মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন

অপরূপ দ্বীপ কাওয়াই

  • আপডেট সময় শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৪

প্রশান্ত মহাসাগরের ম্যাপে কয়েকটা বিন্দুর মতো হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ দেখা যায়। বহুদিনের বাসনা সেখানে একবার ঘুরে আসব। প্রায় এক বছর পরিকল্পনার পরে শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবে পরিণত হল। তিনদিন ধরে হনলুলুর আনাচে কানাচে ঘুরে অবশেষে ছোট প্লেনে বিগ আইল্যান্ডে এলাম। এখানে বিখ্যাত কিলাউয়া আগ্নেয়গিরির পাশে এক রাত থাকাটা অভিনব অভিজ্ঞতা। ভলক্যানো ন্যাশনাল পার্ক থেকে কোনা কোম্পানির ট্যাক্সিতে রওনা হয়ে অপূর্ব সব প্রাকৃতিক দৃশ্য পেরিয়ে চলে এলাম হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের বিগ আইল্যান্ডের কাইলুয়া কোনা নামে একটি বড় শহরে।

হাওয়াইয়ান ভাষায় ‘কোনা’র অর্থ দ্বীপের নিম্নমুখী বা শুকনো দিক, আর এর বিপরীত শব্দ হল ‘কোওনাউ’, যার অর্থ দ্বীপের ভেজা দিক। একটুখানি কোনা শহরের ভিতর দিয়ে গিয়ে অপরূপ সব সমুদ্রসৈকতকে সাক্ষী রেখে এসে পৌঁছলাম বিখ্যাত রয়্যাল কোনা রিসর্টে। ব্যালকনি থেকে দেখা যায় বিস্তীর্ণ নীল জলরাশি। বিকেলের দিকে পাশের লনে এলাম বিখ্যাত লুয়াউ শো দেখতে। এখানেই ডিনারের আয়োজন। প্রথমেই ‘আলোহা’ সম্বোধনে উষ্ণ অভ্যর্থনা ও ফোটো শ্যুট। তারপরে নরম পানীয় ও মাই তাই নামে এক বিশেষ ককটেল পরিবেশিত হল। এরপরে শঙ্খধ্বনি সহযোগে অনুষ্ঠান শুরু। মঞ্চের পাশেই ইমু বা ভূগর্ভস্থ উনুন থেকে সুস্বাদু রোস্টেড পর্ক আলতোভাবে উঠে এল। এটি এখানকার এক বিশেষ পলিনেশিয় আচার। এরপরে মশাল জ্বালিয়ে পলিনেশিয় সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন। সঙ্গে পলিনেশিয় খাদ্য সম্ভারে ভরা বুফে। পোই নামে একধরনের পেস্টের মতো খাবার খেলাম যা হাওয়াইয়ের বিশেষ খাদ্য। পুরো অনুষ্ঠান শেষ হল ‘সামোয়ান’ বা আগুন-নৃত্যের মাধ্যমে। পরেরদিন গাড়িতে কোনায় লোকাল টুর।

আমরা তিনজন আর সঙ্গে মধ্যবয়স্ক এক আমেরিকান দম্পতি। প্রথমেই গেলাম কালোকো-হোনোকাহাউই ন্যাশনাল হিস্টোরিক্যাল পার্কে। সামুদ্রিক জীব-বৈচিত্র্য ও স্থানীয় জনজাতির জীবন চাক্ষুষ করলাম। সৈকত জুড়ে আশ্চর্যজনক হস্তনির্মিত ফিশ-পন্ডস এবং নালা। সমুদ্রের ধারেই প্রাচীন পবিত্র মন্দির ও সেই আমলের বাড়ির অবিকল প্রতিরূপ। একটু এগিয়ে অল্প জলে দেখলাম বিশ্রামরত কচ্ছপ। এরপরে কাইলাকেকুয়া বে, যা কিনা কাইলুয়া কোনা থেকে প্রায় ১২ মাইল দক্ষিণে হাওয়াই দ্বীপের কোনা উপকূলে অবস্থিত। হাজার বছর আগের এক অঞ্চল। পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে অনেকগুলি প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে, যেমন ধর্মীয় মন্দির হিয়াউস। এর মধ্যে একটি জায়গায় হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে প্রথম পদার্পণ করা ইউরোপিয়ান ক্যাপ্টেন জেমস কুক মারা গিয়েছিলেন। কাইলাকেকুয়া বে ঐতিহাসিক জেলা হিসেবে তালিকাভুক্ত। উপসাগরীয় সামুদ্রিক জীব সংরক্ষণ, কায়াকিং, স্কুবা ডাইভিং এবং স্নরকেলিং-এর জন্য এটি একটি জনপ্রিয় গন্তব্য।

