হিট ওয়েভের কারণে প্যাসিফিক উপকূলে ১০০ কোটির বেশি সামুদ্রিক প্রাণি মারা গেছে। ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার মেরিন বায়োলজিস্ট ক্রিস্টোফার হার্লি বলেন, সাম্প্রতি হিট ওয়েভে সমুদ্রের তলদেশের তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। স্থলভাগ বরাবর পাথুরে এলাকাগুলোতেও একই তাপমাত্রা দেখা যায়। যার প্রভাব পড়েছে সামুদ্রিক প্রাণীর উপর। এদিকে, পশ্চিম কানাডার অধিকাংশ অঞ্চলে জুনের শেষ সপ্তাহে যে অসহ্য গরম, সামুদ্রিক প্রাণির ওপর এর বিরুপ প্রভাব রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার প্যাসিফিক স্যামন ইকোলজি অ্যান্ড কনজার্ভেশন ল্যাবরেটরির পরিচালক স্কট হিঞ্চের মতে, সাম্প্রতিক এই হিট ওয়েভে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সোকাই, কোহো ও চিনুকের মতো তরুণ স্যামন।
স্কট হিঞ্চ বলেন, জীবন চক্রের এক থেকে দুই বছর তারা মিঠা পানিতে বাস করে। এই হিট ওয়েভ ও জলবায়ু পরিবর্তন তাদের ওপর সবচেয়ে বিরুপ প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে। তরুণ স্যামন দুই বছর পর্যন্ত মিঠা পানিতে বাস করে এবং এই পানির উষ্ণতা বেড়ে গেলে তাদের জীবনচক্র মারাত্মক প্রভাবিত হয়। ভু-উপরিস্থ পানির উষ্ণতা ইতিহাসের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাতাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণেই সাধারণত এ উষ্ণতা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত থাকছে। হিট ওয়েভ পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলছে।
জলবায়ু পরিবর্তন, মাইনিং ও ফ্রেজার নদীতে ভাঙনের মতো বেশ কিছু কারণে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার স্যামন প্রজাতি আগে থেকেই ঝুঁকিতে আছে। ফ্রেজার বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্রজনন নদী এবং ২০১৯ সালে এতে ভাঙনের বিষয়টি ধরা পড়ে।
কমিটি অন্য দ্য স্ট্যাটাস অব এনডেঞ্জার্ড ওয়াল্ডলাইফ ইন কানাডা সাকিনো সোকাই, ওকানাগান চিনুক ও ফ্রেজার সোকাইয়ের কিছু প্রজাতিকে বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। ইন্টিরিয়র ফ্রেজার কোহো এবং ফ্রেজার সোকাইয়ের কিছু প্রজাতিকেও বিপন্ন তালিকায় ফেলা হয়েছে এবং চিনুকের অবস্থা মূল্যায়ন করে দেখা হচ্ছে।
স্যামনের জন্য আদর্শ তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এবং এই তাপমাত্রায় তারা দীর্ঘ সময় থাকতে পারে। উষ্ণ পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ অনেক কম থাকে এবং উপরিভাগের চেয়ে পানির তলদেশ অনেক বেশি শীতল। কিন্তু খাবারের সন্ধান করতে হয় উপরিভাগেই। এছাড়া প্ল্যাঙ্কটন ও অন্য ছোট মাছের জন্যও উষ্ণতা ক্ষতিকর এবং এগুলো স্যামনের গুরুত্বপূর্ণ খাবার।