আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, সরকার ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের স্টারলিঙ্ক পরিষেবা নিয়ে একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প শুরু করতে পারে। গতকাল বুধবার স্পেসএক্সের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স ম্যানেজার জোয়েল মেরিথ ও গ্লোবাল লাইসেন্সিং অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন ম্যানেজার পার্নিল উর্ধাওরেসের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের বাণিজ্যিক রকেট পরিষেবা সংস্থা স্পেসএক্স এরই মধ্যে লো আর্থ অরবিটে প্রায় ৪ হাজার ৫১৯টি স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে। ৬০টি দেশে ১৫ লাখের বেশি গ্রাহককে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা দিচ্ছে এ সংস্থা।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশ গ্রামীণ ও দুর্গম এলাকায় বসবাসরত মানুষের মধ্যে ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে স্পেসএক্স স্টারলিঙ্ক পাইলট প্রোগ্রাম শুরু করার পরিকল্পনা করেছে।
স্পেসএক্স স্টারলিঙ্কের কর্মকর্তারা রাজধানীর আইসিটি টাওয়ারে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় স্টারলিঙ্ক ইন্টারনেট পরিষেবার মান দেখান। আইসিটি টাওয়ারের ছাদে একটি স্টারলিঙ্ক অ্যানটেনা বসিয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী ইন্টারনেটের গতি প্রত্যক্ষ করেন। প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, এ সময় প্রথমবার ১৫০ এমবিপিএস ডাউনলোড গতি পেয়েছেন তিনি। দ্বিতীয়বার পেয়েছেন ৫০০ এমবিপিএস।
প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ককে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার জন্য বিশেষ আমন্ত্রণ জানাতে চান—সেটি প্রতিনিধি দলকে বলেছেন।
এর আগে গত বছরের মে মাসের মাঝামাঝিতে স্পেসএক্সের ইন্টারনেট পরিষেবা আরো বিস্তৃত করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। স্পেসএক্সের টুইটে স্টারলিঙ্কের সেবা কতটুকু বিস্তৃত হচ্ছে, সে বিষয়ে একটি মানচিত্র শেয়ার করা হয়। এতে দেখা যায়, বাংলাদেশে ২০২৩ নাগাদ স্টারলিঙ্কের সেবা সহজলভ্য হবে।
স্টারলিঙ্কের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে, গত বছরই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ থেকে প্রি-অর্ডার গ্রহণ করেছে। ৯৯ ডলারে প্রি-অর্ডারের সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সমস্যা দেখা দিলে পুরো অর্থ রিফান্ড করারও আশ্বাস দেওয়া হয় ওয়েবসাইটটিতে।
এছাড়া গত ১৫ জুলাই রাতে ঠাকুরগাঁওসহ আশপাশের এলাকায় ফোঁটা ফোঁটা আলোর চলন্ত বিন্দুর দৃশ্য দেখা যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় সে দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে। আকাশের পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে প্রায় ১০ মিনিট এ দৃশ্য দেখা যায়। পরে জানা যায়, এটি ইলন মাস্কের ‘স্টারলিঙ্ক প্রজেক্টের স্যাটেলাইট ট্রেন’। ৬০টি স্যাটেলাইটের দীর্ঘ সারি দেখা গিয়েছিল।
২-৩ মাসের ট্রায়াল দেখে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ স্টারলিংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আশা করা হচ্ছে, আগামী শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত একটি স্টার্টআপ ইভেন্টে স্টারলিংক টিম যোগ দেবে।