স্প্যানিশ লীগের ফুটবল খেলা শুরু হলেই হৈ হৈ রব পড়ে যায় সব জায়গায়। শুধু কি ফুটবল? এখানকার চমৎকার আবহাওয়া, সমুদ্র সৈকত, সুস্বাদু খাবারের জন্য অনেকেরই ভ্রমণ তালিকায় থাকে এই দেশটির নাম।
চলুন জেনে নিন স্পেন নিয়ে আরো কিছু তথ্য-
১.
স্পেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র যার আয়তন ৫,০৫, ৯৫৫ বর্গ কিলোমিটার। ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম আইবেরীয় উপদ্বীপের ৮৫ শতাংশ পড়েছে স্পেনে আর বাকি ১৫ শতাংশ পর্তুগালের দখলে।
২.
স্বাস্থ্য সচেতনতায় আর ত্বকের যত্নে অনেকেরই অলিভ অয়েল ব্যবহার করেন। বিশ্বের ৪৪ শতাংশ অলিভ অয়েল আসে স্পেন থেকে। সবচেয়ে বেশি অলিভ অয়েল উৎপন্ন হয় স্পেনের আন্দালুসিয়ায়।
৩.
চাইনিজের পর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কথা বলা হয় স্প্যানিশ ভাষায়।
৪.
স্প্যানিশরা অনেকদিন বাঁচেন। অবাক হচ্ছেন? আসলেই তাই, জাপানের পর স্পেন হচ্ছে পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বাধিক গড় আয়ুর দেশ। স্প্যানিশদের গড় আয়ু ৮৩ বছর। স্প্যানিশ নারীদের গড় আয়ু আবার পুরুষদের চেয়ে বেশি। এখানকার নারীদের গড় আয়ু ৮৫ বছর, আর পুরুষদের গড় আয়ু ৭৯ বছর।
৫.
সেনসাস স্ট্যাটিস্টিক্স এর সমীক্ষা অনুযায়ী ২০৫০ সাল নাগাদ স্পেনই হবে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষের দেশ। বর্তমানে এখানকার ৪০ শতাংশ মানুষের বয়স ৬০ বছরের ওপরে।
৬.
ভারতবর্ষ কিংবা চায়নায় গেলে অনেক ধরণের সংস্কৃতির দেখা মেলে। ঠিক এরকমটা দেখা যাবে স্পেনে গেলেও। এখানকার প্রত্যেকটি অঞ্চলে আলাদা আলাদা সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের দেখা মিলবে। কাতালোনিয়া এবং বাস্কের অধিবাসীদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি এবং নানারকম প্রথা। আর তাই কাতালোনিয়া এবং বাস্কের অধিবাসীরা স্বাধীনতা চান, তারা চান স্পেন থেকে আলাদা হয়ে সম্পূর্ণ আলাদা একটি রাষ্ট্র হোক যেখানে তাদের জাতিগত কোন বৈষম্যর মুখোমুখি হতে হবে না।
৭.
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ফুড ফাইট ফেস্টিভ্যাল ‘টোম্যাটিনা’ উৎসব প্রতি বছর বেশ ঘটা করে পালন করা হয় স্পেনে। ভূমধ্যসাগর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে পূর্ব স্পেনের বালেন্সিয়া প্রদেশের শহর বুনিয়ল-এ অনুষ্ঠিত হয় এই উৎসব। ১৯৪৫ সাল থেকে আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হয়ে আসা এ উৎসবে প্রতিযোগীরা একে অন্যের শরীরে টমেটো ছুঁড়ে দেয়। এ উৎসবের শুরুর ঘটনা নিয়ে একটি জনপ্রিয় কাহিনী প্রচলিত আছে। একবার শহরে একটি উৎসব চলার সময়ে শহরের জনগণ কোন কারণে রাগের বশে এখানকার কাউন্সিলরকে টমেটো দিয়ে আক্রমণ করেন। সেসময় থেকে এটা এমনই জনপ্রিয় হয়ে যায় যে, প্রতি বছর এখানকার অধিবাসীরা মজা করার জন্য টমেটো যুদ্ধের আয়োজন করে থাকেন।
৮.
স্পেনে মানুষ শুধু ফুটবল খেলা দেখতে যান তাই-ই নয়। এখানকার সমুদ্র সৈকত, প্রকৃতি আপনাকে মন্ত্রমুগ্ধ করতে বাধ্য। প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক পর্যটককে স্বাগত জানায় এই দেশটি। ২০১৭ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৮২ মিলিয়ন পর্যটক স্পেন সফর করেছেন।
৯.
আপনি যদি সমস্ত স্প্যানিশ সৈকত প্রসারিত করে এক করেন তবে এটি ৮ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। সমগ্র ইউরোপ থেকে অনেকেই স্পেনে আসেন এসব সৈকতে রৌদ্রঝলমলে একটা গ্রীষ্ম উপভোগ করার জন্য।
১০.
চায়না এবং ইতালির পর স্পেনে ইউনেস্কো অনুমোদিত বিশ্বের ৪৭টি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট রয়েছে। আপনি যদি ইতিহাস নিয়ে আরো গভীর ধারণা রাখতে চান, ঐতিহাসিক স্থানগুলো দেখতে চান, তবে এ তালিকায় স্পেনের নাম আপনাকে রাখতেই হবে।