এসেছে। তাদের সঙ্গে যোগ হয়েছে গ্রামের কিছু শিশু-কিশোর। কেউবা আমার মাছ ধরছে। নৌকায় চড়ে খালে ঘুরে বেড়াতেও দেখা গেলো। একদল তরুণ কাশফুলের বনে খেলছে ফুটবল।
এমন দৃশ্যের দেখা মিলবে ঢাকা জেলার কেরাণীগঞ্জ উপজেলার কোন্ডা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আইন্তা সারিঘাটে গেলে। ঢাকার আশেপাশের মধ্যে ভ্রমণের নতুন গন্তব্য হয়েছে এটি। বসুন্ধরা রিভারভিউ আবাসিক এলাকার শেষ প্রান্তে সারিঘাটের অবস্থান।
যারা ভ্রমণের নতুন এই গন্তব্যের কথা শুনেছেন তারা দলবল নিয়ে আসছেন। ছুটির দিনে এখনে ভ্রমণ পিপাসুদের ঢল নামে। কেন? কারণ অনেকগুলো। এরমধ্যে প্রথমটা হলো এখানে স্বচ্ছ পানির খাল আছে। যেই পানি বুড়িগঙ্গা নদী থেকে এসেছে। খালের টলটলে স্বচ্ছ পানিতে দিনভর গোসল করতে পারবেন। এছাড়াও খালের দুই পাড়ের সৌন্দর্য্য আপনাকে মোহিত করবে। এখানে ভ্রমণের অন্যতম আরেকটা আকর্ষণ কাশবন। বর্ষায় খালের পাড়ের বালিয়ারিতে কাশফুল ফোটে। কাশফুলের টানেও এখানে অনেকে আসেন। এছাড়াও যারা বসুন্ধরা রিভারভিউ আবাসিক এলাকায় বেড়াতে আসেন তাদের সকালে-বিকালে এখানে আসতেই হবে। কারণ এত সুন্দর জায়গায় না এসে থাকা যায়?
সারিঘাটে নিয়মিত ভ্রমণে আসেন খোন্দকার সালাউদ্দিন তনু। তিনি বলেন, আমার এক আত্মীয় বসুন্ধরা রিভারভিউ আবাসিক এলাকায় থাকেন। তাদের বাসায় বেড়াতে এলে সারিঘাট নিয়ে আসেন। প্রথম দেখাতেই জায়গাটা ভালো লেগেছে। এখানকার খালের স্বচ্ছ পানিতে গোসল করা যায়। আর কাশফুলের বনে হারিয়ে যেতে কার না ভালো লাগে। তাই তো বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে নিয়মিত আসি।
ঢাকা থেকে দলবল নিয়ে সারিঘাটে গোসল করতে এসেছিলেন মশিউর। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী বলেন, করোনার কারণে দূরে কোথাও ভ্রমণে যাওয়ার সুযোগ নেই। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। ঘরে থাকতে থাকতে দম বন্ধ হয়ে যাবার জোগার। তাই বন্ধুদের নিয়ে গ্রামের প্রকৃতিতে গোসল করতে এসেছি। জায়গাটা খুবই সুন্দর।
সারিঘাটের চা বিক্রেতা তোফাজ্বল জানান, বসুন্ধরা রিভারভিউ আবাসিক এলাকায় বসতি গড়ে ওঠার আগেই সারিঘাট ছিল। ছিল খালও। কিন্তু তখন অতটা জনপ্রিয় স্থান ছিল না। বর্ষায় খালে পানি থৈ থৈ করত। শীত শুকিয়ে যেতো। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড খালটি সংস্কার করেছে। এর সঙ্গে বুড়িগঙ্গা নদীর সংযোগ আছে। এখন সব সময়ই পানি থাকে এখানে।
সরকারি খাল তাই এখানে অনেকেই মাছ ধরেন। ঢাকা থেকেও অনেকে ছিপ, বড়শি টোপ নিয়ে আসেন। মাছ ধরার আনন্দ আর গ্রামের প্রকৃতিতে সময় কাটাতে ভালো লাগে।
কীভাবে যাবেন
পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে সারিঘাটের দূরত্ব চার কিলোমিটার। বসুন্ধরা রিভারভিউ আবাসিক এলাকার মূল ফটক থেকে দুই কিলোমিটার। এই পথটুকু অটো রিকশায় যাওয়া যায়। তরুণরা চাইলে হেঁটেও যেতে পারেন।
সারিঘাটে যেতে সুন্দর একটা রাস্তা পাবেন। এখানে আছে বসুন্ধরা রিভারভিউ আবাসিক এলাকার অফিস, আদ দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আর্মি ক্যাম্প ইত্যাদি।
তাই যেকোনো দিন ঢু মারতে পারেন, মোটরসাইকেল, বাই-সাইকেল কিংবা প্রাইভেট কারে। যা খুশি নিয়ে যেতে পারেন। পাকিংয়ের কোনো ঝামেলা নেই। দিতে হবে না পার্কিং ফি। আর খালে সাতার কাটতে, কাশবনে ঘুরতেও খরচ হবে না কোনো। শুধু প্রকৃতি দেখার চোখ থাকতে হবে আপনার।