বলা হয়, প্রয়োজনীয়তাই উদ্ভাবনের জনক। ঠিক তেমন ঘটনাই ঘটেছে এক কিশোরের সঙ্গে। যে বয়সে সবাই পড়াশোনায় দিন কাটায়, সে বয়সেই খুলেছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে এ কোম্পানি খুলে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। নিজের বুদ্ধি ও মেধা খাটিয়ে গড়ে তুলেছেন ডিজিটাল কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান। সে কোম্পানি এখন বছরে আয় করে ১৪১ কোটি টাকার বেশি।
তিলক মেহতা, তিনি ভারতের সর্বকনিষ্ঠ উদ্যোক্তাদের একজন। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র থাকা অবস্থাতেই ব্যবসায় নেমে পড়েন তিনি। ২০১৮ সালে খোলেন পেপার্স এন পার্সেল নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান একদিনের মধ্যে পার্সেল পৌঁছে দেয়। স্কুলবয় থেকে তিলক এখন বিখ্যাত বিজনেস বয়ের তকমা অর্জন করেছে। এত অল্প বয়সেই সফল উদ্যোক্তা হয়ে পুরো বিশ্বের মধ্যে তিলক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
গুজরাটি পরিবারের সন্তান তিলক তার বাবা-মায়ের সঙ্গে মুম্বাই থাকেন। একদিন মামার বাসায় ঘুরতে গিয়ে বই ফেলে আসেন তিলক। কিন্তু পর দিন পরীক্ষা থাকায় একদিনের ভেতর সে বই আনা প্রয়োজন ছিল। সে মরিয়া হয়ে বিভিন্ন পার্সেল ডেলিভারি সংস্থার সঙ্গে কথা বলে পার্সেলটা ওই দিনই ডেলিভারির অনুরোধ জানায়। কিন্তু অধিকাংশ জায়গাতেই একই দিনে ডেলিভারি করার পরিসেবা ছিল না। আর যাদের সেই পরিসেবা ছিল, তা ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
এরপরই তিলকের মাথায় অসাধারণ এক ব্যবসার আইডিয়া আসে। একই দিনে কোনো শহরের মধ্যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পার্সেল ডেলিভারি করার জন্য একটি ডিজিটাল কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান খোলেন তিনি। তবে এই পরিসেবা যাতে ব্যয়বহুল না হয়, সেটাও তার ভাবনায় ছিল। সেই ভাবনা থেকে তরুণ এই উদ্যোক্তার অনুপ্রেরণা ছিল মুম্বাইয়ের ডাব্বাওয়ালারা। অল্প পয়সায় দ্রুত খাবার ডেলিভারি করার জন্যই পরিচিত ডাব্বাওয়ালারা।
তিলকের ব্যবসায় প্রাথমিক বিনিয়োগ করেছিলেন তার বাবা। পেপার্স এন পার্সেলের আয় এখন বছরে ১০০ কোটি রুপি বা ১৪১ লাখ টাকার বেশি! সরাসরি কর্মী রয়েছে দুই শতাধিক। আর ডাব্বাওয়ালা কাজ করেন আরও ৩০০-র মতো। প্রতিদিন গড়ে ১২০০ পার্সেল ডেলিভারি করে তার প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের হিসাব বলছে, তিলকের মোট সম্পদ ৬৫ কোটি রুপির বেশি। মাসে সে আয় করে ২ কোটি রুপি!
বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় পড়াশোনা করছেন তিলক। সেখানে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে পড়াশোনা করছেন। ২০১৮ সালে ‘ইয়াং এন্টারপ্রেনার টাইটেল অ্যাট দ্য ইন্ডিয়ান মেরিটাইম অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার জেতেন তিলক। এ ছাড়া ২০২০ সালে গ্লোবাল চাইল্ড প্রোডিজি অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন তিনি।