আমাদের এই অঞ্চলের (বাংলাদেশ-ভারত) অনেকেই উচ্চশিক্ষা বা কাজের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমান। সেসব দেশ অধিকাংশ সময় আমাদের চেয়ে উন্নত হয়। কৃতিত্বের সাথে প্রবাস জীবন কাটানোর পর অনেকেই ফিরে আসেন। অনেকে আবার মাতৃভূমির মায়া ত্যাগ করে সে দেশেই থিতু হন। আবার দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে অনেকেই বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের প্ল্যান করেন।
আমি বিদেশে থেকে যাওয়াকে কোনোভাবেই বাঁকা চোখে দেখি না। কেউ দেশের হয়ে কাজ না করুক, পৃথিবীর হয়ে করুক; দোষের কী তাতে!? সাধারণত আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপিয়ান এবং দক্ষিণ আমেরিকান দেশ অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য বেশ উদার! কোনো দেশ অন্য দেশের নাগরিকদের স্থায়ী বসবাসের অনুমতি বা পাসপোর্ট বা নাগরিকত্ব দিতে চারটি ক্রাইটেরিয়া বিবেচনা করে।
৩. আপনার অর্থ সামর্থ: নির্দিষ্ট অর্থ বিনিয়োগে বা সরকারকে অর্থ দান করলেও অনেক দেশ নাগরিক সুবিধা দেয়। ৪. ফ্লেক্সিবিলিটি: সে দেশের নাগরিককে বিয়ে সহজেই সে দেশের স্থায়ী বাসিন্দা এবং নাগরিক হওয়া যায়। কোনো অভিবাসন প্রত্যাশী তার স্বপ্নের দেশে যেতে বা থাকতে পারবে কিনা তা উপরোক্ত বিষয়ের উপর নির্ভর করবে। নিচে সহজে অভিবাসন পাওয়া যায় এমন কয়েকটি দেশের অভিবাসন নীতি ও শর্ত সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:
১. সিঙ্গাপুর: আপনি সেখানে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করলে বা চাকরি পেলে বা সেখানে কোনো নাগরিকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে আপনি স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাবেন। দুই বছর স্থায়ীভাবে বসবাসের পর নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন। তবে বয়সের একটা ব্যাপার আছে। সিঙ্গাপুর দ্বৈত নাগরিকত্ব অনুমোদন দেয় না।
২. কানাডা: কানাডা বর্তমান সময়ে আপনার স্বপ্নের দেশ হতে ঠিক উঠে পরে লেগেছে! তারা অভিবাসীদের জন্য সহজ আর উদারপন্থী কিছু শর্ত রেখেছে। আপনি তাদের দেশে নির্দিষ্ট ১২ ক্যাটাগরিতে সহজেই কাজের সুযোগ পেতে পারেন। এরপর ৫ বছরের মধ্যে কেবল ৭৩০ দিন সে দেশে অবস্থান করলেই আপনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ৩. আর্জেন্টিনা: আর্জেন্টিনায় বসবাসরত অবস্থায় প্রতিমাসে কমপক্ষে এক হাজার ডলার ইনকাম (প্রত্যক্ষ/পরোক্ষ) দেখতে পারলে ২ বছর পর আপনি সে দেশের নাগরিক হতে পারবেন।
৪. পানামা: পানামার অভিবাসন নীতি দেখলে আপনার মনে হবে তারা আপনার জন্য ডালি সাজিয়ে বসে আছে! এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য আপনার হাতে ৫০+ অপসন আছে। হ্যাঁ, ৫০+ প্রথমে তারা দুই বছর স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দিবে। আপনি দুই বছর পর এটি নবায়ন করতে পারবেন। এভাবে ৫ বছর পর আপনি নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন।
৫. পেরু: আপনি পেরুর কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করলে বা সেখানে কোনো ব্যবসা শুরু করলে ২ বছর পর নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন। ৬. ব্রাজিল: আপনি ফ্লেক্সিবিল ক্যাটেগরির হলে ব্রাজিল আপনার জন্য সবচেয়ে সহজ। সবে সে ক্ষেত্রে কিছু বাধা ধরা নিয়ম আছে।
৭. ক্যারিবিয়ান: আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করে (অনেক ক্ষেত্রে সরকারকে দান করে) ক্যারিবিয়ান দ্বীপের নির্দিষ্ট দেশের পাসপোর্ট পেতে পারেন। শর্ত সাপেক্ষে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি এবং নাগরিকত্ব পেতে পারেন। নর্ডিক দেশ গুলোর নাগরিকত্ব আইন বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন। তবে তাদের সময়কাল ৫ বছরের বেশি হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা পূরণ করা খুব কঠিন হয় না।
অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন আইনও আমাদের জন্য খুব কঠিন নয়। আমেরিকাও দক্ষ কর্মীদের জন্য বিশেষ নিয়ম করতে চলেছে। যেখানে ফ্যামিলি ভিসার পরিবর্তে ওয়ার্ক ভিসা বেশি দিয়ে দক্ষ কর্মীদের আমেরিকায় স্থায়ী বসবাসের সুযোগ করে দেওয়া হবে।