এরপর আবার পথ চলা। এবার হুলিহি প্যালেস। পুরনো রাজপ্রাসাদের পাশ দিয়ে এপথ সেপথ ঘুরে গাইডের ধারাবিবরণী শুনতে শুনতে চলে এলাম সেন্ট বেনেডিক্ট ক্যাথলিক চার্চ, যা সাধারণভাবে পেন্টেড চার্চ নামে পরিচিত। ১৯০০ সাল নাগাদ বেলজিয়ামের ক্যাথলিক মিশনারি ফাদার জন ভেলমির নির্দেশে নির্মিত হয়েছিল এটি। বাইবেলের বিভিন্ন দৃশ্যের চিত্র অভ্যন্তরের সিলিং এবং দেওয়াল বরাবর ফ্রেস্কোর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন একজন প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত লোকশিল্পী ফ্রা ভেলমে। গির্জাটি আকারে ছোট ও আয়তক্ষেত্রাকার। কিছুক্ষণ গির্জায় বসলাম। গির্জা দর্শন করে উপকূল বরাবর চলে এলাম একটা ফার্ম হাউসে, সেখানে মৌমাছি চাষের বিভিন্ন পদ্ধতি ও কর্মকাণ্ড চলছে। এখানেই লাঞ্চ। পিকনিক লাঞ্চ… ভাত, টেরিয়াকি চিকেন, তরকারি সহযোগে। শেষে ফ্রুট জুস।

পরবর্তী গন্তব্য পুওহনুয়া ও হানাউনাউ জাতীয় ঐতিহাসিক উদ্যান। উনিশ শতকের গোড়ার দিকের হাওয়াইয়ানরা, যারা কাপু বা প্রাচীন আইন ভাঙে, তাদের আশ্রয়স্থল হিসেবে এই ঐতিহাসিক উদ্যানকে বেছে নেওয়া হয়। এখানে অপরাধীরা পুরোহিতদের দ্বারা সংশোধিত হয় এবং তাদের এখানে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরাজিত যোদ্ধা এবং অন্যরাও যুদ্ধের সময় এখানে আশ্রয় পায়। শেষ হল কোনা তথা বিগ আইল্যান্ড সফর। পরেরদিন কোনা এয়ারপোর্ট থেকে হাওয়াইয়ান এয়ারলাইন্সের ছোট বিমানে আমাদের কাওয়াই দ্বীপে যাত্রা।

প্রায় ৫০ মিনিটের ছোট্ট প্লেন যাত্রা। পৌঁছে গেলাম হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের কাওয়াই বা গার্ডেন আইল্যান্ডে। কাওয়াই দ্বীপ আগ্নেয়গিরির লাভা থেকে সৃষ্টি হয়েছে। এর উচ্চতম শৃঙ্গ কাওয়াকিনি আনুমানিক পাঁচ হাজার ফুট উঁচু। দু’পাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য চমৎকার। সবুজ এই দ্বীপটি প্রকৃত অর্থেই গার্ডেন আইল্যান্ড।

