কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায় যে একদিন সাফল্য নিয়ে আসবেই সেই নিয়ে একটি ছোট্ট গল্প বলতে চলেছি আমরা। ১৫ বছর আগের এক ছোট্ট সাপ্লাই চেন থেকে শুরু হয় ব্যবসা। আর আজ তা পরিণত হয়েছে এক বিশাল সাম্রাজ্যে! চলুন দেখি কিভাবে একটি ছোট্ট কোম্পানি আজ ১৫০ কোটি টাকার বিরাট জায়ান্টে পরিণত হয়েছে।
এই গল্পের নায়ক দুই ভাই। খুবই সাধারণ পরিবারে বেড়ে ওঠা শচীন আগরওয়াল এবং সুমিত আগরওয়াল যেভাবে কঠোর পরিশ্রম করে আজ সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেছেন তা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। তার বাবা বহু চেষ্টা করেও পরিবারের খারাপ অবস্থার উন্নতি করতে পারেননি। তবে পরিবারের সবার নয়নের মণি ছিলেন শচীন। ছোট থেকেই সবেতে স্মার্ট তিনি, একই সাথে ভালো স্টুডেন্ট হওয়ার পাশাপাশি একজন দারুণ খেলোয়াড় রূপেও নিজেকে তুলে ধরেন।
শচীন আগরওয়াল ছোট থেকেই একজন CA হতে চেয়েছিলেন আর তার ভাই সুমিত দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান IIT তে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় দুজনেই নিজেদের স্বপ্নের বলিদান দেন। এরপর দুই ভাই মিলে ঠিক করলেন যে, পরিবারের উন্নতি ঘটাবেন তারা। আর তার পরই দুজনে একসাথে কাজে লেগে পড়লেন।
আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না যে, প্রত্যেক বড় জিনিসের শুরুটা হয় খুবই ছোট কিছুর মাধ্যমে। ঠিক তেমনভাবে ২০০৬ সালে মাইক্রটেক এবং এক্সাইডের মত ব্যাটারি বিতরণের একটি ব্যবসা শুরু করেন তারা। মাত্র ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ব্যাবসার স্থাপনা করেন দুই ভাই। এরপর শুরু হয় দুজনার কঠোর পরিশ্রম।
কিছুসময় পর ব্যাঙ্গালোরে একটি আউটলেট খোলেন তারা, কিন্তু গ্রাহকের চাহিদা এতই বেশী ছিল যে, শীঘ্রই তারা আরো ৬ টি আউটলেট খুলতে বাধ্য হয়। আজ শচীন এবং তার ভাই ১৫ বছর ধরে ব্যাটারি বিতরণের ব্যবসাতে যুক্ত রয়েছেন। তারা তাদের সাফল্যের চাবিকাঠি মনে করেন গ্রাহকদের ভালো পরিষেবা দেওয়া। আর এজন্য তাদের ঘুরতে হয়েছে বহু জায়গায়, চুক্তি করতে হয়েছে অনেক ব্র্যান্ডের সাথে।
শচীন বিশ্বাস করেন যে ব্যবসা সেটাই করা উচিত যেখানে নিজেরও অনেক উৎসাহ থাকবে। এছাড়া ব্যবসা করার সময় সেই দ্রব্য নিয়ে বিশেষ জ্ঞ্যান থাকাও জরুরি। কারণ সেই পণ্য সম্পর্কে জ্ঞ্যান না থাকলে আপনি ব্যবসাতে এগিয়ে যেতে পারবেনা।
এই দুই ভাই এর গল্প, লড়াই এর, আবেগ এর, এবং অনুপ্রেরনার। অনেক নতুন ব্যবসায়ী তাদের সাফল্যের যাত্রা থেকে নিজেদের ভুলভ্রান্তি ঠিক করে সাফল্যের শীর্ষে উঠতে পারবেন বলেই ধারণা আমাদের। তবে মাথায় রাখবেন সাফল্যের কোনো শর্টকার্ট হয়না, কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায় এক্ষেত্রে একমাত্র পথ।