ফেলুদা যাঁরা পড়েছেন, তাদেঁর কাছে গ্যাংটক নামটা একদমই অচেনা নয়। ‘গ্যাংটকে গন্ডগোল’ পড়তে পড়তে আপনিও নিশ্চয়ই বেশ অনেকবার হারিয়ে গিয়েছিলেন পাহাড়ঘেরা সৌন্দর্যে। গ্যাংটক হচ্ছে সিকিমের রাজধানী। মেঘের বাড়ি সিকিম ঘোরার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো গ্যাংটককে কেন্দ্র করে ঘোরা। আর সিকিম যদি প্রথমবারের জন্য ঘুরতে যান, তাহলে গ্যাংটক কিন্তু যেতেই হবে। সিকিম মানেই পাহাড়ি রাস্তায় ঘুরে ঘুরে যত উপরে উঠা যায়। আলপাইন সৌন্দর্যের জন্য একে ডাকা হয় ‘পূর্বের সুইজারল্যান্ড। সিকিমে বিদেশিদের জন্য অবাধ প্রবেশ বিধিনিষেধ রয়েছে। তাঁদের একটি সংরক্ষিত অঞ্চলের অনুমতিপত্র বা আরএমপি নিয়ে যেতে হয়। এখানে প্রবেশ বিনা মূল্যে ও শুধু একটি বৈধ পাসপোর্ট ও একটি ভারতীয় ভিসা প্রয়োজন।
যা যা দেখতে পারেন
সিকেমের রাজধানী গ্যাংটক ও এর আশেপাশের অঞ্চল পুরোটাই সুবিশাল ও দৃষ্টিনন্দন পাহাড়ে ঘেরা। বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদ, সাথে বিচিত্র প্রানীকুল মিলিয়ে সিকিম হয়ে উঠেছে প্রকৃতিপ্রেমীদের স¦র্গরাজ্য। পর্যটকদের মন মাতানোর জন্য অনেক হ্রদ, ঝরনাও ও পাহাড় রয়েছে। তবে এদের মধ্যে সোমগো ও মেনমেকো হ্রদই বেশি পরিচিত।
গ্যাংটকের অন্যতম প্রধান দর্শনীয় স্থান হলো এমজি মার্গ বা মহাত্মা গান্ধি মার্গ। সুন্দর সুন্দর ফুল দিয়ে সাজানো দারুন দর্শনীয় জায়গা এই এমজিমার্গ।
আরও আছে সিলারি গাঁও। পাহাড়ের কোল ঘেঁেষ তিস্তার পাশ দিয়ে শাল, সেগুনগাছের সারি ভেদ করে যেতে হয় এখানে। প্রকৃতির সাথে শান্তিতে উপভোগের আর্দশ স্থান হলো সাংগুলেক, স্থানীয় নাম সোমাগো। শীতকালের সাংগুকর জল জমে বরফ হয়ে যায়। লেকের চারদিকে বরফে ঢাকা পাহাড়ের সৌন্দর্যই অন্য রকম। এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা একবার হলেও ইয়াকের পিঠে চড়েন। তবে এই রাস্তায় আসতে হলে আগে থেকেই অনুমতি নিয়ে আসতে হয়। ছাঙ্গুলেকের কাছে রোপওয়েতে চড়তে পারেন, প্রতিজন ৩২৬ রুপি।
সাংগুলেক যাওয়ার পথেই পড়বে বাবা মন্দির। একই রাস্তায় তিনটি ঘোরার জায়গা সাংগু হ্রদ, নতুন বাবা মন্দির আর পুরোনো বাবা মন্দির।
এছাড়া ঘুরে আসতে পারেন রুমটেক মনাস্ট্রি, আরিতার লেক, পাকইয়ং ইয়াকতেন, টিবেটোলজি, ফ্লাওয়ার শো, কটেজ ইন্ডস্ট্রি, নামনাং ভিউ পয়েন্ট, হনুমান টক, গনেশ টক,জিওলজিক্যাল গার্ডেন, ইঞ্চে মনাস্ট্রি, বনঝকরি, ওয়াটারফলস।
কখন যাবেন
বর্ষা ও শীত মৌসুমে সিকিম ভ্রমন বেশ ঝাক্কির ব্যাপার। শরৎ ও বসন্তকাল হলো সিকিম ঘোরার সেরা সময়। মার্চ থেকে এপ্রিল মাস, অন্যদিকে অক্টোবর থেকে নভেম্বর, এই সময় ব্যাগ গুছিয়ে চলে যেতে পারেন সিকিম। এছাড়া গ্রীষ্মকাল, মানে মে থেকে জুন মাস পর্যন্তও ঘুরতে খারাপ লাগবে না।
কোথায় থাকবেন
হোটেল সাগরিকা হোটেল সাইক্রিপা হলো বাজেটের মধ্যে ভালো হোটেল। যাঁরা মাঝারি মানের থাকার জায়গার খোঁজ করছেন, তাঁরা নেতাক হাউস, হোটেল সোনাম ডেলেক, হোটেল গোল্ডেন প্যাগোডা, আনোলা হোটেল, রয়েল প্লাজা, হোটেল সিলভার লাইন, হোটেল গ্রিন, হোটেল তিব্বত-এগুলোতেও গিয়ে দেখতে পারেন।