২০৫০ সালে একবিংশ শতাব্দীর অর্থেক পথ পাড়ি দেবে বিশ্ব। এই সময়ের মধ্যে পৃথিবীতে কী কী পরিবর্তন আসতে পারে, তা নিয়ে বহুদিন ধরেই চলছে জল্পনা-কল্পনা, গবেষণা। সামনে এসেছে ২০৫০ সাল সম্পর্কিত বেশ কিছু পূর্বাভাস। জাগো নিউজে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে সেসব খবর।
চলুন, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে কী কী উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসতে পারে
২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী পানি সংকটে পড়বে ৫০০ কোটির বেশি মানুষ বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের আবহাওয়া বিষয়ক সংস্থা (ডব্লিউএমও)। তারা জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী পানি সম্পর্কিত দুর্যোগ; যেমন- বন্যা এবং খরার ঝুঁকি বাড়তে শুরু করেছে। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। দ্য স্টেট অব ক্লাইমেট সার্ভিসেস ২০২১ শীর্ষক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে বিশ্বে পানির সংকট তীব্র হতে শুরু করেছে। ২০৫০ সালে এই পরিস্থিতি আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠবে। ফলে পানির সংকটে পড়তে পারে ৫০০ কোটির বেশি মানুষ।
২০৫০ সালের মধ্যে মানুষের বৈশ্বিক গড় আয়ু বাড়বে ৫ বছর । তবে একই সঙ্গে বাড়তে পারে স্থূলতা এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগও। গত মে মাসে পিয়ার রিভিউড জার্নাল দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গবেষকদের মতে, বিশ্বজুড়েই মানুষের গড় আয়ু বাড়বে। ২০৫০ সালের মধ্যে পুরুষদের গড় আয়ু ৭১ দশমিক ১ থেকে বেড়ে ৭৬ দশমিক ২ বছর এবং নারীদের গড় আয়ু ৭৬ দশমিক ২ থেকে বেড়ে ৮০ দশমিক ৫ বছর হতে পারে।
দেশে দেশে ক্রমবর্ধমান তাপপ্রবাহ আর অপর্যাপ্ত বৃষ্টিতে অতিষ্ঠ মানুষের জীবন। বিশেষ করে, গত কয়েক বছরে ভারতীয় উপমহাদেশে গরমের উত্তাপ বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে ভবিষ্যতেও। সেটি হলে ২০৫০ সালের মধ্যে আরও অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে ঘরের বাইরে কাজ করা। গত বছর ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত এক সমীক্ষায় জানানো হয়, ভারতের তাপপ্রবাহগুলো ২০৫০ সালের মধ্যে ছায়ায় বিশ্রাম নেওয়া সুস্থ মানুষের বেঁচে থাকার সীমা অতিক্রম করতে পারে। এটি ৩১ থেকে ৪৮ কোটি মানুষের জীবনযাত্রার মানকে প্রভাবিত করবে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০৫০ সাল নাগাদ প্রচণ্ড তাপের কারণে দিনের আলোয় বাইরে কাজ করার ক্ষমতা ১৫ শতাংশ কমে যাবে।
২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে ৭৫ শতাংশের বেশি। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যানসার বিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইএআরসি) জানিয়েছে, ২০১২ সালে বিশ্বজুড়ে ক্যানসারে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১ কোটি ৪১ লাখ ও ৮২ লাখ। এক দশক পরে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে দুই কোটি ও ৯৭ লাখে। ডব্লিউএইচও সতর্ক করে বলেছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে সাড়ে তিন কোটিতে দাঁড়াতে পারে, যা ২০২২ সালের তুলনায় অন্তত ৭৭ শতাংশ বেশি।
আগামী কয়েক দশকের মধ্যে বিশ্বব্যাপী অন্ধ মানুষের সংখ্যা বর্তমানের চেয়ে তিনগুণের বেশি বৃদ্ধি পাবে। ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথ-এর একদল গবেষক এ দাবি করেছেন। তাদের গবেষণা বলছে, যদি ভালো অর্থায়নের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে ২০৫০ সাল নাগাদ গিয়ে পৌঁছবে। বর্তমানে বিশ্বে অন্ধ মানুষ রয়েছেন ৩ কোটি ৬০ লাখের মতো।