করোনাভাইরাসের কারণে জাপান ২০২০ সাল থেকে বিদেশি পর্যটকের আগমন পুরোপুরি বন্ধ রাখে। এখন সীমান্ত খুলে দিলেও পর্যটকদের কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। যেমন প্যাকেজ ট্যুরের আওতায় ভ্রমণ, চিকিৎসাবিমার আওতায় থাকা, জনসমাগমস্থলসহ সব উন্মুক্ত জায়গায় মাস্ক পরিধান ইত্যাদি। এ ছাড়া গা ঘেঁষে হাঁটাচলা ও মেলামেশা করা যাবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছে দেশটি। এদিকে জাপানের সীমান্ত খুলে দেওয়ার খবরে বিদেশি পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের ভ্রমণ আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান চ্যান ব্রাদার্স ট্রাভেল জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যে ৫০টির বেশি দলবদ্ধ পর্যটনের বুকিং পেয়েছে।
মালদ্বীপ: এ বছরের ১৪ মার্চ থেকেই মালদ্বীপে প্রবেশ করার সুযোগ পাচ্ছেন বিদেশি পর্যটকেরা। ঢোকার সময় কোনো নিয়মকানুন পালনের বাধ্যবাধকতা কিংবা কোভিডের পূর্ণ ডোজ টিকা নেওয়ারও কোনো শর্ত নেই। কিন্তু দেশটিতে প্রবেশের তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে কোভিড–১৯ পিসিআর টেস্ট করাতে হয়। টিকিট কেটে মালদ্বীপে গেলেও ৩০ দিনের ভিসা পাওয়া যায়।
নেপাল: পর্যটননির্ভর দেশ নেপাল গত ১০ মার্চ থেকে বিদেশি পর্যটকদের বরণ করছে। বিদেশি পর্যটকদের সাধারণত অন অ্যারাইভাল, অর্থাৎ নেপালে পৌঁছার পরও ভিসা দেওয়া হয়। কোভিডের সব টিকা নেওয়া থাকলে কিংবা কোভিড পিসিআর টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ হলেই দেশটিতে এখন প্রবেশ করা যায়।
ইন্দোনেশিয়া: পূর্ব এশীয় দেশ ইন্দোনেশিয়া অবশ্য ২০২০ সাল থেকেই ধীরে ধীরে বিদেশি পর্যটকদের ঢুকতে দেয়। তবে দেশটির অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র বালিতে যাওয়া নিষিদ্ধ রাখে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে আন্তর্জাতিক পর্যটকেরা বালি যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এখন দেশটির বিমান, স্থল ও নৌবন্দরে এসেও ভিসা পাওয়া যায়। তবে ছয় থেকে বেশি বয়সের পর্যটকদের সবাইকে সব টিকা নেওয়ার প্রমাণ দাখিল ও ইন্দোনেশিয়া ত্যাগের ৪৮ ঘণ্টা আগে কোভিড পিসিআর টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট দেখানোর নিয়ম পালন করতে হয়। এ ছাড়া কোভিড–১৯ চিকিৎসায় প্রযোজ্য আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিমার কাগজপত্রও দেখাতে হয়।
মালয়েশিয়া: গত ১ এপ্রিল থেকেই মালয়েশিয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে বিদেশি পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয়। ১২ বছরের কম বয়সী শিশু ও পূর্ণ ডোজ টিকা নেওয়া পর্যটকেরা গত ১ মে থেকে অনায়াসেই সেই দেশে প্রবেশ করতে পারছেন। আর যাঁরা আংশিক টিকা নিয়েছেন, যাঁদের বয়স ১৮ বছরের বেশি, তাঁদের ৪৮ ঘণ্টার আগে করা কোভিড–১৯ পিসিআর টেস্টের প্রমাণ দেখিয়ে তবেই ঢুকতে হয়। এরপর কোয়ারেন্টিনের নিয়ম পালন করতে হয়।
থাইল্যান্ড: গত ১ মার্চ থেকে পৃথিবীর যেকোনো দেশের পর্যটকেরাই দেশটিতে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন। তবে এ জন্য প্রত্যেকের ‘থাই পাস’ সংগ্রহ করার পাশাপাশি কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। যেমন কোভিডের সব টিকা নেওয়ার প্রমাণপত্র; ট্রাভেল হেলথ ইনস্যুরেন্সের কাগজপত্র, যেটির কাভারেজ ১০ হাজার ডলারের বেশি। যাঁরা টিকা নেননি বা আংশিক নিয়েছেন, তাঁদের ৭২ ঘণ্টা আগের কোভিড পিসিআর টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট প্রদর্শন করতে হয়।
হংকং: করোনা সংক্রমণের কারণে এ বছরের প্রথম দিকেও কয়েক মাস হংকংয়ে বিধিনিষেধ জারি ছিল। গত ১ মে থেকে বিদেশি পর্যটকদের জন্য সীমানা খুলে দেয় দেশটি। যাঁরা কোভিডের সব টিকা নেওয়ার কাগজপত্র দেখাতে পারেন, তাঁদেরই কেবল দেশটিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও তাঁদের হংকংয়ের মনোনীত কোনো হোটেলে সাত দিনের কোয়ারেন্টিন এবং দেশ ছাড়ার ৪৮ ঘণ্টা আগে কোভিড–১৯ পিসিআর টেস্ট করানোর নিয়ম পালন করতে হয়।
সিঙ্গাপুর: গত ১ এপ্রিল থেকে সিঙ্গাপুর পর্যটকদের ঢুকতে দিচ্ছে। তবে যাঁরা কোভিড টিকার সব ডোজ নিয়েছেন, তাঁরাই কেবল দেশটিতে প্রবেশ করতে পারেন। তাঁদের ঢোকার সময় বা দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আগে কোভিড পিসিআর টেস্ট করানোর কোনো শর্ত নেই। কিন্তু ১৩ বছরের বেশি বয়সী যাঁরা টিকা নেননি, তাঁদের পিসিআর টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট দেখানো ও কোয়ারেন্টিন পালন বাধ্যতামূলক।
সূত্র: দ্য পয়েন্টসগাই ডটকম ও বিবিসি