শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২১ অপরাহ্ন

সাইকেলে চড়ে নেদারল্যান্ডস রাষ্ট্রদূতের সুন্দরবন যাত্রা

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫

সাইকেলে সুন্দরবন ভ্রমণে এলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে কার্সটেনস। গত ২৯ মার্চ (শনিবার) সকালে শরণখোলা থেকে বাইসাইকেলে করে রাষ্ট্রদূত সুন্দরবনের হাড়বাড়িয়ার উদ্দেশে রওনা হয়ে যান। এর আগের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় বরিশাল থেকে সাইকেলে করে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত শরণখোলায় এসে রাতযাপন করেন।

বরিশাল থেকে বাঘের ডেরা সুন্দরবনের জয়মণিতে অবস্থিত ওয়াইল্ডটিমের কনজারভেশন বায়োলজি সেন্টার ‘টাইগারহাউস’ পর্যন্ত ১৬৩ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি দিয়েছেন এই কূটনীতিক।

ছেলে কারস্টেন্স ইয়াকোবাস হেরমানাস ও দুই বন্ধু নিলস ফন ডেন বের্গে (নেদারল্যান্ডস পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য) ও ইয়ংমান কারিনকে সঙ্গে নিয়ে এই যাত্রা করেন তিনি। এ সময় আড়ম্বর করে প্রতিনিধি দল কিংবা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নেননি এই কূটনীতিক; এটি ছিল নীরব-নিভৃতে সচেতন এক অভিযাত্রা।

তার এই কর্মকাণ্ড এক যুগ আগের এমনই আরেকটি যাত্রার কথা মনে করিয়ে দেয়। তখন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবিদ, কূটনীতিক ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের একটি দল দেশজুড়ে রিকশা চালিয়েছিলেন। সেই সময়ের লক্ষ্য ছিল বাঘের অস্তিত্ব সংকটকে জনসমক্ষে তুলে ধরা।

আর এবারের মিশন ছিল সুন্দরবনের হৃদস্পন্দনের উত্তাপ, কানাকানি ও নাজুক অস্তিত্বের ভার সরেজমিনে অনুভব করা।

গত ১০ ও ১১ জানুয়ারি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলের উপপ্রধান ড. বেয়ার্ন্ড স্পানিয়েরের সঙ্গে প্রথমবার ওয়াইল্ডটিমস কনজারভেশন বায়োলজি সেন্টার পরিদর্শন করেন কারসটেন্স। এরপর ৮০ দিনেরও কম সময়ের ব্যবধানে তিনি সেখানে ফিরে যান। তবে এবার শুধু রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, তাদের আবাসস্থল ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো নিজে অনুভব করে এসব বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে সচেতনতা বৃদ্ধিই ছিল তার লক্ষ্য।

আন্দ্রের মতে, ‘মানুষ ভাবে সুন্দরবন শুধুই একটি বন, কিন্তু সত্যিকার অর্থে এটি বাংলাদেশের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া জীবন্ত রক্ষাকবচ। আপনি যখন এর ভেতর দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যাবেন, তখন বুঝতে পারবেন- এটি আমাদের কত কিছু দিচ্ছে এবং ঠিক কতটা হারাচ্ছে।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে কারসটেন্সের সুন্দরবন যাত্রা। ছবি ইউএনবি

ওয়াইল্টটিমের চেয়ারম্যান ইনাম আল হক বলেন, ‘হারবাড়িয়া ও আন্ধারমানিক ইকোট্যুরিজম অঞ্চলে তাদের নৌকা ভ্রমণ এক দ্বৈত বাস্তবতা ফুটিয়ে তুলেছে–কাদায় বাঘের পায়ের টাটকা ছাপ, আর ঠিক তার পাশেই জোয়ারে ভেসে আসা প্লাস্টিকের বর্জ্য।’

ইনাম আল হক বলেন, ‘প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বর্জ্য আসার গতি বেড়ে যায়। বাঘেরা (এর সঙ্গে) মানিয়ে নিচ্ছে, আমাদেরও নিতে হবে।’

ওয়াইল্ডটিমের প্রধান নির্বাহী ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আন্দ্রের এই সাইকেল অভিযানও সেই একই আলোকবর্তিকা বহন করেছে। নায়ক হওয়ার বিষয় নয় এটি, অংশ নেওয়াটাই আসল। সুন্দরবনের ত্রাতার প্রয়োজন নেই; প্রয়োজন জেদি মিত্র।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com