অদম্য চেষ্টা মানুষকে কতদূর নিয়ে যেতে পারে, তার অনন্য উদাহরণ তিনি। সাধারণ এক বাসচালকের ঘরে জন্ম। কাজ শুরু করেছিলেন দৈনিক ৫০ রুপি পারিশ্রমিকে। এখন সেই অভিনেতাই একটি সিনেমার জন্য ২০ কোটি রুপির বেশি পারিশ্রমিক নেন।
চমক জাগানিয়া এই ক্যারিয়ার ভারতের কন্নড় তারকা যশের। যিনি ‘কেজিএফ’ তারকা হিসেবে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। শুধু কন্নড় ইন্ডাস্ট্রি নয়, এখন অন্যান্য অঞ্চলের নির্মাতা-প্রযোজকরাও তাকে নিয়ে কাজ করতে মুখিয়ে থাকেন।
অসামান্য এই সাফল্যের পেছনে লম্বা, কণ্টকময় পথ পেরিয়ে এসেছেন যশ। তার আসল নাম নবীন কুমার গৌড়া। ছোটবেলা থেকেই মাথায় অভিনয়ের ভাবনা আসে। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারে ছেলের এমন ভাবনায় সায় দেননি বাবা-মা। কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্র নন যশ।
মাত্র ১৬ বছর বয়সেই বেঙ্গালুরু চলে আসেন তিনি। কাজ শুরু করেন একটি ছবির সহকারী পরিচালক হিসেবে। কিন্তু কাজটি বন্ধ হয়ে যায় হঠাৎ। যশ তখন যোগ দেন একটি নাট্যদলে, সেখানে নিজের প্রতিভাকে শানিত করতে থাকেন। তবে নাট্যদলে প্রথম দিকে তিনি মঞ্চের পেছনে সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। এজন্য দৈনিক ৫০ রুপি করে পেতেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আনন্দবাজার।
টেলিভিশনে যশের অভিষেক হয় ২০০৫ সালে, ‘উত্তরায়ণ’ নামের একটি টিভি শো দিয়ে। এরপর টিভি সিরিয়ালেও কাজ করেছেন তিনি। সিনেমায় সুযোগটা আসে ২০০৭ সালে, ‘জামবাবা হুড়ুগি’ ছবিতে। তবে সেটা ছিল পার্শ্ব চরিত্রে।
নায়ক হিসেবে যশের ক্যারিয়ার খাতা ওপেন হয় ২০০৮ সালের ‘রকি’ দিয়ে। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করেন তিনি। কন্নড় ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিতি লাভ করেন বেশ। এরপর আরও এক ডজনের বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন যশ।
তবে ২০১৮ সালে তার ক্যারিয়ার গ্রাফ একলাফে অনেক দূর এগিয়ে যায়। প্রশান্ত নীল নির্মিত ‘কেজিএফ: চ্যাপ্টার ওয়ান’ ছবিতে অভিনয় করে ভারতব্যাপী আলোড়ন তোলেন। এই ছবির দ্বিতীয় পর্ব মুক্তি পায় ২০২২ সালে। সেটা শুধু কন্নড় ইন্ডাস্ট্রি নয়, বরং গোটা ভারতেই ইতিহাস সৃষ্টি করে। ১ হাজার ২০০ কোটি রুপির বেশি আয় করেছে সিনেমাটি। শোনা যায়, ‘কেজিএফ: চ্যাপ্টার টু’র জন্য ৩০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক পেয়েছেন যশ।
প্রসঙ্গত, ‘কেজিএফ’র পর এখনও নতুন কোনও ছবির ঘোষণা দেননি যশ। ধারণা করা হচ্ছে, শিগগিরই বড় কোনও চমক নিয়ে হাজির হবেন তিনি।