পাল্টে গেছে ঋতু। পরিবর্তন এসেছে প্রকৃতিতে। তবে বদলায়নি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের চিত্র। ঈদের টানা ছুটি শেষ হলেও এখনো পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়।
শুক্রবার বেলা ১১টায় সুগন্ধা, কলাতলী ও লাবনী পয়েন্টে দেখা যায়, নোনাজল কিংবা বালিয়াড়ি সবখানেই চলছে আনন্দ-উল্লাস। পর্যটকরা মেতেছেন বিচ বাইক, জেড স্কী, ঘোড়ার পিঠে কিংবা ছবি তোলায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দলে দলে বালিয়াড়ি পেরিয়ে নোনাজলে নামছেন ভ্রমণপিপাসুরা। অনেক ভ্রমণপিপাসু বালিয়াড়িতে ঘুরছেন, অনেকেই কিটকটে বসে রয়েছেন। আবার অনেকেই নোনাজলে পা ভিজিয়ে হাঁটছেন প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে। তবে বালিয়াড়িতে শিশুদের নিয়ে খেলছেন অনেক অভিভাবক। আর কোলাহলময় যান্ত্রিক জীবনের অবসাদ কাটাতে ছুটে আসা ভ্রমন পিপাসুরা বলছেন, প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি কক্সবাজার ঘুরতে এসে তারা তৃপ্ত-পরিতৃপ্ত।
সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে কথা হয়েছে ঢাকা থেকে আসা রিয়াজ আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, কক্সবাজারে আসা মানেই আনন্দ। এখানের অথৈ নীল জলরাশি আর শীতল হাওয়ায় মন থেকে ক্লান্তির অবসান হয়ে যায়। আর ফিরে গিয়ে নিজের কর্মস্থলে সজীবতা পাওয়া যায়।
রংপুরের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার ছুটে আসে। এখানে সাগর, পাহাড়, ঝর্ণা, বৌদ্ধ বিহার আর প্রকৃতি সত্যি বিমুগ্ধ করে।
ইব্রাহীম আজাদ বলেন, আবহাওয়াটা দারুণ। সকালে কয়েক মিনিটের বৃষ্টি স্বস্তি এনে দিয়েছে। এখন সাগরপাড়ে দারুণ সময় কাটছে।
এদিকে হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছে, পর্যটকদের আনন্দ দিতে পহেলা বৈশাখের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
তারকামানের হোটেল কক্স-টুডের ব্যবস্থাপক আবু তালেব শাহ বলেন, ঈদের টানা ছুটির পরও এখন পর্যটক রয়েছে কক্সবাজারে। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পর্যটক আরও বেড়েছে। এই পর্যটক আগমনের মধ্যে বৈশাখের প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। যাতে পর্যটকরা কক্সবাজার ভ্রমণে এসে বাঙালিয়ানার সবকিছু উপভোগ করতে পারে। আশা করি, ভালো পর্যটকের সমাগম হবে এবং পর্যটকরাও দারুণ আনন্দ উপভোগ করতে পারবে পহেলা বৈশাখে।
ঋতু পরিবর্তনে সাগর এখন উত্তাল। তাই ভমণপিপাসুদের সতর্ক করতে চলছে মাইকিং। একই সঙ্গে সার্বক্ষনিক নজরদারি বাড়িয়েছে লাল-হলুদ বাহিনী।
সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার সুপারভাইজার মো. সাইফুল্ল্যাহ সিফাত বলেন, গেলো ৩ মাস কক্সবাজারের আবহাওয়া দারুণ ছিল। কিন্তু এখন আবহাওয়া পরিবর্তন হয়েছে। সাগর উত্তাল হবার পাশাপাশি ঢেউয়ের তীব্রতাও বেড়েছে। তাই পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তা সার্বক্ষণিক নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। প্রতিটি পয়েন্টে ৩ স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
কক্সবাজারে ৫ শতাধিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস রয়েছে। যার মধ্যে তারকামানের হোটেল প্রায় ৩০টি।