বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:০৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

১০ লাখ টাকার পাইলট দিয়ে প্রশাসনিক কাজ

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪

রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে পাইলট সংকট চরমে। যার সমাধানে সংস্থাটি হাত বাড়িয়েছে বিদেশি পাইলটের দিকে। অথচ দক্ষ পাইলট হয়েও উড়োজাহাজ না চালানোর বিলাস চলছে বিমানে। অথবা উড্ডয়ন করলেও বেছে বেছে করছেন। বিশ্বের বড় বড় নগরী বা যে রুটে অনেক বেশি টাকার ওভারটাইম, সেই পথে উড্ডয়ন করছেন।

অথচ পাইলটরা উড়োজাহাজ চালাবেন এটাই স্বাভাবিক। যাত্রীদের নিয়ে মেঘের রাজ্য পাড়ি দিয়ে যাওয়ার কথা এক নগরী থেকে আরেক নগরীতে। কিন্তু ককপিট (উড়োজাহাজে চালকদের অংশ) ছেড়ে পাইলটরা বসছেন চার দেয়ালে ঘেরা কক্ষের প্রশাসনিক কাজে। সেখান থেকে নানা বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন। পাইলট নিয়োগের শর্ত ঠিক করছেন, কাকে কোন ফ্লাইটে দায়িত্ব দেওয়া হবে তা নির্ধারণ বা স্ট্যান্ডবাই তালিকা তৈরি এমন সব কাজ করছেন। অথচ এসব কাজের জন্য পাইলট হওয়ার দরকার নেই। গড়পড়তা মানের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তাই যথেষ্ট।

ফার্স্ট অফিসারও পাইলট, আবার ফার্স্ট অফিসার থেকে পদোন্নতি পাওয়া ক্যাপ্টেনও পাইলট। প্রশাসনিক কাজে বসে থাকা পাইলটরা সবাই ক্যাপ্টেন। তারা একেকজন মাসে ১০ লাখ টাকা বেতন পান। ১০ লাখ টাকা বেতনের পাইলট দিয়ে প্রশাসনিক কাজ করানো হচ্ছে!

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের করপোরেট প্ল্যানিং অ্যান্ড ট্রেনিং পরিদপ্তরের পরিচালক এ কে এম আমিনুল ইসলাম একজন ক্যাপ্টেন। ডেপুটি চিফ অব ট্রেনিং পদে আছেন ক্যাপ্টেন আনিস আহমেদ। ফ্লাইট অপারেশন পরিদপ্তরের পরিচালক সিদ্দিকুর রহমানও একজন ক্যাপ্টেন। ক্যাপ্টেন ইশতিয়াক হোসাইন আছেন বিমানের ফ্লাইট অপারেশনসের চিফ অব শিডিউলিং অ্যান্ড প্ল্যানিং পদে। ডেপুটি চিফ অব শিডিউলিং পদে রয়েছেন ক্যাপ্টেন মইনুল। চিফ অব ট্রেনিং ক্যাপ্টেন তাসনীম এবং ডেপুটি বিদেশিরা চালায় বিমান চিফ অব ট্রেনিং পদে আছেন ক্যাপ্টেন তাপস।

তারা সবাই ক্যাপ্টেন। অথচ প্রশাসনে বসে আছেন। সুবিধামতো সময়ে উড্ডয়ন করেন। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র ও শনিবারের। এতে তাদের যেমন উড্ডয়ন করে মোটা অঙ্কের ওভারটাইম বাগিয়ে নেওয়া হলো আবার অন্যদিকে প্রশাসনিক পদে বসে ছড়ি ঘোরানোও হলো। এসব কর্মকর্তার মধ্যে দুই বিভাগের চারজন ক্যাপ্টেন আবার সাবেক পাইলটদের সন্তান।

অথচ বিমানে ককপিট ক্রুর চরম সংকট রয়েছে, বিশেষ করে বোয়িং-৭৮৭ ড্রিমলাইনারের। তাসনীম এবং ইশতিয়াক বোয়িং-৭৮৭ ড্রিমলাইনারের ক্যাপ্টেন। মইনুল আর তাপস বোয়িং-৭৩৭-এর ক্যাপ্টেন।

