মার্কিন ইতিহাসে প্রথম সাবেক কোনো প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। প্রাক্তন পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের মুখ বন্ধ রাখতে ঘুষ দেবার মামলায় ডেনাল্ড ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। যার জন্য ট্রাম্পের এই বেহাল অবস্থা, সেই স্টর্মি যেন ট্রাম্পের পক্ষে কথা বললেন। খবর রয়টার্সের।
সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ৪৪ বছর বয়সী স্টর্মি ড্যানিয়েলস। সেখানে তিনি বলেন, আমার মনে হয় না ট্রাম্পের এই মামলায় জেলে যাওয়া উচিৎ হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার এই সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়েছে।
এদিন সাবেক এ পর্ন তারকা বলেছেন, আমি মনে করি না যে আমার বিরুদ্ধে তার (ট্রাম্প) অপরাধ কারাদণ্ডের যোগ্য। আমি মনে করি তিনি যে অন্য কাজগুলো করেছেন, তাতে তিনি শেষ পর্যন্ত যদি দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে কারাগারে যেতেই হবে।
গত মঙ্গলবার এ মামলায় ট্রাম্প ম্যানহাটনের ফৌজদারি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাকে হাতকড়া না পরালেও সেদিন গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। আদালতকক্ষে ট্রাম্প তার আইনজীবীর সঙ্গে বসে ছিলেন।
সেখানে বিচারপতি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগ পড়ে শোনান। তবে ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। সেদিনই ট্রাম্প ফ্লোরিডায় নিজ বাসভবনে গিয়ে সমর্থকদের উদ্দেশে কড়া ভাষায় ভাষণ দেন। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলে অভিযোগ করেছেন। একই সঙ্গে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন গোল্লায় যাচ্ছে।
গত মঙ্গলবারের শুনানিতে ট্রাম্পের আইনজীবী দল এ মামলাকে চ্যালেঞ্জ করে যেকোনো ধরনের আবেদন জানানোর আগামী ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময় পাবে। আগামী ৪ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
এই নিয়ে স্টর্মি সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি মামলায় সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, আমার লুকানোর কিছু নাই, এখানে আমি একমাত্র সত্য বলে আসছি।
মার্কিন রাজনীতিতে ঝড় তুলে দেওয়া স্টর্মি ড্যানিয়েলসের আসল নাম স্টেফানি ক্লিফোর্ড। ১৯৭৯ সালে আমেরিকার লুজিয়ানায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ২০১১ সালে নিজের আত্মজীবনী ‘ফুল ডিসক্লোজার’ লিখেছিলেন তিনি। এই নিয়েই মার্কিন সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘ইন টাচ’-এ একটি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি প্রথম দাবি করেন, ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল তার।
স্টর্মির এই সাক্ষাৎকার নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় পুরো আমেরিকা তথা বিশ্বে। সংবাদমাধ্যমের সামনে ড্যানিয়েলস দাবি করেন, ২০০৬ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্কের শুরু হয়েছিল। সেই বছর জুলাই মাসে একটি গলফ টুর্নামেন্টে ট্রাম্পের সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়। এর পরে ক্যালিফোর্নিয়া ও নেভাডার রিসোর্ট এলাকার হোটেলে তারা শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন বলেও দাবি করেন তিনি।
পাশাপাশি স্টর্মির দাবি, এই সম্পর্কের কথা যেন কেউ জানতে না পারে, সে জন্য তাকে প্রবল চাপ দেন ট্রাম্প। অভিযোগ, ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মুখ বন্ধ রাখার জন্য তাকে ১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার ঘুষও দিয়েছিলেন ট্রাম্পের আইনজীবী।