বিচারপতি মানিক আটক হওয়ার পরপরই তিনি দনা এলাকার বাসিন্দাদের জানিয়েছেন, স্থানীয় দালাল সাদ্দামের সহায়তায় সীমান্তপথ ব্যবহার করে ভারতে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকাল থেকে। দালাল সাদ্দাম কানাইঘাটের পাতিছড়া গ্রামের রফিকুল হোসেনের ছেলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দালাল সাদ্দামের খোঁজে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
কানাইঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরীন জানান, সাবেক বিচারপতি মানিক ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি আটক করে হেফাজতে রেখেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দুপুরের দিকে সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক স্থানীয় দালাল সাদ্দামসহ অন্যদেরকে টাকা দিয়ে সীমান্ত দিয়ে তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার সহযোগিতা চান। বিকালের দিকে দনা সীমান্ত এলাকা পাড়ি দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। প্রবেশের পর একটি টিলার মধ্যবর্তী স্থানে কলাগাছের পাতার মধ্যে তাকে শুয়ে থাকতে দেখে স্থানীয় কিছু লোকজন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তার নাম শামসুদ্দিন মানিক বলে পরিচয় দেন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে সাবেক বিচারপতি মানিককে বলতে শোনা গেছে, টাকা লাগলে তিনি দেবেন। তার ভাই-বোন দেবেন। আমি এ দেশে এত কষ্ট করে এসেছি কি বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার জন্য?
আটকের সময়ের আরও একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সাবেক বিচারপতির গলায় গামছা বেঁধে হাত দিয়ে ধরে রেখেছেন একজন ব্যক্তি। আরেকজন তার নাম জিজ্ঞেস করছেন। এ সময় বিচারপতি মানিক তার পুরো নাম বলেন এবং বাড়ি মুন্সীগঞ্জ বলে জানান।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এই বিচারপতি অনেকটা অসহায় হয়ে বলতে থাকেন, আমার কাছে ছিল ব্রিটিশ এবং বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ কয়েকটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড। ভয়ে দেশ ছেড়ে যাচ্ছিলাম। এখানকার দুই যুবক বলেছিল, ১৫ হাজার টাকা দিলে সীমান্ত পার করে দেবে। ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার পর সেই দুই যুবক ভারত সীমান্তে আমাকে নিয়ে যায়। সীমান্তে নিয়ে মারধর করে আমার কাছে থাকা ৬০-৭০ লাখ টাকা এবং মোবাইল নিয়ে যায় তারা। মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়লে কলার পাতার ওপর শুইয়ে রেখে তারা পালিয়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন জানিয়েছেন, দনা পাতিছড়া গ্রামের রফিকুল হোসেনের ছেলে সাদ্দামের সহায়তায় অবৈধভাবে শুক্রবার বিকেলের দিকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। পরে তাকে দনা বিজিবির সদস্যরা আটক করে তাদের হেফাজতে নিয়ে যান। সাদ্দাম হোসেনের বসত বাড়িটি বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তঘেঁষা। সে ভারতে অবৈধভাবে বিভিন্ন সময়ে অনুপ্রবেশ করে থাকে।