ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের রায়াগাদা শহরের ছেলে রিতেশ আগারওয়াল। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া ২৬ বছর বয়স্ক এই যুবক কখনোই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাননি। ১৮ বছর বয়সে যখন তাকে যখন তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বের করে দেয়া হয়, তখন তার সম্বল ছিল ভারতীয় ৫০ রুপি (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৫৮ দশমিক শূন্য আট টাকা)। এই ৫০ রুপি থেকেই ছয় বছরের ব্যবধানে তিনি নিজেকে পরিণত করেছেন বিশ্বের কনিষ্ঠতম বিলিওনিয়ারে।
বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ওয়িও (ওওয়াইও) হোটেল চেইনের মালিক রিতেশ পেছনের দিনের কথা স্মরণ করে বলেন, ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি সংগ্রাম করেছেন। দারিদ্র্যের কারণে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারেননি। তার কোনো ক্যারিয়ারই ছিল না।
তিনি বলেন, ‘ওই সময় আমার মনে হয়েছিল, এটি আমার জীবনে পার করা সবচেয়ে কঠিন সময়।’
তিনি জানান, কঠিন এই পরিস্থিতির মধ্যেই তাকে তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বের করে দেয়া হয়ছিল। এই সময় তার হাতে সম্বল ছিল মাত্র ৫০ রুপি।
এই পরিস্থিতি থেকে কীভাবে তিনি উঠে এসেছেন, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘অর্থ আমার জন্য কখনোই চিন্তার বিষয় ছিল না। আমার চিন্তায় ছিল আমার আসল সমস্যার সমাধান করা।’
তিনি জানান, কাছাকাছি একটি হোটেল প্রায় সময়ই খালি পড়ে থাকতো। হোটেলটির মালিক তা থেকে কোনো আয়ই করতে পারতেন না। হোটেলটি নিয়ে তখন তিনি জীবনের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
রিতেশ বলেন, তিনি মালিকের কাছে গিয়ে আরো উন্নত করার প্রতিশ্রুতিতে ওই হোটেলটির দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেয়ার পর তিনি হোটেলটির আমূল পরিবর্তন করেন।
রিতেশ জানান, তিনি হোটেলের লাইট বাল্ব ও বেডের পরিবর্তন আনেন। পাশাপাশি রুম সার্ভিসেরও ব্যবস্থা করেন। পরে হোটেলের ডেকোরেশনের ছবি তুলে তিনি অনলাইন প্লাটফর্মে ছাড়েন।
তিনি বলেন, ওই সময় তিনি হোটেলটির নাম পরিবর্তন করে রাখেন ওয়িও হোটেল। যার পূর্ণরূপ দাঁড়ায় আপনার নিজের হোটেল (ওন ইউর ওউন হোটেল)।
রিতেশ বলেন, ‘প্রথম হোটেলের কাজ খুবই কঠিন ছিল। কিন্তু যখন আমি একটি হোটেলের চিত্র পরিবর্তন করতে পেরেছি, আমি নিশ্চিত আরো শত হোটেলের চিত্রও আমি পরিবর্তন করতে পারবো।’
২০ বছর বয়সে রিতেশের ব্যবসায় প্রথম বিনিয়োগকারীরা অর্থের যোগান দেন। ২১ বছর বয়সে রিতেশ তার প্রতিষ্ঠানে ৫০ জনকে নিয়োগ দেন। ২২ বছর বয়সে তিনি পাঁচ শ’ হোটেলের মালিক হয়ে যান। ২৪ বছর বয়সে তার আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় এক বিলিয়ন ডলার।
বর্তমানে ২৬ বছর বয়সে তার অধীনে থাকা হোটেলের সংখ্যা ৪৩ হাজার। তার অধীনে বর্তমানে কাজ করছেন তিন লাখ ৫০ হাজার কর্মী।
রিতেশ বলেন, ‘অনেকেই আমাকে বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাও, বাবা-মায়ের কাছে সাহায্য চাও, তোমার এই পরিকল্পনা কাজে আসবে না।’
তিনি বলেন, রাত-দিন তিনি পরিশ্রম করেন। এমনকি ছুটির দিনেও তিনি কাজ করেন।
তিনি বলেন, ‘যদি আপনি পরিশ্রম করেন, আপনার ভাগ্যবান হওয়ার সম্ভাবনা নাটকীয়ভাবে বাড়বে।’
সূত্র : ইন্টারনেট