সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ অপরাহ্ন

হিমালয়ের দেশ নেপাল

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩

গোটা বিশ্বের পর্বতারোহীদের পছন্দের দেশ নেপাল। অন্নপূর্না কিংবা এভারেস্টে জয়ের জন্য সারা বছরই তারা এখানে ভিড় করেন। এছাড়াও এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য, খাবার যে কোনো পর্যটককেই মুগ্ধ করে।

কাঠমান্ডুর পর্যটন এলাকার নাম থামেল:

এটি কাঠমান্ডুর পুরোনো এলাকার দিকে অবস্থিত। প্রতিটি গলিতে হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং কেনাকাটার প্রচুর দোকান আছে। বেশির ভাগ ভ্রমণকারী থামেলেই থাকেন। ইন্টারনেট ঘেঁটে দেশে বসেই দেখে নিতে পারেন আপনার বাজেট অনুসারে হোটেলগুলোর অবস্থা। এ ছাড়া ওয়ো (OYO) মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করেও খুঁজে নিতে পারেন আপনার পরিকল্পনামতো পছন্দের হোটেল। এ হোটেলগুলো আপনি প্রতিদিন বাংলাদেশি টাকায় ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে পাবেন।

হোটেলের আশপাশেই পেয়ে যাবেন খাবার রেস্তোরাঁ। অনেক সময় রেস্তোরাঁগুলোতে যে খাবার দেয় তা দুজনে ভাগ করে খাওয়াও সম্ভব। কাঠমান্ডু পৌঁছে ইন্টারনেট প্যাকেজসহ একটি মোবাইল সিমকার্ড কিনে নিন। নেপালে ফোনকলের খরচ অনেক বেশি। ইন্টারনেট থাকলে বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে ফ্রি যোগাযোগের সুযোগ পাবেন।

পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের স্থান পোখরা

নেপাল পর্বতারোহীদের পছন্দের দেশ হলেও সাধারণ পর্যটরাও এখানে যান হিমালয়ের পাশ থেকে সুর্যোদয় কিংবা সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে। অন্নপূর্না পর্বতের তুষার শুভ্র চূড়া দেখতেও কেউ কেউ ভিড় করেন সেখানে।

কাঠমান্ডু থেকে পোখারা বাসে যাতায়াতের ব্যবস্থা আছে। কাঠমান্ডুতে যে হোটেলে উঠবেন তাদের বললেই তারা আপনাকে সব ব্যবস্থা করে দেবে। অথবা আপনিও একটু খবর নিয়ে পোখারা যাওয়ার সব ব্যবস্থা করে ফেলতে পারেন গুগলের সাহায্য নিয়ে। পোখারা যাওয়ার পথে রাস্তার পাশের খাবারের রেস্তোরাঁগুলোতে বাস থামবে। সেগুলোতে খাওয়াদাওয়াসহ আপনার প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিতে হবে আপনাকে। পোখারার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আছে ফেওয়া হ্রদ ও তার আশপাশের এলাকা, ওয়ার্ল্ড পিস প্যাগোডা, ডেভি’স ফলস, ভারাহি মন্দির ও বেশ কিছু জাদুঘর।

আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা ঘুরে বাসযাত্রায় বেশ আনন্দ পাবেন। পোখারা শহর অনেক গুছানো। সেখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য মুগ্ধ করবে আপনাকে। পোখারা পৌঁছে সময় পেলে হোটেলে ব্যাগ বোঁচকা রেখে চলে যান লেকের ধারে। লেকের পাড়ে বসে, পাহাড়ের আড়ালে সূর্যাস্ত দেখা অসাধারণ স্মৃতি হিসেবে থাকবে আপনার আজীবন। পোখারার মূল আকর্ষণ ফেওয়া হ্রদ এবং এর ওপর করা প্যারাগ্লাইডিং। পাহাড়ের ওপর থেকে ফেওয়া হ্রদের ওপর দিয়ে উড়ে বেড়ানোর সময় পুরো পোখারা উপত্যকা দেখতে পাবেন। এই হ্রদের পাশ দিয়ে যাওয়া সড়কের পাশে পাবেন পুরো ট্যুরিস্ট জোন এবং হোটেল ও দোকানপাট। মূল শহরটি এই লেক রোড থেকে বেরিয়ে ভেতরের দিকে।

পোখারার সারাংকোট থেকেও আপনি দেখতে পারেন হিমালয়ের কোলে সূর্যোদয়। ভোর হওয়ার আগে আপনাকে যেতে হবে সারাংকোট। মাচাপুচ্ছুরে পর্বতের গায়ে সূর্যোদয় দেখতে বহু মানুষ আসে এখানে। আগের মতোই এখানেও হোটেলে থাকা–খাওয়া এবং ঘোরাঘুরির সব ব্যবস্থা করতে পারবেন। হোটেলের জন্য এখানে খরচ পড়বে ৬ হাজার ৮ হাজার বাংলাদেশি টাকার মতো।

এছাড়া কাঠমান্ডু, পাটান কিংবা ভক্তের মতো মধ্যযুগীয় শহরে ঘুরে বেড়াতেও পছন্দ করেন অনেকে। গোটা নেপালে ছড়িয়ে আছে হাজারো বছরের পুরনো মঠ আর বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের নিদর্শণের চিহ্ন, মন্দির।

পৃথিবীর যেসব দেশে সহজে একা ভ্রমণ করা যায় তার মধ্যে নেপাল অন্যতম। এ দেশে যেতে ভিসার কোনো ঝামেলা নেই। ওই দেশে পৌঁছে এয়ারপোর্টে ভিসা নিতে হয়।এ দেশের থামেল এবং পোখারার ট্রেকিংয়ের দোকান, বেকারি কিংবা অন্যান্য দোকানে ঘুরতে ঘুরতে মনে হতে পারে আপনি ডিজনিল্যান্ডে আছেন।

নেপালের দক্ষিণাংশের জীবন আবার সম্পূর্ণই ভিন্ন রকমের। সেখানে বন্য জীবন এবং পশু-পাখি অনেক পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। এ অঞ্চলে পর্যটকদের জন্য রয়েছে সাফারি পার্কও।

মোটরসাইকেল, গাড়ি কিংবা পর্যটন বাস –যাতে করেই আপনি দেশটি ভ্রমণ করুন না কেন এখানকার পথে-ঘাটে ছড়িয়ে থাকা প্রাকৃতিক দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। সারাবছর এখানে পর্যটকের আনাগোনা থাকলেও অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস এখানে ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে ভালো সময়। কারণ এ সময় আকাশ পরিষ্কার থাকে, হিমালয়ও তার অপূর্ব সৌন্দর্য তুলে ধরে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com