পরেরদিন ওয়াইমিয়া ক্যানিয়ন ও ফার্ন গ্রোতো টুরে বেরলাম। গার্ডেন আইল্যান্ডের অপূর্ব দৃশ্য মন ভরিয়ে দিল। নীল জলরাশি ধৌত প্রশান্ত মহাসাগরের তটভূমিকে পাশে রেখে এগোতে থাকলাম আমরা। পথে দেখলাম একটা ব্লো হোল বা স্প্রাউটিং হর্ন। প্রকৃতির এক আশ্চর্য বিস্ময়। তিমি মাছের জল ছাড়ার মতো পাথরের ফাঁক দিয়ে ফোয়ারার মতো জল বেরচ্ছে। ধীরে ধীরে এই অসাধারণ দৃশ্য দেখতে দেখতে এগোতে থাকলাম ওয়াইমিয়া ক্যানিয়নের দিকে। কিছুক্ষণ বাদেই এসে পড়লাম প্রশান্ত মহাসাগরের এই গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে। কাওয়াই-এর পশ্চিমদিকে অবস্থিত এই অঞ্চলটি  প্রায় ১০ মাইল দীর্ঘ ও ৩০০০ ফুট পর্যন্ত গভীর। ওয়াইমিয়া শব্দের হাওয়াইয়ান অর্থ হল লালচে জল যা কিনা এই গিরিখাতের ক্ষয়ের ফলে সৃষ্টি হয়েছে। পৃথিবীর আর্দ্রতম জায়গাগুলির মধ্যে অন্যতম দ্বীপের কেন্দ্রীয় শিখর। ওয়াইসিয়ালে পর্বতমালায় প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের দ্বারা সৃষ্ট ওয়াইমিয়া নদীর স্রোতে এই উপত্যকার জন্ম।

এবারের গন্তব্য কাওয়াই কফি ফার্ম। কীভাবে কফি গাছে ফল ফলিয়ে তার থেকে বীজ বার করে কফি পাউডার তৈরি হয় তা প্রদর্শিত হয়েছে এই বাগানে। কফি ফার্ম ঘুরে চললাম ফার্ন গ্রোতোর উদ্দেশে। পথে দেখলাম মানওয়াইওপুনা জলপ্রপাত যা স্থানীয়ভাবে জুরাসিক জলপ্রপাত নামে পরিচিত। এটি ব্যাক্তিগত মালিকানাধীন। হানাপেপে উপত্যকায় অবস্থিত। ৪০০ ফুট লম্বা এই জলপ্রপাত ১৯৯৩-এ তৈরি স্টিভেন স্পিলবার্গের ‘জুরাসিক পার্কে’ বেশ কয়েকটি দৃশ্যের পটভূমিকায় প্রদর্শিত হয়েছে।

ওয়াইলুয়া নদীতে বড় নৌকায় চেপে এলাম ফার্ন গ্রোতোয়। পুরো অঞ্চলটাই ওয়াইলুয়া রিভার স্টেট পার্কের অন্তর্ভুক্ত। ফার্ন গ্রোতো হল ফার্নের আবরণে ঢাকা লাভা প্রস্তরভুমি যা ওয়াইলুয়া নদীর দক্ষিণ দিকে এবং কাওয়াই এর পূর্বদিকে অবস্থিত। প্রাথমিকভাবে কাওয়াই দ্বীপের সবচেয়ে রোমান্টিক স্পট হিসেবে এই অঞ্চলটি বিখ্যাত। রেনফরেস্টের ভিতর দিয়ে এসে পৌঁছলাম এই জায়গায়। এসে দেখলাম এখানে হাওয়াইয়ান গিটার সহযোগে স্থানীয় লোকদের সংগীতের আসর বসেছে, সঙ্গে উকুলেলে। পর্তুগিজ অভিবাসীদের দ্বারা হাওয়াইয়ে আমদানি হয় এই যন্ত্রটি। ফেরার সময় নৌকাতেও উপভোগ করলাম স্থানীয় লোকসংগীতের আসর। শেষ হল আমাদের কাওয়াই ভ্রমণ।