প্রতি মাসে পাইলটরা ৭৫ ঘণ্টা করে উড্ডয়ন করবেন, এটা বাঁধাধরা নিয়ম। ৭৫ ঘণ্টার বেশি হলেই ওভারটাইম পান তারা। কোনো পাইলটের ৭৫ ঘণ্টা ফ্লাইং আওয়ার (উড্ডয়ন সময়) না হলে তাকে ফ্লাইট দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। ৭৫ ঘণ্টা পর ক্যাপ্টেনরা প্রতি ঘণ্টার জন্য ৫ হাজার টাকা করে ওভারটাইম পান।

তবে প্রশাসনিক কাজে যেসব পাইলট বসে আছেন তাদের ওভারটাইমের হিসাবটা ভিন্ন। বিমানের অন্যান্য কর্মকর্তার মতো তাদেরও শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। এসব দিনে উড্ডয়ন করলে তাদের ওভারটাইম দিতে হয়। আর এই শুক্র ও শনিবার তারা বেশি উড্ডয়ন করেন। শুক্রবার লন্ডনে ফ্লাইট নিয়ে গেলেই ২৫ ঘণ্টার ওভারটাইম পান এসব ক্যাপ্টেন। এক ফ্লাইটেই তাদের হিসাবে যোগ ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। শুধু লন্ডনের ফ্লাইটেই এরকম হিসাব নয়, ম্যানচেস্টার, টরন্টো ফ্লাইটেও অনেক বেশি ওভারটাইম যোগ হয়। কারণ যেদিন ফ্লাইট যাচ্ছে সেদিন আর সেটা ফিরে আসছে না। ফিরে আসছে পরদিন। কাজেই হোটেলে ঘুমানোর সময়ও এসব ক্যাপ্টেনকে ওভারটাইম দিতে হয়। এমনকি ইস্তাম্বুল রুটের শুক্রবারের ফ্লাইটও তাদের কবজায়।

সাধারণ পাইলটদের কম উড্ডয়ন করতে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আর যারা সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেটের সদস্য তাদের এবং তাদের অনুসারীদের দেওয়া হয় দূরের ফ্লাইট। যেখানে ওভারটাইমের সুযোগ রয়েছে। নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে ক্রুদের শিডিউলিং ঠিক করার কথা। কিন্তু অনিয়ম করার সুবিধার কারণে সেই সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় না, ম্যানুয়ালি শিডিউলিং করা হয়।

স্ট্যান্ডবাই থাকার মাধ্যমেও বাড়তি টাকা পান পাইলটরা। ঈদের দিন, বড়দিন, পহেলা বৈশাখ বা মে দিবসে স্ট্যান্ডবাই থাকলেও ২০০ ডলার করে বাড়তি পান তারা। এ ক্ষেত্রেও স্বজনপ্রীতি হচ্ছে। প্রশাসনে যারা কাজ করেন শুধু তারা বা তাদের নিজস্ব লোকদেরই স্ট্যান্ডবাই ডিউটি দিয়ে রাখা হয়।

২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর ঢাকা-সিলেট-লন্ডন রুটে বিজি ২০১ ফ্লাইটে তিনজন ক্রু শিডিউলভুক্ত ছিলেন, যা ফ্লাইট পরিচালনার জন্য যথেষ্ট ছিল। অথচ চূড়ান্ত ক্রু পজিশন তালিকায় নাম না থাকার পরও ওই ফ্লাইটটি চালিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন ইশতিয়াক হোসাইন। এটা পরিষ্কার যে, ইশতিয়াক ওই ফ্লাইটের জন্য অপরিহার্য ছিলেন না। ফ্লাইটটি পরদিন ঢাকায় ফিরে আসার সময় তাতে ইশতিয়াক ছাড়া সব ক্রুই ছিলেন। তিনি ছয় দিন পর অন্য ফ্লাইট নিয়ে দেশে ফেরেন। লন্ডনে থাকার সময় ক্যাপ্টেন জয়নালের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন ইশতিয়াক। অথচ এ সময়টায় তিনি পেইড ভেকেশনে ছিলেন, যা তিনি আদায় করে নেন পাইলটদের সংগঠন বাপা এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী।

ক্যাপ্টেন ইশতিয়াকের এ ঘটনা ছোট্ট একটি উদাহরণ। এ ধরনের আরও ঘটনা রয়েছে বলে জানা গেছে। এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি প্রায়ই বিমানের খরচে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব এয়ারলাইন পাইলটস অ্যাসোসিয়েশনের (আইএফএএলপিএ) কর্মসূচিতে অংশ নেন। হজের সময় সাধারণত ছুটি দেওয়া হয় না। কিন্তু ইশতিয়াক হোসাইন পাইলটদের সংগঠন আইএফএএলপিএর কাজে আরও দুই পাইলটকে নিয়ে মেক্সিকো গিয়েছিলেন।

