শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৫ পূর্বাহ্ন

সেন্ট মার্টিনে দিনে-দিনে ভ্রমণ

  • আপডেট সময় শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে সরকারের তরফে যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তাতে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে এসে সৌন্দর্য উপভোগ সম্ভব কি না।

বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ-পূর্বে মিয়ানমার সীমান্তের কাছে সাগরের বুকে ৮ দশমিক ৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ছোট্ট প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিন। কক্সবাজার জেলা শহর থেকে এর দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার।

বিস্তৃত জলরাশি আর মোহনীয় সৌন্দর্য্যের জন্য এই দ্বীপটিতে পর্যটকরা বেড়াতে ভালোবাসেন। সম্প্রতি এই দ্বীপের জীববৈচিত্র্য ও প্রাণ-প্রতিবেশের সুরক্ষায় সেখানে পর্যটক সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে ঘিরে সরকারের নানা সিদ্ধান্তের পর ছড়িয়েছে নানা গুজব।

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি পর্যটক যে এলাকাগুলোয় ভ্রমণ করে সেন্ট মার্টিন সেগুলোর একটি। ভরা মৌসুমে দিনে গড়ে পাঁচ থেকে আট হাজার পর্যটক এই দ্বীপ বেড়াতে যান।

বঙ্গোপসাগরের এই দ্বীপে পর্যটন মৌসুম নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি বছর কেবল নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটিতে ভ্রমণ করা যাবে। ফেব্রুয়ারিতে ভ্রমণ নিষেধ থাকবে।

এর মধ্যে নভেম্বরে দিনে গিয়ে দিনে চলে আসতে হবে, রাত কাটানো যাবে না। বাকি দুই মাস রাত্রি যাপনে বাধা নেই, তবে দিনে দুই হাজারের বেশি পর্যটক যাওয়া যাবে না।

সরকারের এমন সিদ্ধান্তের পরপর পর্যটন ব্যবসায় জড়িত ও ভ্রমণ পিপাসুরা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

তারা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে দ্বীপটির বাসিন্দারা যেমন কর্মহীন হবেন, তেমনি সেখানে পর্যটনকন্দ্রিক ব্যবসায়ও ধস নামতে পারে।

এবার নভেম্বর চলে এলেও এখনও ভ্রমণ শুরুই হয়নি। তিনটি জাহাজ চলাচলের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।

সেন্ট মার্টিন-টেকনাফ রুটে সময় লাগে কম। কিন্তু মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের কারণে এখন এই পথ অনিরাপদ। কিন্তু কক্সবাজার থেকে যাওয়া আশায় সময় লেগে যাবে ৮ ঘণ্টা। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন

সেন্ট মার্টিন-টেকনাফ রুটে সময় লাগে কম। কিন্তু মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের কারণে এখন এই পথ অনিরাপদ। কিন্তু কক্সবাজার থেকে যাওয়া আশায় সময় লেগে যাবে ৮ ঘণ্টা। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন

জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি-ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কুয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মন্ত্রণালয়ের সম্মতির ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজনের কথা বলা হচ্ছে। সম্মতি না পেলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেবে না। কবে থেকে এই অনুমতি পাওয়া যাবে তাও নিশ্চিত করা বলা যাচ্ছে না।”

এসব কারণে আর্থিক ক্ষতির তথ্যও মিলেছে।

পর্যটক খাতের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের সংগঠন ই-ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ই-ট্যাব) সভাপতি ইমরানুল আলম বলেন, “এ বছর অনেক রিসোর্ট বুক হয়েছিল। যখনই নিউজ আসল ডে লং ট্যুরের, তখনই আমাদের ৯০ শতাংশ টিকেটের টাকা রি-ফান্ড করে নিয়েছে অতিথিরা। ডে লং ট্যুরটা বাস্তবসম্মত কিনা সেটা তো প্রমাণ পাওয়াই যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “রিসোর্ট মালিকরা আসলে এক ধরনের অভিশাপের মধ্যে আছে মনে হচ্ছে। আলটিমেটলি আমাদের একটা বিশাল আর্থিক লসের ঝুঁকি তো আছেই, আমরা একটা মেন্টাল ডিজঅর্ডারের মধ্যেও আছি। একদম হতাশার সর্বোচ্চ লেভেলে আছি।”

অনিশ্চয়তার কারণে সেন্ট মার্টিনে রিসোর্টের বুকিং বাতিল করে দিয়েছেন পর্যটকরা। এ কারণে ব্যবসায়ীরা চরমভাবে হতাশ। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন

অনিশ্চয়তার কারণে সেন্ট মার্টিনে রিসোর্টের বুকিং বাতিল করে দিয়েছেন পর্যটকরা। এ কারণে ব্যবসায়ীরা চরমভাবে হতাশ। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন

আদৌ যৌক্তিক?

পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-টোয়বের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাত্রিযাপন না করা গেলে সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণ সম্ভব না। এই কারণেই আসলে আমাদের আন্দোলন।”

ভ্রমণ সীমিত হলে সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব পড়বে বলে দাবি করে তিনি বলেন, “সেখানে তো শুধু চার মাস পর্যটকেরা যেতে পারেন। এর মধ্যে যদি আবার সীমিতকরণ থাকে তাহলে পর্যটন তো চলবে না। পর্যটন যদি না চলে ওই অঞ্চলের মানুষগুলো যারা পর্যটনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হবে।”

সেন্টমার্টিন’স দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা উন্নয়ন জোটের চেয়্যারম্যান শিবলুল আজম কোরেশি বলেন, “সেন্ট মার্টিনে দিনে-দিনে ভ্রমণের বিষয়টা আমি আদৌ যৌক্তিক মনে করি না।

“এখন টেকনাফ থেকে জাহাজ চলতে পারে না। জাহাজ যেতে হবে কক্সবাজার থেকে। সেখান থেকে জাহাজে যেতে আসতে ৫ থেকে ৭ ঘণ্টা লাগে। এভাবে কোনো ট্যুরিস্ট যেতে চাইবে না। এই সময়ে যে টিকেট বিক্রি হয়েছিল, অনেক টিকেট রিফান্ড হয়ে গেছে, আমরা জানতে পেরেছি। ২২ নভেম্বর পর্যন্ত জাহাজ অপারেশন স্থগিত করে দিয়েছে মালিকরা। তো ডে লংগের ট্যুরটা একেবারে বাস্তবসম্মত নয়।

“এটা আসলে ঘোরার মত না, জাস্ট সেন্ট মার্টিন গিয়েছিলাম, এটা বলা যায় হয়ত। এই সময়ে আপনি খাবেন না বেড়াবেন, কোনটা করবেন?”

পর্যটন মৌসুম শুরু হলেও নানা জটিলতায় জাহাজগুলো এখনও সেন্ট মার্টিনে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছে না। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন

পর্যটন মৌসুম শুরু হলেও নানা জটিলতায় জাহাজগুলো এখনও সেন্ট মার্টিনে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছে না। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন

সাধারণত কক্সবাজার থেকে সকাল সাড়ে ৯টায় জাহাজ ছাড়ে, ১টার দিকে সেন্টমার্টিনে পৌঁছায়। সেখান থেকে ৩টায় ফিরতি জাহাজ ছেড়ে এসে ৫টা থেকে সাড়ে ৫টার দিকে পৌঁছায়।”

এসব বিধিনিষেধে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কাও করছেন কোরেশি। তিনি বলেন, “বিনিয়োগকারীদের হাজার কোটি টাকার উপরে বিনিয়োগ রয়েছে এখানে। সর্বোপরি, প্রচুর লোক বেকার হয়ে যাবে। তিন মাস বিজনেস করা ১২ মাস মেন্টেইন করা এটা একেবারে অবাস্তব বিষয়।”

জাহাজ মালিকরাও দিনে-দিনে ভ্রমণের বিপক্ষে

মিয়ানমারের যুদ্ধের রেশ বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছানোর কারণে এখন আর টেকনাফ বা চট্টগ্রাম থেকে জাহাজ বা স্পিডবোট চলাচল করতে পারে না। শুধু কক্সবাজারের ইনানী সৈকত থেকেই জাহাজ চলাচল করে।

সি-ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কুয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পর্যটকরা দিনে-দিনে সেন্ট মার্টিন গিয়ে ঘুরে এলে এক বেলা ভাত খেয়ে আবার চলে আসবে। সৌন্দর্যটা উপভোগ করার সুযোগ থাকবে না।