পরেরদিন ব্রেকফাস্ট সেরে আবার ৪৫ মিনিটের ছোট্ট প্লেন যাত্রা। হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মাউই দ্বীপের উদ্দেশে আমরা। সেখানে পৌঁছে আমাদের জন্য নির্দিষ্ট পিকআপ ভ্যানের এক কর্মীর সহায়তায় ব্যস্ত মাউই বিমানবন্দর থেকে মালপত্র নিয়ে চললাম আমাদের গন্ত্যব্য, কানাপালি বিচ রিসর্টে। মাউই হল হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ। আবার মাউই কাউন্টির চারটি দ্বীপের মধ্যে একটি। বাকি তিনটি হল মোলোকাই, লানাই এবং জনবসতিবিহীন কালুলাওয়ে।

‘রোড টু হানা ট্যুর’ ছিল আগামী দিন। প্রায় ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই হানা হাইওয়ে বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক রুট। এই রাস্তাটি প্রায় ৬০টি এক লেনের ব্রিজ ও প্রায় ৬০০টির ও বেশি বাঁক পেরিয়ে রেন ফরেস্টের ভিতর দিয়ে গিয়েছে। শুরুতেই এলাম এক সমুদ্রতটে যেখানে অনেক সবুজ কচ্ছপ দেখা যায়। বছরের এই নির্দিষ্ট সময়ে এই নির্জন সৈকতে এরা ডিম পাড়তে আসে। রেন ফরেস্টের ভিতর দিযে আমাদের মিনিবাস চলতে থাকে। যাত্রাসঙ্গী বেশিরভাগই মার্কিন দম্পতি। বাস থামে এরপর কেয়ানি পয়েন্টে। হানা হাইওয়ের ঠিক মধ্যপথে ছোট্ট এই গ্রাম। শুরুতেই দেখলাম গ্রামের ছোট চার্চ। পাশেই কৃষ্ণকায় পাথুরে সমুদ্রসৈকতে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ। বৃষ্টির মধ্যেই এসে পড়লাম পুয়াকা স্টেট ওয়েসাইড পার্কে। মাউই দ্বীপের একটি রাষ্ট্রীয় উদ্যান। এই অঞ্চলটি জলপ্রপাত ও ছোট জলাভূমি-সহ প্রায় পাঁচ একর রেন ফরেস্ট নিয়ে গঠিত। ছাতা মাথায় দিয়ে বৃষ্টির মধ্যে এই অপার্থিব পরিবেশে ঘুরলাম আমরা। গাইড শন এখানকার ভৌগোলিক পরিবেশ সম্বন্ধে নানা তথ্য আমাদের সামনে তুলে ধরল।

এরপরে এলাম ওয়াইনাপানাপা বিচে, মাউই-এর বিখ্যাত ব্ল্যাক স্যান্ড বিচ। কালো বালি ও কালো লাভা পাথর দ্বারা ঘেরা কোবাল্ট নীল মহাসাগর মাত্র দশ হাজার বছর আগে এখানে এই ভৌগোলিক বৈচিত্র্য সৃষ্টি করে। এই অঞ্চলটি দ্বীপের সবচেয়ে সুন্দর লোকালয়গুলির মধ্যে একটি। বছরে কিছুটা সময়ে লাল চিংড়ি দেখা যায় এখানে, যা জলকে লাল করে তোলে। এখানেই আমরা লাঞ্চ সারলাম, তারপর বেশ কিছুক্ষণ সময় বিশ্রাম নিয়ে আবার হানা হাইওয়ে ধরে চললাম। এসে পড়লাম  ওয়াইলুয়া জলপ্রপাতের পাশে। এটি হানা হাইওয়ের ধারে দীর্ঘতম জলপ্রপাত। জনপ্রিয় জলপ্রপাত বলে যানজটও বেশি। বাস এরপর হানা হাইওয়ে ঘুরতে ঘুরতে এসে পড়ল হোমায়ু চার্চের সামনে। চার্চটি ১৮৫৭ সালে নির্মিত হয়েছিল। মাউই-এর সমুদ্র উপকূলবর্তী নদীর তীরে অবস্থিত এই স্থানটি খ্যাতিমান বিমানচালক, উদ্ভাবক, অন্বেষণকারী ও লেখক চার্লস লিন্ডবার্গ-এর সমাধিস্থল হিসেবেও পরিচিত।