গত ১১ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের দিন ছিল ঢাকা-কাঠমান্ডু ফ্লাইট। ফ্লাইটটি পরিচালনা করেছেন ক্যাপ্টেন তাপস। তার সঙ্গে ফার্স্ট অফিসার হিসেবে থাকার কথা ছিল শামসের। কিন্তু শামস সেই ফ্লাইটে যাননি। তিনি কেন যাননি তা আজও এক রহস্য। পূর্বনির্ধারিত কোনো ফ্লাইটে না গেলে তার সুনির্দিষ্ট কারণ থাকতে হয়। অসুস্থতার রিপোর্ট করতে হয় বা অন্য কোনো কারণ থাকলে তা কর্তৃপক্ষকে ইমেইল করে জানাতে হয়। কিন্তু ফার্স্ট অফিসার শামস তা করেননি। বিমানের কাছে তার ইমেইল অ্যাড্রেসও নেই। তাছাড়া শামস অসুস্থ হলে তার জায়গায় যাবে স্ট্যান্ডবাই ক্যাপ্টেন বা ফার্স্ট অফিসার। স্ট্যান্ডবাই তালিকা থেকে যাওয়ার কথা ছিল ক্যাপ্টেন ইউসুফ বা ফার্স্ট অফিসার জুনায়েদের। তারাও কাঠমান্ডু যাননি। ক্যাপ্টেন তাপস সঙ্গী করেন তারই ব্যাচমেট বন্ধু ক্যাপ্টেন মাইনুল হোসেনকে। কেন ক্যাপ্টেন তাপস বন্ধুকে সঙ্গী করেন? তারা আড্ডায় মশগুল ছিলেন বলেই কি সেদিন উড়োজাহাজটি দুর্ঘটনায় পড়েছিল এমন গুঞ্জন বিমানজুড়ে। ওই দুর্ঘটনায় পড়েছিল বিমানের বোয়িং-৭৩৭ মডেলের একটি উড়োজাহাজ। কাঠমান্ডুগামী ফ্লাইট বিজি-৩৭১ উড্ডয়নের সময় চাকা ফেটে যায়। রানওয়ের মধ্যে থাকা একটি লাইটবক্সের কারণে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। টেক-অফের ঠিক আগমুহূর্তে হওয়ায় ক্যাপ্টেন উড়াল বন্ধ করতে পারেননি। এ কারণে চাকা ফেটে যাওয়া টায়ার নিয়েই উড়োজাহাজটি আকাশে উঠে যায়। বিপদ টের পেয়ে কিছুক্ষণ পরই তারা জরুরি অবতরণ করেন। অবতরণের আগে উড়োজাহাজটির ট্যাংকভর্তি জ্বালানি ফেলে দিতে হয়েছে।

পাইলটদের প্রশাসনিক দায়িত্বের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমানের এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, এমন নয় যে অতিরিক্ত পাইলট। দুয়েকজনকে সুযোগ দিলে সমস্যা কি? সমস্যা আছে। প্রশাসনিক কাজের নাম করে বসে থাকা সেই পাইলটই যদি দীর্ঘ ওভারটাইম হয় এমন রুটে নিজেই ফ্লাই করেন, তাহলে তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অন্যদের বঞ্চিত করে নিজে সুবিধা নিলে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে। দায়িত্ব বণ্টনের সময় সিন্ডিকেট সদস্যদের সুবিধা দিলে গৃহবিবাদ শুরু হয়। বিমানের অন্দরেও তাই হচ্ছে। এসব করতে গিয়ে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ছে। কিন্তু প্রকাশ্যে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলছেন না। যেন কোনোমতে নিজের কাজটুকু করতে পারলেই বাঁচেন। কিন্তু তারা মেনে নিলেও মন থেকে ভোলেন না। নিজের মনে গজরাতে গজরাতে ফ্লাইটে ওঠেন। অথচ ফ্লাইটে ওঠার কথা মানসিক প্রশান্তি নিয়ে। তা না থাকায় পাইলটরা চাপে থাকছেন। তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন।

