বঙ্গোপসাগরের মোহনায় সুন্দরবনের দুবলার চরে আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী ৩ দিনের রাস উৎসব।
পূর্ণিমার তিথিতে পুণ্যস্নান ও পূজার মধ্য দিয়ে উৎসবটি উদ্যাপন করা হয়। এবারও কোনো মেলা বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন নেই।
বন বিভাগ সুন্দরবনে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীরাই নির্ধারিত ৫টি রুটে আলোরকোলে যেতে পারবেন। অন্য ধর্মের মানুষ বা পর্যটক প্রবেশ করতে পারবেন না।
পুণ্যার্থী মনজিত কুমার রায় জানান, ‘সুন্দরবনের বাটুলা নদী পেরিয়ে দুবলার চরে যাচ্ছি। মোবাইলে নেটওয়ার্ক থাকবে না, তবে সবাই আনন্দিত। পূর্ণিমার জোয়ারে স্নান করলে পাপমোচন হয়—এই বিশ্বাস নিয়েই যাচ্ছি।’
আরেক পুণ্যার্থী সুব্রত কুমার মণ্ডল বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছি।
উৎসব কমিটি ও দুবলার চর ফিশারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দিন বলেন, ‘তিথি অনুযায়ী আজ থেকে পূজা শুরু হচ্ছে। বন বিভাগের অনুমতিতে আলোরকোলে অস্থায়ী রাধা-কৃষ্ণ মন্দির তৈরি হয়েছে। ৫ নভেম্বর ভোরে সাগরের প্রথম জোয়ারে পুণ্যার্থীরা ফিরে যাবেন।’
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ জানিয়েছেন, ‘এ বছরও শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীরাই অংশ নিতে পারবেন। নিরাপদ যাতায়াতের জন্য পাঁচটি রুটে টহল দল মোতায়েন আছে। সবার জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে এবং চেকিং পয়েন্ট ছাড়া কোথাও নৌযান থামানো যাবে না।’
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কয়রা উপজেলা সভাপতি অরবিন্দ মণ্ডল জানান, উনিশ শতকের শুরুতে সাধু হরিভজন প্রথম দুবলার আলোরকোলে রাস পূর্ণিমার পূজা শুরু করেন। পরে এটি লোকসমাগমের মাধ্যমে এক বৃহৎ রাসমেলায় পরিণত হয়। তবে ২০১৭ সাল থেকে বন বিভাগের সিদ্ধান্তে মেলার আয়োজন বন্ধ রয়েছে।