অসাধারণ এই সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের পাশ দিয়ে ফিরে চললাম আমরা। হানা হাইওয়ের এই অংশটি অপেক্ষাকৃত শুষ্ক, অনেক কম বৃষ্টি হয় এদিকে। পৃথিবীর ১৪ রকম বিভিন্ন আবহাওয়া বিশিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে প্রায় দশ রকম আবহাওয়াও বৈচিত্র্যই এই অঞ্চলে দেখা যায়। ঘন সবুজ রেন ফরেস্ট অঞ্চল থেকে শুরু করে শুষ্ক মরুভূমি-প্রায় অঞ্চল সবই এখানে দেখা যায়। সর্বশেষ স্টপ মাউই হানি বি স্যাংচুয়ারি।

পরের দিন পলিনেশিয়ান অ্যাডভেঞ্চার ট্যুর বাসে চললাম হালিয়াকালা আগ্নেয়গিরি ও ইয়াও ভ্যালি দেখতে। হাওয়াইয়ান ভাষায় হালিয়াকালার অর্থ হল সূর্যের ঘর। স্থানীয় জনশ্রুতি অনুযায়ী, দিন লম্বা করার জন্যে ডেমিগড মাউই এখানে সূর্যকে বন্দি করেন। এই সুপ্ত আগ্নেয়গিরিতে ১৪৮০ থেকে ১৬০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্য লাভা নিঃসরণ হয়। খুব সুন্দর মসৃণ সর্পিল রাস্তা পাহাড়ের উপর দিকে চলে গিয়েছে। শিখর অঞ্চলে রয়েছে হালিয়াকালা ক্রেটার, আগ্নেয়গিরির শিখর এবং শিখরের আশেপাশের অঞ্চল।

হালিয়াকালা পার্ক ঘুরে এরপরে আমার এলাম ইয়াও ভ্যালিতে। ইয়াও ভ্যালির ইংরেজি অর্থ ক্লাউড সুপ্রিম। পশ্চিম মাউই-এর একটি স্নিগ্ধ উপত্যকা। ওয়েলুকু থেকে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ঐতিহাসিক কারণে এটি একটি পর্যটনস্থলে পরিণত হয়েছে। ১৭৯০ সালে কেপানিওয়াই-এর যুদ্ধ এই ইয়াও উপত্যকায় হয় যেখানে সম্রাট কামেহামেহা দ্বীপগুলির এককীকরণের প্রচেষ্টায় বিবদমান গোষ্ঠী ও মাউই সেনাবাহিনীকে যুদ্ধে পরাজিত করেছিলেন। এই যুদ্ধ এতটাই রক্তক্ষয়ী হয় যে মৃতদেহগুলি ইয়াও নদীর অববাহিকাকে অবরুদ্ধ করে ফেলে এবং স্থানটির নামকরণ হয় কেপানিওয়াই বা বদ্ধ জলাশয়। বেশ একটা রোমাঞ্চ হল ইয়াও ভ্যালিতে এসে। পুরনো মাউই শহরের উপর দিয়ে ফিরে এলাম আমরা। সফর শেষে হোটেলে ফিরে এলাম।

শেষ হল হাওয়াই সফর। পরেরদিন খুব ভোরে আবার সেই একই পিকআপ ভ্যানে  এয়ারপোর্ট; সেখান থেকে হনলুলু হয়ে আবার ফিরতি প্লেনে বাড়ি ফেরা। সঙ্গে নিয়ে এলাম অজস্র রোমাঞ্চকর অনুভুতি আর সুখস্মৃতি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com