“৪ ঘণ্টায় সেখানে (সন্ট মার্টিন) পৌঁছালেও যাত্রা শেষ হয় না। জাহাজ ভেড়ানো, যাত্রীদের নামানো মিলিয়ে আরও আধা ঘণ্টা সময় লাগে। একইভাবে আসার সময়ও লাগে। সব মিলিয়ে আমি বলব দিনে গিয়ে দিনে আসাটা সম্ভব না। মানুষ যাবে ঘুরতে, রিল্যাক্সের জন্য, সেখানে তাড়াহুড়া করে ভ্রমণ আসলে সম্ভব না।”

অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নভেম্বরে সেন্ট মার্টিন গিয়ে থাকা যাবে না। আর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে থাকা গেলেও এক দিনে সর্বোচ্চ দুই হাজার মানুষ যেতে পারবে। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন

অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নভেম্বরে সেন্ট মার্টিন গিয়ে থাকা যাবে না। আর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে থাকা গেলেও এক দিনে সর্বোচ্চ দুই হাজার মানুষ যেতে পারবে। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন

সরকারের নির্ধারিত আইন মেনে হলেও ভ্রমণ চালু রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা তো পুরো সময়টা চাচ্ছি না, চাচ্ছি ৪ মাস। বাকি সময়টা পরিস্কার করুক না। এখানে ১১টা সি-ভ্যাসেল আছে। এগুলোতে সর্বোচ্চ চার হাজার লোক যাবে। চারমাস আমাদের কন্ডিশন দিক, যেমন আমরা পলিথিন ব্যবহার করতে পারব না, ট্যুরিস্টদেরও কন্ডিশন দিক, সিংগেল ইউজ প্লাস্টিক নিয়ে আসা যাবে না।”

দূষণ রোধে ব্যবসায়ীদের কী পরামর্শ

টোয়বের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেন্ট মার্টিনে পরিবেশ রক্ষা করার জন্য আমরাই সচেষ্ট। আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছি, আমরা সিংগেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার করতে দেব না। এর বাইরে আমরা কাছিমের ডিম, কাছিম যাতে না খেতে পারে, কুকুরগুলোকে বন্ধ্যাকরণ, স্থানান্তরকরণ, অপরিকল্পিত অবকাঠামো না গড়া, এগুলো আমরা সবাইকে বলেছি।

“আমরা গাছ লাগাব, সবুজায়ন করব, বিচ পরিস্কার রাখব, প্রত্যেক পর্যটকের কাছ থেকে ২০ টাকা করে চার্জ নিয়ে সরকারকে দেব। ওই টাকা দিয়ে সেন্ট মার্টিন রক্ষায় সরকারের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমরা বাস্তবায়ন করব।”

শিবলুল আজম কোরেশি বলেন, “প্লাস্টিকের বর্জ্য সরকার নিষিদ্ধ করেছে, আমরা সেটাকে স্বাগত জানাই। যদি এটা বাস্তবায়ন করতে সময় লাগে, তাহলে সম্পূর্ণভাবে প্লাস্টিককে সংগ্রহ করে রি-সাইক্লিং করার জন্য সংগ্রহ করে এটা দ্বীপের বাইরে পাঠানো যায়।”

এটা নিয়ে গত দুই বছর বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা খাদ্যের বিনিময়ে প্লাস্টিক সংগ্রহ করছে। এই কাজটা কিন্তু অনেকটাই সফল হয়েছে।”

সেন্ট মার্টিনের দূষণ প্রতিরোধে পদক্ষেপের বিরুদ্ধে না পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে ভ্রমণে বাধা দানের বিরুদ্ধে তারা। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন

সেন্ট মার্টিনের দূষণ প্রতিরোধে পদক্ষেপের বিরুদ্ধে না পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে ভ্রমণে বাধা দানের বিরুদ্ধে তারা। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন

পচনশীল বর্জ্য ব্যবহার করে সরকার সেখানে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরি করতে পারে মত দিয়ে তিনি বলেন, “সেখান থেকে সরকার গ্যাস পাবে, জৈব সার পাবে এবং বর্জ্যেরও যথাযথ ব্যবস্থাপনা সম্ভব হবে।”

জেনারেটরের শব্দদূষণ রোধ করতে সম্পূর্ণ সৌরবিদ্যুৎ করে দেওয়া যায় বলেও মত দেন এই পর্যটন ব্যবসায়ী।

নৌপথের বিকল্প আকাশপথ?

