এই গ্রহের সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর ও সুখী মানুষ হিসেবে পরিচিত পাকিস্তানের হুনজা উপজাতিরা। এই উপজাতিরা বুরুশো নামেও পরিচিত। তারা হিমালয়ের উচ্চভূমিতে বাস করেন।পাকিস্তানের হুনজা, চিত্রাল, নগর ও গিলগিট-বালতিস্তানের উপত্যকায় বসবাস করে এই উপজাতিরা।
হুনজা সম্প্রদায়ের গড় আয়ু জানলে আপনি রীতিমতো বিস্মিত হবেন! এমনকি তারা নাকি কখনো বৃদ্ধও হন না। হুনজা উপজাতির নারীরা ৮০ বছরেও দেখতে ঠিক ‘তরুণীর’ মতো। দীর্ঘ ও সুখী জীবনযাপনের কারণে হুনজারা সারা বিশ্বের মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে।
হুনজা সম্প্রদায়ের গড় আয়ু ১০০ বছর। আবার কেউ কেউ নাকি ১২০ বছরও ছাড়িয়ে যায়। এ পর্যন্ত বিশ্বের অনেক বিজ্ঞানী ও চিকিৎসক হুনজা উপজাতির মানুষদের নিয়ে নানা পরীক্ষা-নীরিক্ষা ও গবেষণা করে চলেছেন।
অনেক গবেষকরা তাদের আয়ু সম্পর্কে খোঁজার জন্য হুনজাবাসীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন বসবাসও করেছেন। এমনই এক বিজ্ঞানী ডক্টর রবার্ট ম্যাক্রিসন। যিনি বেশ কয়েক বছর ধরে হুনজাদের সঙ্গে বসবাস করেছিলেন।
তিনি পরবর্তী সময়ে জানান, সেখানে কয়েক বছর বসবাস করার পরও তিনি কোনো ক্যানসার, পেটের আলসার, অ্যাপেনডিসাইটিস বা অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে খুঁজে পাননি। যা সত্যিই আশ্চর্যজনক!
আরেক বিজ্ঞানী ডক্টর হেনরি কোয়ান্ডাও তাদের সঙ্গে বসবাস করেছেন। তিনি হিমবাহের পানি নিয়ে গবেষণা করেছিলেন, যা হুনজারা নিয়মিত গোসল ও পান করেন।
কোয়ান্ডা গভীর গবেষণা চালিয়েছেন ও হুনজাদের পানির উপর একটি বই লিখেন। যেখানে তিনি উপজাতির দীর্ঘায়ু হওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ বর্ণনা করেছেন।
হুনজার অধিবাসীদের আয়ুষ্কাল বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের কাছে একটি রহস্য হয়ে আছে। কেন তারা এই দীর্ঘায়ু উপভোগ করেন সেটি জেমস হিলটনের ‘লস্ট হরাইজন’ উপন্যাসের বিষয়বস্তু ছিল।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা সৌন্দর্যমণ্ডিত এই স্থানে ঘুরতে আসেন। একই সঙ্গে তারা হুনজা উপজাতিদের জীবনধারাও কাছ থেকে অবলোকন করেন। আপনিও চাইলে ঘুরে আসতে পারেন পাকিস্তানের হুনজা ভ্যালি থেকে। পর্যটকদের জন্য সেরা এক গন্তব্য এটি।
হুনজা উপত্যকায় চাইলে যে কোনো সময়ই ভ্রমণে যেতে পারেন পর্যটকরা। তবে হুনজা ভ্রমণের সর্বোত্তম সময় হলো এপ্রিল থেকে অক্টোবর। কারণ গরমে সেখানে তাপমাত্রা সর্বাধিক ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠে।
রাকাপোশি চূড়া, করিমাবাদ, আলিতিত দুর্গ, বাল্টিত দুর্গ, আত্তাবাদ লেক, রাশ লেক, সোস্ট বর্ডার, গুলমিত জমা দিন, বোরিথ লেক ও ঈগল নেস্ট ডুইকার।
সূত্র: পাকিস্তান ট্যুর এন ট্রাভেল