হজ এজেন্সিগুলো সময়মত ভিসা না করায় যে হজযাত্রীরা রওনা হতে পারেননি, তাদের সৌদি আরবে পাঠাতে অতিরিক্ত ফ্লাইটের শিডিউল পেয়েছে এয়ারলাইন্সগুলো। ভিসা নিয়ে জটিলতাও আর নেই বলে হজ এজেন্সিগুলো জানিয়েছে।
ফলে বাংলাদেশে থেকে হজ ফ্লাইটের কারণে আর সৌদি যেতে সমস্যা নেই জানিয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার বলেছেন, “হজ ফ্লাইট নিয়ে আর কোনো শঙ্কা নেই। যতটুকু ক্যাপাসিটি লস হয়েছে, তা কভার করতে অতিরিক্ত ফ্লাইটের জন্য সৌদি আরবের অনুমোদন পাওয়া গেছে।”
এ বছর হজ হবে ২৭ জুন। বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রা শুরু হয় গত ২১ মে ভোর থেকে। প্রথম দিন রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স বিমানের একটি ফ্লাইটেই ভিসা জটিলতায় যেতে পারেননি ১৪০ জন হজযাত্রী।
তাদের জন্য ফ্লাইটে নির্ধারিত আসন বরাদ্দ হলেও ভিসা না হওয়ার কারণে তারা যেতে পারেননি। তাতে ওই আসনগুলো ফাঁকা রেখেই উড়তে হয় বিমানের উড়োজাহাজটিকে। পরের দিনগুলোতে এই সংখ্যা আরও বাড়ে।
বিমানকে অনেকগুলো ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে, উড়ে যাওয়া ফ্লাইটগুলোতে অনেক আসন ফাঁকা গেছে। এভিয়েশনের পরিভাষায় এ সমস্যাকে বলা হচ্ছে ‘ক্যাপাসিটি লস’।
তবে হজ ফ্লাইট শুরুর ঠিক এক মাসের মাথায় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চিন্তার আর কারণ নেই। বৃহস্পতিবার উড়ে যাবে এ মৌসুমের সর্বশেষ হজফ্লাইট।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম দুই সপ্তাহ আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, ভিসা না থাকায় গত ১ জুন পর্যন্ত ৬ হাজার ২২৮ জন হজযাত্রী ফ্লাইটে উঠতে পারেননি। বাতিল করতে হয়েছে ছয়টি ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইট।
এ সমস্যার জন্য এজেন্সিগুলোকে দায়ী করে বিমানের এমডি বলেছিলেন, “এজেন্সিগুলো তাদের সুবিধামত কোথায় সস্তা বাড়ি ভাড়া পাওয়া যাবে, কোথায় কম টাকায় রাখা যাবে, কোথায় ফিতরা পাওয়া যাবে, এসব খুঁজছে। ভিসা না পাওয়ার কারণও এটা। বাড়ি ভাড়া দেখাতে না পারলে সৌদি কর্তৃপক্ষ ভিসা দেবে না। এটা দেশের হজ-ওমরাহ নীতির স্পষ্ট লঙ্ঘন।”
তবে সমস্যা এখন কেটেছে জানিয়ে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বুধবার বলছেন, হজ ফ্লাইট নিয়ে যে শঙ্কা ছিল, সেটি এখন আর নেই। প্রত্যেক হজযাত্রী সৌদি যেতে পারবেন।
হাবের দেওয়া তথ্য বলছে, ২০ জুন পর্যন্ত সৌদি কর্তৃপক্ষ ১ লাখ ২৩ হাজার ১৫০টি ভিসা ইস্যু করেছে। এর মধ্যে ২০ জুন রাত পর্যন্ত সৌদি আরবে গেছেন ১ লাখ ৭ হাজার ১০২ জন।
এবারের হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে ৬০৩টি হজ এজেন্সি। হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ২২ হাজার ২২১ জন।
মোট হজযাত্রীদের মধ্যে ৬১ হাজার ১১১ জনকে সৌদি আরবে পৌছানোর দায়িত্ব বিমানের। বাকি অর্ধেক হজযাত্রী পরিবহন করছে সৌদি আরবের বিমান সংস্থা সৌদিয়া ও ফ্লাই নাস।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার মঙ্গলবার জানান, ওই সময় পর্যন্ত মোট ৫৭ হাজার ৫ শ জনকে সৌদি আরবে পৌঁছে দিয়েছে বিমান। ২২ জুন বিমানের প্রি-হজ ফ্লাইট শেষ হবে। এর মধ্যে বাকিদেরও সৌদি আরবে পৌঁছে দেওয়া হবে।
হাব সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, এবছর সবচেয়ে বেশি ক্যাপাসিটি লস হয়েছে বিমানের। নির্ধারিত হজ ফ্লাইটে যাত্রী না পাওয়া এবং ফ্লাইট বাতিল হওয়ার কারণে ক্যাপাসিটি লস কমাতে বাণিজ্যিক ফ্লাইটেও হজযাত্রী পরিবহন করছে এয়ারলাইন্সটি। শেষ পর্যন্ত ৭টি অতিরিক্ত ফ্লাইটের অনুমতি পেয়েছে বিমান।