পার্সটুডে- রিপাবলিকান-দলীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ওয়াদা দিয়েছেন যে তিনি যদি জয়ী হন তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অভিবাসী বিতাড়নের বৃহত্তম ঘটনা তিনি ঘটাবেন! নিউইয়র্কে এক সমাবেশে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
পার্সটুডে জানিয়েছে, ট্রাম্প তার এই ইচ্ছা বা সিদ্ধান্তের কথা এমন সময় জানালেন যখন অভিবাসীরা বহু বছর ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সস্তা শ্রম শক্তি হিসেবে বিবেচিত।
অভিবাসীরা বহু বছর ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সস্তা শ্রম শক্তি
মার্কিন ন্যাশনাল পলিসি ফাউন্ডেশনের এক নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, ২০৫০ সাল নাগাদ অভিবাসীরাই হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে শ্রম শক্তির প্রবৃদ্ধির উৎস। এই ফাউন্ডেশন বহু আগেই জানিয়েছিল যে যেসব মার্কিন নাগরিক শ্রম ক্ষেত্রে প্রধান বয়সের অধিকারী তাদের সংখ্যা খুব কমে যাবে। সর্বশেষ এই প্রমাণসহ আরও কিছু সাক্ষ্য প্রমাণ থেকে বোঝা যায় মার্কিন অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি ও জীবন যাপনের স্ট্যান্ডার্ডগুলো অভিবাসী শ্রমিকদের আগমন ছাড়া দুর্বল হয়ে যাবে।
অভিবাসীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সস্তা ও যুব শ্রমশক্তি
গত ৫ বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম-নেয়া মাত্র চার লাখ ৭৯ হাজার শ্রমিক দেশটির শ্রম-শক্তিতে যুক্ত হয়েছেন, অন্যদিকে অভিবাসী শ্রমিক যুক্ত হয়েছে ৩৬ লাখ। এর অর্থ ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেশটির শ্রমশক্তিতে ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে অভিবাসী শ্রমিকদের মাধ্যমে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার হার কমে যাচ্ছে এবং জনসংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ বড় অংশই হয়ে যাচ্ছে বৃদ্ধ বা প্রবীণ। গত তিন দশকে দেশটির অর্ধেকেরও বেশি শ্রম শক্তি ছিল অভিবাসীর সন্তান।
অভিবাসীদের সন্তানরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সস্তা শ্রমশক্তি ও জনসংখ্যার প্রধান উৎস
গত ৫ বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কোনো প্রবৃদ্ধিই ঘটা সম্ভব হয়নি অভিবাসী ও তাদের পরিবারে জন্ম নেয়া সন্তানদের অংশগ্রহণ ছাড়া। এক রিপোর্টে দেখা গেছে গত ৫ বছরে নেটিভ মার্কিন নাগরিকদের পরিবারে জন্ম-নেয়া শ্রমিকদের সংখ্যা ১৩ লাখ হ্রাস পেয়েছে, অন্যদিকে একই সময়ে অভিবাসী ও অভিবাসী-সন্তানদের মধ্য থেকে আসা শ্রমিকদের সংখ্যা বেড়েছে ৫৪ লাখ।
যদিও এখনই সব অভিবাসীকে বহিষ্কার কর –এই শ্লোগান ট্রাম্পের অন্যতম প্রধান নির্বাচনী শ্লোগান, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা হবে আইনি ও প্রয়োগের দিক থেকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জিং এবং এত বিপুল সংখ্যক অভিবাসীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেয়া সম্ভব হবে না।