মানুষ তবে ভাড়া একটু বেশি চায়, নিঝুম রিসোর্ট এর ম্যানেজার সবুজ ভাইয়ের হেল্প নিয়ে ভাড়া ঠিক করে ফেলুন)।
** আপনি যদি হাতে সময় নিয়ে যান তবে ট্রলার রিজার্ভ নিয়ে ভোলার ঢালচর, চর কুকরি – মুকরি থেকে ঘুড়ে আসতে পারেন।
বিঃ দ্রঃ নিঝুম দ্বীপে এখন আর আগের মত হরিন দেখা যায় না। মানুষ হরিন গুলো খেয়ে ফেলেছে নাকি বন্য কুকুর হরিন গুলো খেয়ে ফেলেছে সেটা আমার সঠিক জানা নাই।
ক্যাম্পিং এর সুবিধা ভরপুর পুরা দ্বীপে যেখানে মন চায় সেখানেই তাঁবু টাঙ্গানো যাবে, জন্তু জানোয়ারের কোনো ভয় নাই, শুধু বুনো মহিষ থেকে সাবধান। সবচাইতে ভালো যায়গা হলো নামার বাজারে নিঝুম রিসোর্ট এর পাশের খাল পার হয়ে সাগর পাড়ের বিশাল (৫/৬ মাইল) খোলা মাঠটা…
তেমন কিছুই নেয়া লাগবে না, সব-ই পাওয়া যাবে, এরপরও যদি কিছু লাগে তাহলে জাহাজমারা বাজারে পাওয়া যাবে। নিঝুম দ্বীপে সব ই পাওয়া যায়।
টিপস : হরিণ খাইয়েন না, হরিণ বনের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ…
শুধুমাত্র রবি এবং গ্রামীনফোন এর নেটওয়ার্ক পাবেন।
আরও কিছু তথ্যঃ
সি-ট্রাক জোয়ার ভাটার উপরে নিরভর করে ছাড়ে, টাইম হলো সকাল ৮ টা এর পর ট্রলার ও স্পীড বোট, সোনাপুরে নেমে একটু কস্ট করে জেনে নিতে হবে যে আজকে সি-ট্রাক কখন ছাড়বে নম্বর-০১৭৫৬৮৪৬১০৬। এছাড়া ট্রলার প্রতি ২ ঘন্টা পর পর ছাড়ে, বিকাল ৫ টার পর আর কোনো ট্রলার যায় না। সি-ট্রাক এবং ট্রলারে করে গেলে নামতে হবে হাতিয়ার একেবারে উত্তর মাথায় – নলচিরা ঘাটে। ট্রলার রিজার্ভ করা যাবে, ভাড়া শিউর জানি না তবে পার পারসন প্রায় ১২০ – ১৪০ টাকার মত নিবে…ট্রলারে করে গেলে ২ ঘন্টার মতন লাগে আর সি-ট্রাকে গেলে ১ ঘন্টা ৫০ মিনিট। স্পীডবোট ৩০ মিনিট।