সাম্প্রতিক কয়েক বছরে ভারতের ভ্রমণ পরিকাঠামো হু-হু করে প্রসারিত হয়েছে। সারা দেশের মধ্যে আরও ভাল ভাবে সংযোগ গড়ে তোলার জন্য নতুন নতুন বিমানবন্দর এবং রেলপথ তৈরি হচ্ছে। একাধিক উন্নয়নের মধ্যে দেশের একটি রাজ্য উল্লেখযোগ্য মাইলফলক অর্জন করতে চলেছে — আসলে উত্তরপ্রদেশই হতে চলেছে ভারতের এমন একটি রাজ্য, যেখানে খুব শীঘ্রই থাকতে চলেছে ৫টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
জেওয়ারের আসন্ন নয়ডা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট বা এনআইএ হতে চলেছে রাজ্যের পঞ্চম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফলে অন্যতম প্রধান বিমান চলাচলের ঘাঁটি হিসেবে নিজের অবস্থান মজবুত করতে চলেছে উত্তরপ্রদেশ। শুধু তা-ই নয়, এনআইএ হতে চলেছে ভারতের সর্ববৃহৎ বিমানবন্দর। ফলে তা হয়ে উঠবে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধার কেন্দ্র। যা আঞ্চলিক সংযোগও বৃদ্ধি করবে।
৫টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আর উত্তরপ্রদেশের কৃতিত্ব: ২০১২ সাল পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশে ছিল মাত্র ২টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর: লখনউ (চৌধরি চরণ সিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) এবং বারাণসী (লাল বাহাদুর শাস্ত্রী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর)। রাজ্যের বিমান পরিবহণের প্রেক্ষাপট তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পরের বছরগুলিতে পরিবর্তিত হয়েছে:
২০২১: বৌদ্ধ পর্যটনের জন্যই মূলত ওই বছরের ২০ অক্টোবর কুশীনগর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২০২৩: অযোধ্যায় সংযোগ বাড়ানোর জন্য মহাঋষি বাল্মীকি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু করা হয়েছিল।
২০২৪: জেওয়ারের বহু প্রতীক্ষিত নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাজ প্রায় শেষের দিকে। খুব শীঘ্রই ওই বিমানবন্দরটিকে চালু করা হবে। আর এটাই হতে চলেছে রাজ্যের পঞ্চম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এই সম্প্রসারণের মাধ্যমে উত্তর প্রদেশ অতুলনীয় বিমান সংযোগ এবং পরিষেবা প্রদানের জন্য প্রস্তুত। ফলে সুবিধা হতে চলেছে ডোমেস্টিক এবং আন্তর্জাতিক যাত্রীদের।
নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর: ভারতীয় বিমান পরিবহণের ক্ষেত্রে গেম-চেঞ্জার: নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর একটি ল্যান্ডমার্ক প্রজেক্ট হতে চলেছে। ইন্দিরা গান্ধি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (আইজিআই)-এর পাশাপাশি দিল্লি-এনসিআর এলাকায় দ্বিতীয় প্রধান বিমানবন্দর হয়ে উঠবে এটি। আইজিআই থেকে প্রায় ৭২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বিমানবন্দরটি দিল্লির প্রাথমিক বিমানবন্দরের ভিড় অনেকটাই লাঘব করবে।
নয়ডার বিমানবন্দর কেন গেম-চেঞ্জার হয়ে উঠবে? দারুণ বিস্তৃতি: ১৩৩৪ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। প্রথম পর্যায়ে বার্ষিক ১২ মিলিয়ন যাত্রী সামাল দেওয়ার মতো করেই তৈরি হয়েছে এই বিমানবন্দর।
কার্গো এবং লজিস্টিক হাব: প্রতি বছর আড়াই লক্ষ টন কার্গো সামাল দিতে পারবে এই বিমানবন্দর। ফলে ভারতীয় লজিস্টিক এবং সাপ্লাই চেন ইকোসিস্টেমে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ফ্লাইট অপারেশন: বার্ষিক ১ লক্ষ এয়ারক্র্যাফ্ট মুভমেন্ট সাপোর্ট করবে এটি। বিশ্বমানের পরিকাঠামো: এই টার্মিনাল ১ লক্ষ বর্গমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। থাকবে ২৮টি এয়ারক্র্যাফ্ট স্ট্যান্ড।
রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতির কেন্দ্র: বিমান পরিবহণ পরিচালনা করার জন্য ৪০ একরের একটি রক্ষণাবেক্ষণ, রিপেয়ার এবং ওভারহল ফেসিলিটি তৈরি হচ্ছে।
উত্তর প্রদেশে বিমান চলাচলের ভবিষ্যৎ: পাঁচটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু হওয়ায় ভারতের যোগাযোগ মাধ্যম একটি আলাদা উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। এটা শুধু ব্যবসা কিংবা পর্যটনের সুযোগই বাড়াবে না, তার সঙ্গে দেশ ও দুনিয়ার বিভিন্ন অংশকে কাছাকাছি এনে দেবে।