বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ১১:৪৭ অপরাহ্ন

সামারে দেশে যেতে দুশ্চিন্তায় বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা

  • আপডেট সময় বুধবার, ৭ মে, ২০২৫

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিবাসী বিতাড়নের পাশাপাশি হাজারো বিদেশী শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করার ঘটনায় বিদেশী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সেই সাথে সামারের ছুটিতে বিদেশী শিক্ষার্থীদের দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্টদের ই-মেইলে বিশেষ সতর্কবার্তা পাঠাচ্ছে।

তথ্যমতে, কিছুদিনের মধ্যে শুরু হবে যুক্তরাষ্ট্রের সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামার ভেকেশন। ইতিমধ্যে সামার ভেকেশনের ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশী শিক্ষার্থীরা নিজের দেশসহ বিভিন্ন দেশে ভ্রমণে যাওয়ার জন্য বিমান টিকেট বুকিংসহ যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট প্রো-প্যালেস্টাইন বিক্ষোভে অংশ নেয়ার অভিযোগে বিদেশী শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলসহ ব্যপক কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাইন ইউনিভার্সিটি, মিশিগান সেন্টার ইউনিভার্সিটি, বিংহ্যামটন ইউনিভার্সিটিসহ নিউইয়র্ক, নিউজার্সীর একাধিক ভার্সিটিতে অধ্যয়নরত তাদের বিদেশী শিক্ষার্থীদের নিজস্ব ইমেইলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অন্য দেশে ভ্রমণে বিশেষ সতর্কতা পাঠিয়েছে। ওই ইমেইলে বিশ্ব বিদ্যালয়গুলো বিদেশী শিক্ষার্থীদের বলেছে, শিক্ষার্থীরা সামার ভেকেশনে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিরে গেলে আবার ফেরার পথে যেকোন অনাকাঙ্খিত সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। কেউ যুক্তরাষ্ট্রের বাহিরে যেতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যাবতীয় ডকুমেন্ট প্রদান করা হবে। তবে ফেরার (রি-এন্ট্রির) ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিজের দায়িত্ব, এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কোন দায়িত্ব বা সহযোগিতা করতে পারবেনা।

এমন ইমেইল বার্তা পেয়েছেন বাংলাদেশী একাধিক শিক্ষার্থীরাও। এরপর থেকে সামারের ছুটিতে দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

ট্রাইন ইউনিভার্সিটির এক বাংলাদেশী শিক্ষার্থী জানান, গত সপ্তাহে আমার ইমেইলে ভার্সিটি থেকে একটি মেইল আসে। সেখানে লেখা হয় আমি যদি সামারের ছুটির সময় যুক্তরাষ্ট্রের বাহিরে যেতে চাই তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় সকল ধরণের ডকুমেন্ট আমাকে দিবে। কিন্তু রি-এন্ট্রির ক্ষেত্রে নিজের রিস্কে যেতে হবে। এই লাইনটি বড় করে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে লেখা হয়েছে।

নিউইয়র্কের এক ভার্সিটির শিক্ষার্থী সিয়াম কায়েছ বলেন, আমার আর এক বছর আছে ফাইনাল শেষ হতে। গত বছর সামারে দেশে যেতে পারিনি। এ বছর দেশে জুনে যাবো পারিবারিক অনুষ্ঠানে। এ জন্য গত ফ্রেব্রুয়ারিতে বিমানের টিকেট বুকিং দিয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে ভিসা বাতিল ও রি-এন্ট্রির সময় অনেক ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে স্টুডেন্টদের। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পরামর্শ দিয়েছে যেনো আপতত যুক্তরাষ্ট্রের বাহিরে না যাই। তাই কি করবো বুঝতে পারছিনা।

মিশিগান সেন্টার ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশী শিক্ষার্থী জানান, তাদের সেমিস্টারে ১৫ জন বাংলাদেশী, মিশর ও ভারতীয় স্টুডেন্ট সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইমেইলে বার্তায় ছুটিতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ছুটিতে তারা দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো। বর্তমানে এমন পরিস্থিতিতে সবাই যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের হলে ফেরার ঝুঁকি থাকায় নিজ দেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন।

এরকম আরো বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশী শিক্ষার্থীরা সামার ভেকশনে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিরে যাওয়ার ব্যাপারে দ্বিধান্বিত ও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

এদিকে ইমিগ্রেশন বিশ্লেষকরা বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসী বিরোধী কঠোর অবস্থান ও বিদেশী শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের এই মুহূর্তে এ দেশের বাহিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ ফেরার পথে হয়তো তাকে যেকোন কারন দেখিয়ে রি-এন্ট্রি নাও দিতে পারেন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com