স্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশ, ভারত, চীন প্রভৃতি দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা শিক্ষার্থীর বড় একটি অংশ ঝরে পড়ছে। অর্থ সংকট এর মূল কারণ। ফলে বিরাটসংখ্যক এ উদ্যমী তরুণ-তরুণীর মেধা ব্যয় হচ্ছে অডজবে। কেউ রেস্টুরেন্ট, আবার কেউ গ্রোসারি কিংবা খুচরা স্টোরে কাজ নিচ্ছে। প্রত্যাশা অনুযায়ী পারিশ্রমিক তারা পাচ্ছেন না ওয়ার্ক পারমিট না থাকায়। এ অবস্থায় তারা কলেজ/ভার্সিটি থেকে ঝরে পড়ছেন।
ভিসার নিয়ম লঙ্ঘন করায় বহিষ্কারের ঝুঁকিতেও যাচ্ছেন তারা। এরই মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে এক বাংলাদেশিসহ কয়েকজনকে গ্রেফতারের পর সরাসরি ফ্লাইটে উঠিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। অর্থাৎ উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সমাদৃত শিক্ষা লাভের সুযোগ হাতছাড়া করে নিজ নিজ মেধাকে মানবতার কল্যাণের পরিবর্তে ‘হুমকিতে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, প্রতি বছর ৫ লাখের অধিক ছাত্রছাত্রী বিদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চীন ও ভারতীয়।
গত বছর বাংলাদেশ থেকেও এসেছেন ১০ হাজার ৫৯৭ জন। অপরদিকে ভারতীয় এসেছেন ১ লাখ ২৫ হাজার। স্টুডেন্ট ভিসাপ্রাপ্তরা বিবাহিত হলে সঙ্গে তার স্বামী/স্ত্রী এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানও আসতে পারেন। তারা ভিসার আবেদনের সময় নিজের আর্থিক সক্ষমতার পক্ষে ডকুমেন্ট সাবমিট করেন। অনেকে আসার সময় মোটা অঙ্কের অর্থও সঙ্গে আনেন। পরে তারা অভিভাবককে বিব্রত করতে চান না বলে অনেকেই পরিচিতজনের মাধ্যমে কাজে লিপ্ত হন। অভিভাবককে দেখাতে চান যে নিজে অর্জিত অর্থে লেখাপড়া করছেন।
এটি বাস্তবে সম্ভব হলেও কর্তৃপক্ষ যখন জানতে পারে যে, বেআইনিভাবে ছাত্রটি কাজ করছে, তখন সঙ্গে সঙ্গে তার ভিসা বাতিল হয়ে যায়। ভিসা বাতিল হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ছাত্রছাত্রীর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস একেবারেই অসম্ভব হয়ে ওঠে। তবে যারা ভিসা বহাল থাকাবস্থায় সিটিজেনকে বিয়ের মাধ্যমে কিংবা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা অথবা নির্যাতিত হিসেবে স্ট্যাটাস অ্যাডজাস্টের সুযোগ পান, তাদের কথা আলাদা।
অন্যথায় ভিসা লঙ্ঘনকারীরা কখনোই স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগ পান না। উদ্ভূত পরিস্থিতির আলোকে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’র চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, রীতি অনুযায়ী ভিসা নিয়ে শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে আসে এবং সে রীতির বরখেলাপ করে অনেকে বেআইনি পন্থায় কাজে লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করে। অথচ কাজ করার জন্য তার কোনো অনুমতি নেই। এভাবে অনেকে তার স্টুডেন্ট ভিসা হারিয়ে ফেলেন। অর্থাৎ তিনি অবৈধ হয়ে গেলেন।