দিনে-দিনে ভ্রমণে নৌপথের বিকল্প হিসেবে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে আকাশপথও। আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট এবং ফ্লাই ট্যাক্সি অ্যাভিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে কক্সবাজারের ইনানী থেকে সেন্ট মার্টিন পর্যন্ত রুট ঠিক করা হয়েছে।

কিন্তু ১০ মিনিটের কিছু বেশি এই রুটে রাউন্ড ট্রিপের জন্য যাত্রীপ্রতি ২২ হাজার এবং সিংগেল ওয়ে জার্নির জন্য ১৬ হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।

একটি হেলিকপ্টারে চড়তে পারবেন ৭ জন।

জাহাজে করে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যেতে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। ইনানী থেকে গেলে সময় আরেকটু বেশি লাগে।

জাহাজের ক্লাস ও মান অনুযায়ী সেন্টমার্টিন যাওয়া ও আসা (রাউন্ড) টিকেট ভাড়া ১৪০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

স্বল্প দূরত্বের এই রুটে হেলিকপ্টার ভাড়া কীভাবে নির্ধারণ করা হল-এমন প্রশ্নের জবাবে ফ্লাই ট্যাক্সি অ্যাভিয়েশনের সত্ত্বাধিকারী এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আর কে রিপন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভাড়াটা নির্ধারণ করা হয়েছে ব্যয়ের উপর নির্ভর করে। এই রুটে যে কপ্টার দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে, সেটা হচ্ছে বেল-৪২৯ মডেলের। এটা একটা ডুয়েল ইঞ্জিন হেলিকপ্টার। এর জন্য দুজন পাইলট থাকেন। এটার পার আওয়ার ফ্লাইট কস্ট পড়ে আমাদের ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি ঘণ্টায় আমরা ৪টা ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারব আপ-ডাউন মিলিয়ে। ১৫ মিনিট করে ফ্লাইট ওঠানামার সময়। সেখানে আমাদের ফ্লাইট কস্ট আসবে এটা।”

একটি বেসরকারি সংস্থা কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিনের পথে হেলিকপ্টার চালানোর পরিকল্পনা করছে। তবে যে ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে, তা সাধারণের পক্ষে বহন করা কঠিন।

একটি বেসরকারি সংস্থা কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিনের পথে হেলিকপ্টার চালানোর পরিকল্পনা করছে। তবে যে ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে, তা সাধারণের পক্ষে বহন করা কঠিন।

এই দূরত্বে এই ভাড়া কতটুকু যৌক্তিক? সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সেখানে আমাদের হেলিকপ্টার রাখার জন্য আমাদের কোনো জায়গা বরাদ্দ নাই বা কোনো গ্রাউন্ড, হেলিপ্যাড নাই, এজন্য জায়গাটা আমাকে রেন্ট করতে হবে। আমাদের দুজন পাইলট থাকবে। আমাদের কেবিন ক্রু থাকবেন। তাদের খাবার, থাকার জায়গা করতে হবে। সেজন্য হোটেলের সঙ্গে আলাদা করে চুক্তি করা লাগবে।

“সর্বসাকুল্যে, ঘণ্টায় ৩ লাখ ২০ হাজার আসবে। আর গড়ে খরচ হবে ২ লাখ ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকা। এজন্য এভাবে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।”

সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণে যেসব বিধিনিষেধ

গত ২২ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর সরকারের সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেন। এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “নভেম্বর মাসে পর্যটকরা যেতে পারবেন, কিন্তু রাতে থাকতে পারবেন না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ২ হাজার পর্যটক প্রতিদিন যেতে পারবেন, রাতেও থাকতে পারবেন।

“আর ফেব্রুয়ারিতে কোনো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবেন না, তখন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হবে।”

সেই দুই হাজার পর্যটককে কীভাবে নির্বাচন করা হবে, সেটি এখনও প্রকাশ করা হয়নি।

এমন সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজাওয়ানা হাসান পরে সাংবাদিকদেরকে বলেন, “বলা হচ্ছে যে ৪১ ভাগ কোরাল ক্ষয় হয়ে গেছে। এটা জাতীয় পরিসংখ্যান। আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্য জার্নালে বলা হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে ২০৪৫ সালের মধ্যে সকল কোরাল ক্ষয় হয়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপটা ডুবে যাবে। তখন পর্যটনটা থাকবে কোথায়? আজকে যার বয়স এক, ২০৪৫ সালে আপনি তাকে সেন্ট মার্টিনটা কোথা থেকে দেখাবেন?”

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com