বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন

অস্ট্রেলিয়া পৃথিবীর সর্বকনিষ্ঠ মহাদেশ এবং একটি দেশ

  • আপডেট সময় বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪
অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ: অস্ট্রেলিয়া পৃথিবীর সর্বকনিষ্ঠ মহাদেশ এবং একটি স্বাধীন দেশ। এটি দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত এবং এর একটি অনন্য ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয় রয়েছে। মহাদেশটি প্রধানত একটি একক দেশ নিয়ে গঠিত হলেও এতে আশপাশের কিছু ছোট দ্বীপপুঞ্জ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
নিচে মহাদেশটির ভৌগোলিক, প্রাকৃতিক, ঐতিহাসিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
ভৌগোলিক বিবরণ:
অবস্থান ও সীমানা:
অস্ট্রেলিয়া দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত এবং এটি পৃথিবীর একমাত্র মহাদেশ যা একটি দেশ হিসেবে গঠিত।
এটি উত্তরে টিমর সাগর ও আরাফুরা সাগর, পূর্বে প্রবাল সাগর ও তাসমান সাগর, দক্ষিণে গ্রেট অস্ট্রেলিয়ান বাইট, এবং পশ্চিমে ভারত মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত।
আয়তন ও গঠন:
আয়তন: প্রায় ৭৬ লাখ ৯২ হাজার বর্গকিলোমিটার।
এটি বিশ্বের ক্ষুদ্রতম মহাদেশ, তবে ৬ষ্ঠ বৃহত্তম দেশ।
প্রধান দ্বীপগুলো: তাসমানিয়া, এবং আশপাশের ছোট দ্বীপপুঞ্জ।
ভূপ্রকৃতি:
মরুভূমি: মহাদেশটির কেন্দ্রীয় অঞ্চল “আউটব্যাক” নামে পরিচিত এবং এটি শুষ্ক মরুভূমি অঞ্চল।
পাহাড়: গ্রেট ডিভাইডিং রেঞ্জ পাহাড়শ্রেণী পূর্ব উপকূলে প্রসারিত।
উপকূলরেখা: অস্ট্রেলিয়ার উপকূলরেখা ২৫,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ।
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ও পরিবেশ:
বৈচিত্র্যময় বন্যপ্রাণী:
বিশ্বের ৮০% স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ এবং গাছপালা অস্ট্রেলিয়ায় স্থানীয়।
অনন্য প্রাণী: ক্যাঙ্গারু, কোয়ালা, প্লাটিপাস, ডিঙ্গো, ইচিডনা।
প্রাকৃতিক সম্পদ:
অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ পৃথিবীর বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর, যা বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ।
উলুরু: লাল বেলে পাথরের প্রাকৃতিক স্তম্ভ, যা আদিবাসী সংস্কৃতির পবিত্র স্থান।
মরুমাস্য আবহাওয়া:
শুষ্ক ও গ্রীষ্মমন্ডলীয় আবহাওয়া মহাদেশজুড়ে প্রভাব ফেলে।
শীতকাল দক্ষিণাঞ্চলে তুলনামূলক ঠান্ডা হয়।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
আদিবাসী জনগণ:
অ্যাবরিজিনাল এবং টরেস স্ট্রেইট আইল্যান্ডাররা প্রায় ৬৫,০০০ বছর আগে থেকে এখানে বাস করছে।
তাদের সংস্কৃতি পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো জীবিত ঐতিহ্যগুলোর একটি।
ইউরোপীয় উপনিবেশ:
১৭৭০ সালে ক্যাপ্টেন জেমস কুক অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূল আবিষ্কার করেন।
১৭৮৮ সালে ব্রিটিশরা এখানে উপনিবেশ স্থাপন করে এবং পরবর্তীতে এটি পেনাল কলোনি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
স্বাধীনতা:
১৯০১ সালে অস্ট্রেলিয়া ফেডারেশনের মাধ্যমে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বায়ত্তশাসন লাভ করে।
অর্থনীতি ও শিল্প:
অর্থনীতি:
পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর একটি।
খনিজ সম্পদ (কয়লা, লোহা, স্বর্ণ, প্রাকৃতিক গ্যাস) এর অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি।
কৃষি: গবাদিপশু পালন ও গম চাষ।
পর্যটন: গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ, সিডনি অপেরা হাউস, এবং আউটব্যাক পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয়।
শিক্ষা ও গবেষণা:
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন: অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সিডনি।
সংস্কৃতি ও জীবনধারা
আদিবাসী সংস্কৃতি:
অ্যাবরিজিনাল শিল্প ও গল্প বলা এখনো অস্ট্রেলিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক অংশ।
মুলধারার সংস্কৃতি:
পশ্চিমা সংস্কৃতির সঙ্গে প্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রভাব রয়েছে।
জনপ্রিয় খেলা: ক্রিকেট, রাগবি, ফুটবল।
ভোজন:
বিখ্যাত খাবার: বারবিকিউ, পাভলোভা, ভেজিমাইট, কেঙ্গারু মাংস।
ওয়াইন শিল্প: দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বারোসা ভ্যালি বিখ্যাত।
জনসংখ্যা ও শহর:
জনসংখ্যা:
প্রায় ২.৭ কোটি, যার বেশিরভাগ উপকূলীয় শহরাঞ্চলে বসবাস করে।
প্রধান শহর: সিডনি, মেলবোর্ন, ব্রিসবেন, পার্থ, এডিলেড।
রাজধানী:
ক্যানবেরা, যা সিডনি ও মেলবোর্নের মধ্যে অবস্থিত।
N. B. বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ নেই। অস্ট্রেলিয়া ও আরো কিছু অঞ্চল নিয়ে ওশেনিয়া মহাদেশ গঠিত হয়েছে ( ওশেনিয়া মহাদেশ নিয়ে দেখুন – https://www.facebook.com/share/1CxbWZMfcV/ ) লিংকে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com