স্পেনে অভিবাসীদের নিয়মিত হওয়ার নতুন সুযোগ সৃষ্টি হলো। আসলে আরও সহজে স্পেনের নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে। দুই বছর স্পেনে বসবাস করলে ন্যূনতম ছয় মাসের কর্মকাল প্রমাণসহ সহজ শর্তে রেসিডেন্ট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন যে কেউ। এ ক্ষেত্রে কোনো কন্ট্রাক্টের প্রয়োজন হবে না। ছয় মাসের কম কাজের প্রমাণাদি ন্যূনতম কাজের ক্ষেত্রে শিথিলযোগ বলে বিবেচিত হবে। গত ২৫ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে [https://jf-abogados.com/2021/04/16/sentencia-del-tribunal-supremo-1184-2021-de-25-de-marzo-de-2021-arraigo-laboral/ ] এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নতুন এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার থেকে মুক্তি মিলবে হাজারো কাগজপ্রত্যাশী প্রবাসীদের। এতে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী, শিক্ষার্থী, জব ভিসা, তার্কেটা কুমনিনুটারিওসহ বিভিন্নভাবে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁরাই এ সুযোগ পাবেন। কাজের কন্ট্রাক্ট নিয়ে দুর্নীতি–অনিয়ম এবং অধিক অর্থ নিয়ে কন্ট্রাক্টের ভোগান্তি আর হয়রানি অনেকাংশেই বন্ধ হবে। পাশাপাশি কমবে ইমিগ্র্যান্ট–প্রত্যাশীদের আবেদনে দীর্ঘসূত্রতা ও জটিলতা। এ ছাড়া স্পেনিশ ভাষা শেখার কোর্সের ব্যাপারটিও অনেকটা শিথিল থাকবে। অ্যারিগো লেবরালের (arrigo leboral) আওতায় এ সুযোগ পাবেন যাঁরা, স্পেনে অবস্থানের দুই বছরের যেকোনো ছয় মাস আট বা চার ঘণ্টা কর্মকাল দেখাতে সক্ষম হবেন। কোনো কন্ট্রাক্টের প্রয়োজন হবে না। তবে সাধারণ নিয়মিতকরণের পদ্ধতি অ্যারিগো সোশ্যালের (aarigo social) মতোই তিন বছর স্পেনে থাকার প্রমাণপত্রসহ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, কাজের কন্ট্রাক্টসহ আবেদন করতে হবে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও মানবাধিকার সংস্থা দাবি জানিয়ে আসছিল স্পেনে ইমিগ্র্যান্ট ঘোষণার জন্য। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিভিন্ন বাধ্যবাধকতা থাকার কারণে ইমিগ্র্যান্ট ঢালাওভাবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি স্পেন। যদিও বর্তমান সোশ্যালিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকার সব সময় অভিবাসীবান্ধব। ২০০৫ সালে সহজ শর্তে সাধারণ নিয়মিতকরণের ঘোষণা দিয়েছিল, যা ছিল সর্বশেষ। তারাও চাইছিল, এ রকম কোনো পদ্ধতিতে সহজ শর্তে দেওয়ার সুযোগ লাভ করুক অভিবাসীপ্রত্যাশীরা। এ ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কোনো বাধা হিসেবে দাঁড়ালনি।
যদিও অ্যারিগো লেবরাল পদ্ধতি চালু ছিল ২০১১ সাল (red-557/2011) থেকে, আইনি জটিলতার কারণে বেশির ভাগই এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। এবারের সহজীকরণের কারণে তা এখন অনেকটা ইমিগ্র্যান্ট–প্রত্যাশীদের নতুন দ্বার খুলল।
বেসরকারি তথ্যমতে, প্রায় দুই লাখ ইমিগ্র্যান্ট–প্রত্যাশীর মধ্যে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ইন স্পেনের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সুন্দর বলেন, অবশ্যই একটি যুগান্তকারী রায়। এতে অনেক ভুক্তভোগী বাংলাদেশি উপকৃত হবেন। স্পেন বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি রাসেল হাওলাদার দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁদের দাবির প্রতিফলন ঘটল বলে মন্তব্য করেন।