২০২৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ক্যারিয়ার গঠনের জন্য সেরা কর্মস্থলগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে পেশাদার নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম লিঙ্কডইন। কোটি কোটি কর্মীর ডেটা বিশ্লেষণ করে তৈরি করা এই তালিকায় কর্মী পদোন্নতির হার, দক্ষতা অর্জনের সুযোগ, লিঙ্গ সমতা এবং কর্মী-সুবিধার মতো গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
লিঙ্কডইনের মতে, তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো এমন একটি পরিবেশ গড়ে তুলেছে যেখানে কর্মীরা নমনীয়ভাবে কাজ করতে পারে, “যেখান থেকেই খুশি কাজ করার” স্বাধীনতা পায় এবং পেশাগতভাবে উন্নতি করতে পারে।
তালিকায় স্থান পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে কিছু অস্ট্রেলিয়ান মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, তবে আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি জায়ান্টদের আধিপত্যও চোখে পড়ার মতো।
আসুন দেখে নেওয়া যাক, ২০২৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় কাজের জন্য শীর্ষ ১০টি সেরা কোম্পানির তালিকা—
১. সার্ভিসনাউ (ServiceNow):
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই সফটওয়্যার কোম্পানিটি তালিকার শীর্ষে রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় একটি সহানুভূতিশীল ও উন্নয়নমুখী কর্মপরিবেশ তৈরি করে কর্মীদের পেশাগত ও ব্যক্তিগত ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করছে তারা।
২. অ্যাটলাসিয়ান (Atlassian):
অস্ট্রেলিয়ার নিজস্ব সফটওয়্যার কোম্পানি অ্যাটলাসিয়ান ‘টিম এনি্ওয়্যার’ নীতির মাধ্যমে কর্মীদের যেকোনো স্থান থেকে কাজ করার সুযোগ দিচ্ছে, যা কোম্পানিটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
৩. কমনওয়েলথ ব্যাংক (Commonwealth Bank):
দেশের বৃহত্তম এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি কর্মক্ষেত্রে নমনীয়তার জন্য বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে এবং কর্মীদের উন্নয়নের সুযোগ করে দিচ্ছে।
৪. অ্যামাজন (Amazon):
২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় যাত্রা শুরু করা এই মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট বর্তমানে ৭০০০-এরও বেশি কর্মী নিয়ে দেশের অন্যতম বড় নিয়োগদাতা।
৫. ওরাকল (Oracle):
বিশ্বখ্যাত এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অস্ট্রেলিয়ায় তাদের কর্মীদের জন্য উচ্চমানের প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নমূলক সুযোগ নিয়ে কাজ করছে।
৬. টেলস্ট্রা (Telstra):
তালিকায় একমাত্র টেলিকম কোম্পানি হিসেবে টেলস্ট্রা নিজেদের এমন একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে তুলে ধরেছে, যেখানে কর্মীরা নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশে পেশাগত উন্নতি করতে পারে।
৭. অ্যাডোব (Adobe):
সিলিকন ভ্যালির এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় তাদের কার্যক্রম শুরু করে এবং এখন সেখানে ৬০০’র বেশি কর্মী নিয়ে প্রযুক্তিখাতে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে।
৮. মাস্টারকার্ড (Mastercard):
গ্লোবাল পেমেন্ট সলিউশন প্রদানকারী এই কোম্পানি কর্মীদের জন্য উদ্ভাবনী পরিবেশ এবং ক্যারিয়ার উন্নয়নের পথ তৈরি করেছে।
৯. রেসমেড (ResMed):
ঘুম সংক্রান্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী এই প্রতিষ্ঠানটি অস্ট্রেলিয়ায় ৩৫০০-এরও বেশি কর্মী নিয়ে কাজ করছে, যা তাদেরকে স্বাস্থ্য প্রযুক্তি খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানিতে পরিণত করেছে।
১০. থার্মো ফিশার সায়েন্টিফিক (Thermo Fisher Scientific):
এই বিজ্ঞান ও ক্লিনিকাল রিসার্চ ভিত্তিক কোম্পানিটি অস্ট্রেলিয়ায় স্বাস্থ্যবান, পরিচ্ছন্ন এবং নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে।
লিঙ্কডইনের ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞ ক্যালা ডেনগেট বলেন, “অস্ট্রেলিয়ার চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা অত্যন্ত তীব্র। এই তালিকা কর্মীদের জন্য দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে, যাতে তারা এমন প্রতিষ্ঠান বেছে নিতে পারে যারা কর্মীদের বিকাশ, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সুস্থ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করে।”
এই তালিকা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে, আধুনিক কর্মসংস্থানে নমনীয়তা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং কর্মী কল্যাণ এখন আর বিলাসিতা নয়—এগুলো এখন সেরা প্রতিষ্ঠানের মাপকাঠি।
সূত্র: নাইন নিউজ