সারা বিশ্বে দুবাই শহরটি পরিচিতি লাভ করেছে উঁচু উঁচু বিল্ডিং, নামী দামী গাড়ি, বাড়ি এবং তাদের বিলাস বহুল জীবন যাপনের জন্য। বিশ্বের অধিকাংশ মানুষই মনে করেন যে দুবাই একটি দেশ। কিন্তু দুবাই কোনো দেশ না। সংযুক্ত আরব আমিরাত একটি দেশ, যা মধ্য প্রাচ্য / দক্ষিণপশ্চিম এশিয়ায় অবস্থিত, দুবাই হলো সেই দেশের সবচেয়ে বড়ো এবং সবচেয়ে জনবহুল শহর।
বর্তমানে সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিংটি হলো ব্রুজ খলিফা। যেটি দুবাইতে অবস্থিত। যা দুবাইয়ের ৯০ কিলোমিটার দূর থেকেও দৃশমান। দুবাইতে অবস্থিত পৃথিবীর তৃতীয় সবচেয়ে উঁচু হোটেল ব্রুজ আল আরব। এই হোটেল মধ্যে একটা সোনার চাদর রয়েছে যেটাকে বাইরে থেকে দেখলে মন ভোরে যায়। কিন্তু আপনি ইটা জেনে অবাক হবেন যে, ১৯৭০ সালে ওই জায়গায় ছিল মরুভুমি। মাত্র কয়েক বৎসরে সেই মরুভুমি হয়ে উঠলো পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর একটি শহর।
আমরা জানি যে এটিএম মেশিন দিয়ে টাকা তোলা হয় কিন্তু আপনি এটা জেনে অবাক হবেন যে দুবাইয়ে এটিএম মেশিন দিয়ে সোনাও বের হয়। একটি জার্মান সংস্থা প্রথম দুবাইতে এই মেশিনটি আবিষ্কার করে। একে গোল্ড এটিএমও বলা হয়। দুবাই এর একটি শপিং মোলে প্রথম এই মেশিনটি চালু করা হয়। এই মেশিন থেকে সোনার কয়েন, সোনার বিস্কুট এবং বিভিন্ন রকমের গহনাও বের হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো শপিং মোল এই দুবাইয়ে দেখা যায়।
দুবাইয়ের রাস্তাঘাট খুবই উন্নত। এর জন্য দুবাই এর রাস্তায় আপনি সব সময় দামি অত্যাধুনিক গাড়ি দেখতে পাবেন। যেমন ল্যাম্বরঘিনি,ফেরারি,বিএমডাব্লিউ ইত্যাদি। এমনকি দুবাই এর পুলিশ প্রশাসনও এইসব গাড়ি ব্যবহার করেন। পুলিশদের এইসব দামি গাড়ি দেওয়ার কারণ হচ্ছে যাতে তারা সহজে ক্রিমিনালদের ধরতে পারে। যেখানে অন্য দেশে ২/১ তা স্টেশন তৈরি করতে বছরের পর বছর পার হয়ে যায় সেখানে দুবাই মাত্র ১৮ মাসে ৪২ মেট্রো স্টেশন তৈরি করেছে । দুবাইয়ের ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টটি পৃথিবীর তৃতীয় ব্যস্ততম এয়ারপোর্ট।
দুবাইকে বালির শহরও বলা হয়। দুবাই তে প্রচুর পরিমান বালি থাকার কারণে সেখানে উট চলতে দেখা যায়। সেখানকার মানুষ প্রায়ই উঠ দিয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু মজার বেপার হলো সেখানে রোবট চালিত উট দেখা যায়। মাঝে মধ্যে উট যখন দিশাহীন পরে তখন উটকে সঠিক দিশা দেখতে এবং শান্ত করতে এই রোবটিকে ব্যবহার করা হয়।
বেবসা বাণিজ্যের জন্য দুবাই একটি বিশেষ শহর। তাই অধিকাংশ মানুষ দুবাইয়ে কাজকর্মের জন্য নিজের দেশ থেকে পারি দেয়। আপনি এটা জেনে অবাক হবেন যে দুবাইয়ে মাত্র ২০ শতাংশ জনগণই প্রকৃত পক্ষে দুবাইয়ের বাসিন্দা। আর বাকি ৮০ শতাংশ জনগণই অন্য দেশের। অদিকাংশ মানুষ মনে করেন যে দুবাই এর অর্থনীতি তেলের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু আপনি এটা জেনে অবাক হবেন যে দুবাই এর মাত্র ৭ থেকে ৮ শতাংশ ইনকাম তেল থেকে আসে। আর বাকিটা আসে বেবসা বাণিজ্য এবং পর্যটক দের থেকে।
দুবাই এর ধনী বেক্তিরা বনের পশুদের পোষ মানতে ভালোবাসেন। সিংহ এবং চিতাবাগ কে তারা নিজেদের সাথে নিয়ে রাস্তায় ঘোরা ফেরা করেন। সেখানকার ধনী বেক্তিরা উদার মনের হয়ে থাকে যার কারণে প্রকৃত অর্থে যারা গরিব তাদেরকে বিনামূল্যে খাবার দেওয়া হয়।
পৃথিবীর সবচেয়ে বিল্ডিং বেশি তৈরি করা হয় দুবাইয়ে। এবং প্রচুর পরিমান তেলের খননও করা হয় সেখানে। তাই ধারণা করা হয় পৃথিবীর ২৫ শতাংশ ক্রেন এই দুবাইয়ে ব্যবহার করা হয়।
দুবাই একটি ইসলামিক দেশ হওয়ায় সেখানে পাবলিক প্লেস এ মদ খাওয়া অপরাধ। দুবাই একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। সেখানে ক্রাইম এর মাত্রা খুবই কম।
দুবাইয়ে প্রচুর পাল্ম আইস্ল্যাণ্ড নামক কৃতিম দ্বীপ তৈরি করা হয়েছে। এই আইস্ল্যাণ্ড গুলি তৈরি করতে প্রচুর পরিমান বালি ব্যবহার করা হয়েছে। প্রত্যেক দেশের নিজস্ব কোনো পোস্টাল কোড রয়েছে। কিন্তু আপনি ইটা জেনে অবাক হবেন যে দুবাইয়ের কোনো পোস্টাল কোড নেই।
সবশেষে, ব্রুজ খলিফা পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং হলেও দুবাই খুব তাড়াতাড়ি আরেকটি উঁচু বিল্ডিং বানাতে চলেছে যেটা প্রায় ১০০০ মিটার এর কাছাকাছি এবং এটা ২০২০ এর মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে , এর নাম হলো দ্য টাওয়ার অফ ক্রিক হারবার।
Like this:
Like Loading...