এদিকে ক্যাপ্টেন ও পাইলটদের প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত রেখে তাদের জায়গায় নিয়োগ করা হয়েছে বিদেশি পাইলটদের। বিমানে বর্তমানে ১৫ জন বিদেশি পাইলট কাজ করছেন। তাদের বেশিরভাগই ইন্দোনেশিয়ার। বিদেশি ক্যাপ্টেনরা বোয়িং-৭৩৭ এবং ফার্স্ট অফিসাররা বোয়িং-৭৭৭ চালাচ্ছেন। তাদের পারিশ্রমিক ও ভাতা দেওয়া হচ্ছে ডলারে। সরকার যখন সব ক্ষেত্রে সাশ্রয়ের চেষ্টা করছে, তখন দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে ডলার। শুধু বিদেশে ডলারই চলে যাচ্ছে না, এ ক্ষেত্রে নানা ধরনের অনিয়ম হচ্ছে। বিমানে ক্যাপ্টেন ও পাইলটদের মধ্যে দলাদলি এখন প্রকাশ্য বিষয়। কে কোন ফ্লাইটে যাবেন তা নির্ধারণ করেন ফ্লাইট অপারেশনসের পরিচালক। এ কাজের জন্য ক্যাপ্টেনের মতো একজন বড় অঙ্কের বেতনভুক্ত লোকের প্রয়োজন হয় না। হাজার টাকার কর্মকর্তারাই এ শিডিউল ঠিক করার জন্য যথেষ্ট। বিশ্বের বড় বড় এয়ারলাইনসে এ কাজ করছেন সাধারণমানের কর্মকর্তারা।

ক্যাপ্টেন বা পাইলট হয়েও প্রশাসনিক কাজে এসে তারা স্বজনপ্রীতি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যাদের যেসব ফ্লাইটে যাওয়ার কথা না, তারাও সেসব ফ্লাইটে যাচ্ছেন। একশ্রেণির পাইলটকে ওভারটাইম বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আয় করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি অভিজ্ঞ পাইলটদের এসব ফ্লাইট থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। অভিজ্ঞ পাইলটদের কাছাকাছি আঞ্চলিক ফ্লাইট দিয়ে প্রশাসনে বসা ক্যাপ্টেন বা পাইলটদের আত্মীয়স্বজনদের দূরপ্রাচ্যের ফ্লাইট দেওয়া হয়।

এসব অনিয়মের বিষয়ে বিমান কর্র্তৃপক্ষের বক্তব্যের জন্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) থেকে শুরু করে জনসংযোগ বিভাগ পর্যন্ত যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু কেউই এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। পরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট শাখা অফিসার জানান, বিমান চলে বোর্ডের সিদ্ধান্তে। তাদের কোনো অনিয়ম থাকলে বোর্ডের বক্তব্য নেওয়াই শ্রেয়।

এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বিমানে নানা অনিয়ম চলছে। একটা রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এসব অনিয়মের ভেতর দিয়ে চলতে পারে না। ক্রু ক্রাইসিসের (সংকটের) মধ্যে বিমান পাইলট নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। গত ২৯ মে বুধবার ছিল আবেদনের শেষ সময়। প্রশাসনে যারা বসে আছেন তাদের সন্তানদের পাইলট হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর অভিযোগ উঠেছে। আগেও এ ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। এবার আবেদনের শর্তগুলো এমনভাবে ঠিক করা হয়েছে, যেন তাদের সন্তানদের নিয়োগ দিতে সুবিধা হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, কতজন পাইলট নেওয়া হবে তার সংখ্যা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ নেই। নিকটাত্মীয়দের সুযোগ দেওয়ার জন্য সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি বলে জানা গেছে।’

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের তখন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। তিনি চেষ্টা করেছিলেন মন্ত্রী যেন পদাধিকার বলে বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকতে পারেন। যাতে জবাবদিহিতার একটা ন্যূনতম জায়গা থাকে। কিন্তু তার সব পথ বন্ধ করা হয়। সরে যাওয়ার আগে জিএম কাদের টের পেয়েছিলেন বিমানের প্রায় সব পাইলট একজন আরেকজনের আত্মীয়। কর্মরত ক্যাপ্টেনদের শ্যালক বা সন্তান না হলে ফার্স্ট অফিসার পদে নিয়োগ পাওয়া কঠিন। জনগণের পয়সায় বিমান চললেও যোগ্যতা থাকার পরও অন্যরা বিমানের পাইলট হতে পারেন না। জিএম কাদের ‘পাইলটের সন্তানই পাইলট হবে’ এমন পথ বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। পাইলটদের কে কার আত্মীয় চিঠি লিখে তিনি তা জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই চিঠির কোনো জবাব দেয়নি বিমান। পরের চিঠি লেখার আগেই জিএম কাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com