1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
সৌদি আরবে কেন অবৈধ হচ্ছেন বাংলাদেশি প্রবাসীরা
শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১২:১০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
কক্সবাজারের আকাশে রোমাঞ্চকর প্যারাসেইলিং বিয়ের টোপ দিয়ে পাকিস্তান আর বাংলাদেশের মহিলাদের যৌন ব্যবসায় নামাচ্ছেন চিনা পুরুষেরা যুক্তরাষ্ট্রে পুরো স্কলারশিপ পেয়েও ভিসা আবেদন নিয়ে অনিশ্চয়তায় স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর বিমানে চালু হচ্ছে ‘স্ট্যান্ডিং অনলি’ আসন, কমবে খরচ নেপালের দরবার স্কয়ার যেন এক জীবন্ত জাদুঘর দুবাইয়ে বিশ্বের বৃহত্তম ভিসা আবেদন কেন্দ্র চালু, প্রতিদিন ১০ হাজার আবেদন গ্রহণ পাইলটের বুদ্ধিমত্তায় অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন ১৮০ বিমানযাত্রী বেতন বছরে ৩০ কোটির বেশি, দুনিয়ায় সবচেয়ে সুখের চাকরি, তবুও কেউ করতে রাজি নয় হাডসন ইয়ার্ডসে গ্রীষ্মে বেড়েছে পর্যটকদের ভিড় কেন দেশ ছাড়ে মার্কিনরা, কোন দেশে বেশি স্থায়ী হয়

সৌদি আরবে কেন অবৈধ হচ্ছেন বাংলাদেশি প্রবাসীরা

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫
দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখছেন প্রবাসীরা। বিশ্বের ১৬৮টি দেশে অবস্থারত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। গতকাল প্রধান উপদেষ্টা কাতারে প্রবাসীদের এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘প্রবাসীদের সহযোগিতার কারণে বাংলাদেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে।

আমরা আজ যে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে পেরেছি তার মূলে প্রবাসীরা। প্রবাসীরা সহযোগিতা না করলে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারতাম না।’দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও সময়ের সঙ্গে বাড়ছে প্রবাসীদের সমস্যা। দালাল ও অসাধু চক্রের খপ্পরে প্রবাসীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।

বিশেষ করে সৌদি শ্রমবাজারে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রবাসীর বসবাস। এই ধারা সময়ের সঙ্গে বাড়ছে। দেশটিতে প্রবাসী শ্রমিকের সংখ্যা বাড়লেও কমছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।
যার প্রধান কারণ ‘ওয়ার্ক পারমিট ও আকামা’ সমস্যা।দিনাজপুরের ইয়াসিন আলী দালালকে ধরে গতবছরে সৌদি আরবে যান। দালাল সৌদি আরবে পাঠানোর সময় ভালো কম্পানিতে কাজ ও এক বছরের আকামা দেওয়ার নিশ্চয়তা দেয়। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর তিনি দেখেন আকামার মেয়াদ মাত্র তিন মাসের। তারপর তাকে ফের আকামা নবায়ন করতে হয়।

তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আকামার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আমি অবৈধ হয়ে যাই। বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আমি আকামা নবায়ন করেছি। যেটা আমার জন্য অনেক কষ্টের। কারণ সৌদি আরবে আসার সময় দালালকে ৪ লাখ ৩০ হাজার দেই। পরে আকামা নবায়নে আরো দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা লেগেছে।’খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৌদি আরব শ্রমবাজারে বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীদের সবথেকে বড় সমস্যা ওয়ার্ক পারমিট। দালালরা কাজের কথা বলে দেশটিতে নিলেও কাজ দিতে ব্যর্থ হয় বা ভুক্তভোগী প্রবাসীকে কাজ খোঁজার জন্য বলে থাকে। এ ছাড়াও এক বছরের আকামার কথা মুখে বললেও দিয়ে থাকেন তিন মাস। ফলে নির্ষিষ্ট সময় পর প্রবাসীরা অবৈধ হয়ে যান। অনেকে বাড়ি থেকে আকামা করতে পারলেও অধিকাংশ প্রবাসী অর্থের অভাবে আকামা করতে ব্যর্থ হোন। পরে সৌদি আরবের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেকে কাজ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু একসময় তারা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হন। এ ছাড়া অনেকে নিজ উদ্যোগে দেশে ফিরে আসেন।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্যমতে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত সৌদি আরবে গেছেন ১ লাখ ২০ হাজার ৮৭৬ জন, গত বছর দেশটিতে গেছেন ৬ লাখ ২৮ হাজার ৫৬৪ জন এবং ২০১৩ সালে গেছেন ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬৭৪ জন বাংলাদেশি। দেশটিতে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী গেলেও ফিরে আসার হারটাও অনেক বেশি। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তথ্যমতে, সৌদি আরব থেকে ২০২৪ সালে আউটপাসে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে ৫০ হাজার ২৩১ জনকে। আর ২০২৩ সালে ফেরত আসেন ৫৮ হাজার ৮৯৭ প্রবাসী। এই প্রবাসীদের অধিকাংশই অবৈধ হয়ে দেশটিতে ছিলেন।

সৌদি আরবে কেন বাংলাদেশি প্রবাসীরা অবৈধ হচ্ছেন বিষয়টি সম্পর্কে সৌদি আরবের জাজান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রবাসী এবং অভিবাসীবিষয়ক গবেষক ড. হোসাইন আহমেদ লিটন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রতিদিন শত শত প্রবাসী আকামা-সংকটের সমাধানে সৌদি আরবে বাংলাদেশের দূতাবাসে ভিড় করেন। কিন্তু দূতাবাস থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা মিলেনা এমনটি অভিযোগ করেন। শ্রমিকদের প্রধান অভিযোগ, ঢাকা থেকে রিক্রুটিং এজেন্সি ও তাদের দালালরা প্রতারণা করে শ্রমিকদের সৌদিতে পাঠান। এখানে ১ হাজার বা তারও বেশি রিয়ালের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও দেওয়া হয় ৫০০ কিংবা ৭০০ রিয়াল। সৌদি আরবের প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের বড় একটি অংশ এখন অবৈধ। এ দেশের পুলিশের অভিযানে প্রায়শই বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হচ্ছেন।’

সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক আবাসন, শ্রম ও সীমান্ত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দেশটিতে প্রতিনিয়ত গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হয়। এসব অভিযানে বাংলাদেশিরা নিয়মিত আটক হচ্ছেন। আকামা মেয়াদ না থাকা, শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সাজা শেষে অনেককে দেশে পাঠানো হয়।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, সৌদি শ্রমবাজার অবৈধ শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। একইসঙ্গে বাড়ছে জেলে যাওয়া শ্রমিকের সংখ্যা। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শ্রমবাজারটিতে। দেশটি থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। আকামা না থাকা, প্রতারিত হয়ে জেল খেটে প্রবাসীরা দেশে ফিরছেন। এই অবস্থা থেকে উত্তোরণে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। প্রবাসীদের স্বার্থ সুরক্ষায় আরো বেশি যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com